যৌনশিক্ষা নিয়ে নিজের ওয়েবসাইটে গত কাল বিতর্কিত মন্তব্য করার পরে আজ কিছুটা পিছু হটলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন। স্কুলে যৌনশিক্ষা নিষিদ্ধ করা উচিত তাঁর মূল বক্তব্য ছিল এটাই। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সংবাদমাধ্যমে যা নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। ক্ষুব্ধ জনস্বাস্থ্য কর্মীদের অনেকে প্রশ্ন তোলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী কি আরএসএসের মতাদর্শ প্রচার করছেন?
আর তার জেরেই আজ প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরোর (পিআইবি) ওয়েবসাইটে হর্ষবর্ধনের নয়া অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বক্তব্য: স্কুলপড়ুয়াদের যৌনশিক্ষার প্রয়োজন আছে। তবে তা যেন কোনও ভাবেই অশালীন না হয়। সরকারি সফরে আপাতত হর্ষবর্ধন আমেরিকায় রয়েছেন। তাই সরাসরি তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে যৌনশিক্ষা নিষিদ্ধকরণ নিয়ে তাঁর মন্তব্যে দেশে আপত্তি ওঠায় নিজের বিবৃতি কিছুটা পাল্টে আজ তিনি বলেছেন, “আমি এক জন চিকিৎসক। যুক্তি এবং বিজ্ঞানসম্মত প্রশিক্ষণে আমার পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। কিন্তু সেটা সাংস্কৃতিক ভাবেও গৃহীত হতে হবে।”
হর্ষবর্ধনের দাবি, যৌনশিক্ষা নিয়ে তাঁর মন্তব্যকে বিচ্ছিন্ন ভাবে দেখা উচিত নয়। ২০০৭ সালে তদানীন্তন ইউপিএ সরকার বয়ঃসন্ধি শিক্ষা প্রকল্পে বিকৃত এবং অশ্লীল ছবি ব্যবহার করেছিল, যা সাংস্কৃতিক ভাবে আপত্তিজনক। ওই পাঠ্যক্রমকে যৌন শিক্ষা বলতে নারাজ হর্ষবর্ধন।
তাই তাঁর মন্তব্য, “প্রত্যেক শিক্ষাব্যবস্থায় একটা আদর্শ পাঠ্যসূচি থাকা প্রয়োজন। আর সে ক্ষেত্রে আমার অবস্থান ঠিক।”
কয়েক দিন আগেই এড্স নিয়ন্ত্রণে কন্ডোমের চেয়ে বৈবাহিক বিশ্বাসযোগ্যতার উপরে জোর দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। গত পরশু তাঁকে বলতে শোনা যায়, “কন্ডোম ব্যবহারে সুরক্ষিত যৌন সম্পর্ক সম্ভব। কিন্তু সঙ্গীর প্রতি বিশ্বস্ততা বজায় থাকলে তার চেয়ে বড় সুরক্ষা আর কিছু হয় না। রোগ প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ সব সময়েই ভাল।” কন্ডোমের ব্যবহার নিয়ে তাঁর কোনও নৈতিক আপত্তি নেই ব্যাখ্যা দিয়ে হর্ষবর্ধন জানান, “যে কোনও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে জিজ্ঞাসা করে দেখুন, তারা বলবে কন্ডোম কখনওই পূর্ণ সুরক্ষা দেয় না। তাই এক জন সঙ্গীর প্রতি বিশ্বস্ত থাকার মতো বার্তা সরকারি স্তরে প্রচার হওয়া উচিত।” কিন্তু সমালোচনা শুরু হয়েছিল সেই মন্তব্য ঘিরেও।
আর গত কাল নিজের ওয়েবসাইটে দিল্লির শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে বলতে গিয়ে স্কুলে যৌনশিক্ষা নিষিদ্ধ করার পরামর্শ দেন তিনি। তাঁর বক্তব্য ছিল, “তথাকথিত যৌনশিক্ষা স্কুলস্তরে নিষিদ্ধ করা উচিত। আবশ্যিক করা উচিত যোগব্যায়াম।” স্কুলপাঠ্যে তিনি চান, মূল্যবোধের শিক্ষা, সামাজিক সচেতনতা, এবং আধ্যাত্মিকতা।
এই কথা আজ একটি দৈনিকে প্রকাশিত হওয়ার পরে তড়িঘড়ি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দফতর জানায়, ওই মতামত মন্ত্রীর ব্যক্তিগত।
দিল্লিতে বিজেপির মুখপাত্র সঞ্জয় কল বলেন, “স্কুলে যৌনশিক্ষা নিষিদ্ধ করার বিষয়টি দলে আলোচিত হয়নি। তাই আমাদের এ নিয়ে কিছু বলার নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy