প্রতীকী ছবি।
ভাল নেই অনাবাসী ভারতীয় মহিলাদের অনেকে। যে হারে তাঁদের কাছ থেকে পারিবারিক হিংসা বা নির্যাতনের অভিযোগ বিদেশ মন্ত্রকে জমা পড়ছে, তাতে বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে মোদী সরকারকে। তবে অনেক বেশি মহিলা যে দ্বিধা কাটিয়ে মুখ খুলছেন, সেটা ইতিবাচক বলে মনে করছে বিদেশ মন্ত্রক।
বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, অনাবাসী ভারতীয় পরিবারে বৈবাহিক সমস্যা এবং তার জেরে বধূ নির্যাতনের মতো ঘটনা কিছু নতুন নয়। কিন্তু অভিযোগ জানানোর মতো মঞ্চ আগে সে ভাবে সক্রিয় ছিল না। গত কয়েক বছরে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ তাঁর টুইট-কূটনীতির মাধ্যমে যে ভাবে পাশে দাঁড়িয়েছেন, তাতে ক্রমশ বল-ভরসা বেড়েছে অনাবাসী নারীদের। ফলে অভিযোগ জানানোর বহরও বেড়েছে। কূটনৈতিক শিবিরের মত, সুষমা যে ভাবে কূটনীতিতে মানবিক মুখ এনেছেন তাতে অনেক বদলে গিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক সম্পর্কে মানুষের ধারণা। বিদেশে মধুচন্দ্রিমায় যাওয়া দম্পতির হারানো পাসপোর্ট উদ্ধার থেকে শুরু করে
কর্মসূত্রে ভিন্ দেশে গিয়ে যুদ্ধে আটকে পড়া শ্রমিকের ফিরে আসা, চিকিৎসার জন্য ভারতে আসতে চাওয়া বিদেশিদের (এমনকী পাকিস্তানেরও) চটজলদি ভিসা— বারবার সঙ্কটমোচন করেছে সুষমার টুইট। এক ব্যক্তি তাঁর বাড়ির ফ্রিজ সারানোর সমস্যার জন্যও এক বার সাহায্য চেয়ে বসেছিলেন সুষমার! প্রধানমন্ত্রী প্রকাশ্যে প্রশংসা করেছিলেন সুষমার এই ভূমিকার।
সাউথ ব্লক সূত্র জানাচ্ছে, বিদেশমন্ত্রীর উদ্যোগে ভিন্ দেশে ভারতীয় নিপীড়িতাদের সমস্যা সমাধানে গত অগস্ট মাসে গড়া হয়েছিল ‘ইন্টিগ্রেটেড নোডাল এজেন্সি’ (আইএনএ)। সম্প্রতি রাজ্যসভায় পেশ করা রিপোর্টে মন্ত্রক জানাচ্ছে, শীঘ্র প্রবাসে নিপীড়িতাদের সমস্যা সমাধানের জন্য একটি ব্যবস্থা বা ‘মেকানিজম’ তৈরি করা হবে। উদ্দেশ্য, লাল ফিতের ফাঁস এড়িয়ে সহজেই যাতে ওই নিগৃহীতারা আইনি এবং আর্থিক সহায়তা পেতে পারেন।
আরও পড়ুন: শেকুবাইয়ের পা এখনও ব্যান্ডেজ বাঁধা
বিদেশ মন্ত্রকের হিসেব বলছে, ২০১৫ সালে এই সংক্রান্ত অভিযোগ এসেছিল ৭৯৬টি। পরের বছর তা বেড়ে দাঁড়ায় ১,৫১০টি। ২০১৭ সালে অভিযোগ এসেছিল ১,০২২টি। এই জানুয়ারিতে এসেছে ৩৭২টি অভিযোগ। এই অভিযোগগুলির মধ্যে রয়েছে স্বামী-আত্মীয়দের দুর্ব্যবহার, বাবা-মার সঙ্গে যোগাযোগ করতে না দেওয়া, সন্তানকে দেখাশোনার অধিকার না-দেওয়ার মতো সমস্যা। সরকারের কাছে মহিলারা চাইছেন এই সংক্রান্ত মামলাগুলিতে হাজির থাকতে পারা, প্রয়োজনে দেশে ফেরা, সন্তানের দেখভালের জন্য সহায়তা।
বিদেশ মন্ত্রকের আশা, আইএনএ-র নির্দিষ্ট ‘মেকানিজম’ তৈরি হলে নির্যাতিতারা আরও সহজে সহায়তা চাইতে পারবেন। আইএনএ-তে বিদেশ মন্ত্রকের প্রতিনিধিরা ছাড়াও রয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র, আইন, মহিলা ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রকের কর্তারা।
বিদেশ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী জেনারেল ভি কে সিংহের বক্তব্য, ‘‘বিভিন্ন দেশে নিপীড়িত মহিলাদের সমস্যা সমাধানের জন্য তৈরি এই কমিটির সঙ্গে ইন্ডিয়ান কমিউনিটি ওয়েলফেয়ার ফান্ডকে মিলিয়ে দেওয়া হয়েছে। আইনি এবং আর্থিক সহায়তার পরিমাণ এককালীন ৪ হাজার ডলার করা হয়েছে। সব ভারতীয় দূতাবাসের পক্ষ থেকেই এই সহায়তা পাওয়া যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy