গুজরাতে জমানা বদলের পাকিস্তানি চক্রান্তের অভিযোগ তুলে ঘরে-বাইরে আক্রমণের মুখে নরেন্দ্র মোদী। রাহুল গাঁধী তো বটেই, ভোটে পাকিস্তানকে টেনে আনায় সরব সে দেশের বিদেশ মন্ত্রকও। বিজেপির শত্রুঘ্ন সিনহা থেকে শরিক শিবসেনা নেতৃত্বও মোদীর বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন।
তবে মোদীকে এ দিন সব থেকে শাণিত আক্রমণটি করেছেন মনমোহন সিংহ। ক্ষমা প্রার্থনার দাবি তুলে পূর্বসুরির মন্তব্য, ‘‘গুজরাতে হারের আতঙ্কে মরিয়া প্রধানমন্ত্রী খড়কুটো আঁকড়ে ধরতে চাইছেন।’’ মনমোহন বলেন, ‘‘আশা করি, প্রধানমন্ত্রী তাঁর পদের যোগ্য পরিণতিবোধ ও গরিমা রাখবেন। জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী পদের হৃত সম্মান পুনরুদ্ধার করবেন।’’
রবিবার গুজরাতের প্রচারে মোদী অভিযোগ করেন, ‘‘পাক সেনার প্রাক্তন ডিজি গুজরাতের ভোটে নাক গলাচ্ছেন। পাকিস্তানের লোকেরা মণিশঙ্কর আইয়ারের বাড়িতে বৈঠক করছেন। তার পরে মণিশঙ্কর আমাকে নীচ বলছেন। এতে কি সন্দেহ হয় না?’’ আজ গুজরাতের প্রচারে গিয়ে রাহুল গাঁধী বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী কখনও পাকিস্তান নিয়ে বলেন, কখনও চিন-জাপান নিয়ে। গুজরাতের ভোটে গুজরাত নিয়ে কিছু বলুন!’’
আরও পড়ুন: সনিয়াই চ্যালেঞ্জ সভাপতি রাহুলের
আইয়ারের বাড়িতে যে বৈঠকের দিকে মোদী আঙুল তুলেছেন, সে’টি ছিল প্রাক্তন পাক বিদেশমন্ত্রী খুরশিদ মেহমুদ কাসুরির সম্মানে নৈশভোজ। একটি আলোচনা সভায় দিল্লি এসেছিলেন কাসুরি। ৬ ডিসেম্বরের নৈশভোজে মনমোহন সিংহ, প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারি, প্রাক্তন সেনাপ্রধান জেনারেল দীপক কপূর, প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী নটবর সিংহেরা হাজির ছিলেন।
মনমোহন বলেছেন, ‘‘নৈশভোজে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কেই কথা সীমাবদ্ধ ছিল। গুজরাতের প্রসঙ্গই ওঠেনি। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও সাবেক সেনাপ্রধানের মতো মানুষদের দিকেও কালি ছেটানোর বিপজ্জনক উদাহরণ তৈরি করলেন মোদী।’’
পাকিস্তানও আজ সরব হয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মহম্মদ ফয়সল বলেন, ‘‘ভোটের তর্কে পাকিস্তানকে টানা বন্ধ করুক ভারত। চক্রান্তের বানানো অভিযোগও বন্ধ হোক।’’ আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের জবাব, ‘‘পাকিস্তান যে সন্ত্রাস ছড়ায়, তা গোটা দুনিয়ার জানা।’’
এ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মনমোহন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর আপসের কথা সর্বজনবিদিত। উধমপুর, গুরুদাসপুরে হামলার পরে বিনা আমন্ত্রণে মোদী পাকিস্তানে যান। পঠানকোটের বায়ুসেনা ঘাঁটিতে হামলার পর আইএসআই-কে সেখানে কেন ডাকা হয়, সেটাও উনি দেশকে জানান।’’
মনমোহনের কড়া প্রতিক্রিয়া নিয়ে সারা দিন দিল্লি সরগরম থাকার পরে রাতে অরুণ জেটলিকে জবাব দিতে নামায় বিজেপি। তিনি বলেন, ‘‘পাকিস্তানের সঙ্গে বৈঠকে বসার জন্য ক্ষমা না-চেয়ে কংগ্রেস নেতারা উল্টে প্রধানমন্ত্রীকেই ক্ষমা চাইতে বলছেন!’’
শিবসেনার মুখপত্র ‘সামনা’-য় আজ লেখা হয়েছে, মোদী নাটক করছেন। আর বিজেপি সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহার কটাক্ষ, ‘‘ভোটে জিততে কি রোজ নতুন নতুন গল্প বানাতে হবে?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy