Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

কংগ্রেসের হাতে হাত হার্দিক পটেলের

গুজরাতের প্রথম দফার ভোটের মনোনয়ন জমা দেওয়ার দিন শেষ হতে আর মাত্র দু’দিন বাকি। মূলত সংরক্ষণ ও আসন ভাগাভাগি নিয়ে দর কষাকষির জেরেই রবিবার রাত পর্যন্ত  প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে উঠতে পারেনি কংগ্রেস।

হার্দিক পটেল ও রাহুল গাঁধী

হার্দিক পটেল ও রাহুল গাঁধী

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:০৩
Share: Save:

দর কষাকষির পালা শেষ। গুজরাতের ভোটে অবশেষে ঐকমত্যে পৌঁছল কংগ্রেস ও হার্দিক পটেলের পাতিদার সংগঠন। রবিবার দীর্ঘ বৈঠক শেষে দুই শিবিরের দাবি তেমনটাই। আর এই সমঝোতা চূড়ান্ত হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ৭৭ জন প্রার্থীর নাম দিয়ে নিজেদের প্রথম তালিকা ঘোষণা করে দিল কংগ্রেস। তালিকায় নাম রয়েছে হার্দিকের সংগঠনের একাধিক নেতার নাম রয়েছে। এঁরা সকলেই কংগ্রেসের প্রতীকে লড়বেন।

গুজরাতের প্রথম দফার ভোটের মনোনয়ন জমা দেওয়ার দিন শেষ হতে আর মাত্র দু’দিন বাকি। মূলত সংরক্ষণ ও আসন ভাগাভাগি নিয়ে দর কষাকষির জেরেই রবিবার রাত পর্যন্ত প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে উঠতে পারেনি কংগ্রেস। অথচ ১৮২টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ১৪০ জনের নাম এক রকম চূড়ান্ত করে ফেলেছিল তারা। রবিবার হার্দিকের দলের সঙ্গে সমঝোতা চূড়ান্ত হওয়ার অল্প পরেই ৭৭ জনের নাম ঘোষণা করেছে কংগ্রেস। এর মধ্যে ১২ জন কোলি সম্প্রদায়ের, অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির ৮ জন, পাতিদার ২৩ জন এবং দলিত প্রার্থী ৭ জন। রাজকোট পশ্চিম কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী তথা মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণীর বিরুদ্ধে লড়বেন রাজকোট পূর্ব কেন্দ্রের কংগ্রেস বিধায়ক ইন্দ্রনীল রাজ্যগুরু। হার্দিকের দলের নেতা ললিত ভাসোয়া এবং অমিত ঠুম্মারের নাম রয়েছে তালিকায়। ললিত ধোরাজি কেন্দ্র থেকে এবং অমিত জুনাগড় কেন্দ্র থেকে লড়বেন।

রবিবার সন্ধ্যায় অমদাবাদে কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে হার্দিকের সংগঠন ‘পাস’ (পাতিদার অনামত আন্দোলন সমিতি)-র প্রতিনিধিদের দীর্ঘ বৈঠক হয়। পাতিদারদের সংরক্ষণের বিষয়ে কংগ্রেস তার ইস্তেহারে কী প্রতিশ্রুতি দেবে এবং পাস-এর জন্য ক’টি আসন ছেড়ে দেবে, তা নিয়েই এত দিন টানাপড়েন চলছিল দু’পক্ষে। রবিবারের বৈঠকের পরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ভারত সিংহ সোলাঙ্কি বলেন, ‘‘যে সব বিষয়ে আমরা আটকে ছিলাম, সেখানে ঐকমত্য হয়ে গিয়েছে।’’

কী সূত্রে ঐকমত্য হয়েছে, তা নিয়ে অবশ্য কোনও শিবিরই মুখ খুলতে চায়নি। সোলাঙ্কি জানিয়েছেন, হার্দিক নিজেই সোমবার রাজকোটের জনসভা থেকে তা ঘোষণা করবেন।

আরও পড়ুন: তথ্য ফাঁস, মানলেন আধার কর্তৃপক্ষ

কংগ্রেস এই তালিকা ঘোষণার কিছু আগে ৭১ জন কংগ্রেস প্রার্থীর নাম-সহ একটি তালিকা প্রকাশ পায়। কংগ্রেসের দাবি, ওই তালিকাটি ভুয়ো! ওটি বিজেপির কীর্তি!

রবিবারই হার্দিক ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। রবিবার রাতে তিনি নিজেও মুচকি হেসে জবাব দিয়েছেন, ‘‘ঐকমত্য তো হয়ে গিয়েছে। এ বার কী করব, তা ঠিক করব।’’

সূত্রের খবর, হার্দিকদের জন্য কমবেশি ১১টি আসন ছাড়বে কংগ্রেস। হার্দিকরা ২৫টি আসনের দাবি জানিয়েছিলেন। সোলাঙ্কি অবশ্য দাবি করেছেন, হার্দিক, ওবিসি নেতা অল্পেশ ঠাকোর বা দলিত নেতা জিগ্নেশ মেবাণী, কেউই কোনও আসন দাবি করেনি। হার্দিকের অনুগামী দীনেশ বাম্ভানিয়ারও দাবি, ‘‘আসন ভাগাভাগি নিয়ে কোনও দর কষাকষি ছিল না। আমাদের প্রথম ও শেষ বিষয়ই ছিল সংরক্ষণ।’’

বিজেপি নেতৃত্বের বিশেষ নজর ছিল রবিবারের বৈঠকের দিকে। দলের একটি অংশের আশা ছিল, এই সমঝোতা চূড়ান্ত না হলে পাতিদার ভোটের সিংহ ভাগই ফেরত আসবে বিজেপির ঝুলিতে। কিন্তু সেই হিসেব এ দিন গুলিয়ে গেল।

সংরক্ষণ নিয়ে কোন সূত্রের ভিত্তিতে ঐকমত্য পৌঁছেছে কংগ্রেস ও হার্দিকের দল? সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, চাকরি বা শিক্ষা ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশের বেশি আসন সংরক্ষণ করা যাবে না। গুজরাতে ইতিমধ্যেই ৪৯ শতাংশ আসন সংরক্ষিত। হার্দিকরা ওবিসি-র ভাগ থেকে সংরক্ষণ চান না। তার বাইরে, আলাদা সংরক্ষণ চান। ওবিসি-র মধ্যে পাতিদারদের জন্য বিশেষ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করলে ওবিসি-নেতা অল্পেশের গোঁসা হবে। কংগ্রেসের দাবি, অল্পেশ, জিগ্নেশদের সব দাবি তারা মেনে নিয়েছে। পাস-নেতা বাম্ভানিয়ার দাবি, কংগ্রেস তাদের বেশ কিছু দাবি নির্বাচনী ইস্তেহারে রাখতে চলেছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE