তার সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে আপত্তি ছিল পিতার। কিন্তু ’৭১ সালে পাকিস্তানে হওয়া ভারতের হামলার জবাব দিতেই তিনি জঙ্গি শিবিরে নাম লিখিয়েছিলেন বলে আজ দাবি করেন মুম্বই হামলার অন্যতম অভিযুক্ত পাক বংশোদ্ভূত মার্কিন লস্কর জঙ্গি ডেভিড কোলম্যান হেডলি।
গতকাল আমেরিকার গোপন স্থান থেকে মুম্বইয়ের আদালতে গোপন সাক্ষ্য দিতে হেডলি দাবি করেন, শিবসেন প্রধান প্রায়ত বালাসাহেব ঠাকরেকে খুন করার ছক ছিল লস্কর-ই তইবার। আর আজ তিনি কেন জঙ্গি হলেন সেই রহস্য স্পষ্ট করলেন জবানবন্দীতে। হেডলির দাবি, ছোট থেকেই তিনি ভারতবিদ্বেষী। কারণ ব্যাখ্যায় হেডলি বলেন, ‘‘১৯৭১ সালের ভারত-পাক যুদ্ধে আমার স্কুলের উপর বোমা ফেলেছিল ভারতীয় বিমান। বোমার আঘাতে স্কুলটি ধ্বংস হয়ে যায়, স্কুলে যারা কাজ করতেন তারা সকলেই মারা যান।’’ জেরায় আজ হেডলি জানিয়েছেন, সেই ঘটনার প্রতিশোধ নেওয়াটা তার জঙ্গি হওয়ার অন্যতম কারণ। যদিও লস্করের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা যে তার বাবা পছন্দ করতেন না সেও জানিয়েছেন হেডলি। পাশাপাশি তাঁর পরিবারের সঙ্গে প্রাক্তন পাকিস্তানী প্রধানমন্ত্রীর ইউসুফ রাজা গিলানির ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল তাও জানিয়েছেন তিনি। হেডলির কথায়, ‘‘২০০৮ সালেল ২৬ ডিসেম্বর বাবার এক সপ্তাহ পরে গিলানি শোক জানাতে আমাদের বাড়িতে এসেছিলেন।’’
আরও পড়ুন- দেশদ্রোহী, দেশবিরোধী সার্চ দিলেই গুগলে ফুটছে জেএনইউ!
মুম্বই হামলার পর থেকেই ভারত বলে এসেছে, এর পিছনে আইএসআই ও পাক সেনার প্রত্যক্ষ মদত রয়েছে। হেডলিও একাধিকবার জেরার মুখে তা স্বীকার করেছেন। আজ এক ধাপ সুর চড়িয়ে হেডলি বলেন, ‘‘যে ন’জন জঙ্গি শহীদ হন, তাদের পাকিস্তান সেনার সর্ব্বোচ্চ সম্মান নিশান-ই-হায়দর দেওয়া উচিত।’’ একই সঙ্গে মুম্বই হামলার সময়ে কী ভাবে ধৃত কাসভকে ছাড়ানোর পরিকল্পনা হয়েছিল তাও স্পষ্ট করেছেন হেডলি। তাঁর কথায়, ‘‘লস্কর নেতা সাজিদ মির আমায় বলে কাসভ ধরা পড়েছে। তাই অন্য জঙ্গিদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে তারা ইজরায়েলের দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সক্ষম হয়। সে সময়ে জঙ্গিরা বেশ কয়েকজন ইজরায়েলের নাগরিককে বন্দী করে রেখেছিল। সাজিদ মিরদের পরিকল্পনা ছিল ওই নাগরিকদের বিনিময়ে কাসভের মুক্তি নিশ্চিত করা।’’ কিন্তু সেই পরিকল্পনা কেন ব্যর্থ হল সে বিষয়ে অবশ্য কিছু জানাননি হেডলি। লস্করের মতো জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক থাকা সত্বেও, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই হেডলির বিরুদ্ধে দীর্ঘ সময় ধরে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি বলেও অভিযোগ রয়েছে বিভিন্ন শিবিরে। যদিও আজ আদালতে এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে হেডলি দাবি করেছেন, তার সঙ্গে লস্করের যে সম্পর্ক ছিল এ বিষযে মার্কিন প্রশাসনের কাছে কোনও তথ্য ছিল না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy