দলের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে অনশনে এম কে স্ট্যালিন। শনিবার। ছবি: পিটিআই।
তিন বছর নিষিদ্ধ থাকার পরে অবশেষে ফিরছে জাল্লিকাট্টু। আজ জাল্লিকাট্টু নিয়ে রাজ্যের খসড়া অধ্যাদেশে সই করেন তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল বিদ্যাসাগর রাও। আর তার পরেই কাল গোটা রাজ্যে ফের জাল্লিকাট্টু হবে বলে ঘোষণা করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী ও পনীরসেলভম। আইনি পথ যা-ই হোক, সকলেই মানছেন তামিল জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনেই এটা সম্ভব হল। মুখ্যমন্ত্রী জানান, রবিবার বেলা দশটায় তিনি নিজে ষাঁড়কে বাগে আনার প্রাচীন খেলা জাল্লিকাট্টুর উদ্বোধন করবেন। রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন জেলায় এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রীদের। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পর উল্লসিত মেরিনা সৈকতের বিক্ষোভকারীদের একাংশ। অন্য এক দলের অবশ্য দাবি, সুপ্রিম কোর্ট নিষেধাজ্ঞা না তোলা পর্যন্ত তাঁরা সন্তুষ্ট নন। তবে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘আমি সমগ্র তামিলনাড়ুর যুবসমাজ, ছাত্রছাত্রী ও সাধারণ মানুষের কাছে আর্জি জানাচ্ছি রবিবার অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তা সফল করতে।’’
গত কাল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে আসার সময় বিমানবন্দরে সুখবরের আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী পনীরসেলভম। অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহতগির পরামর্শ অনুযায়ী রাজ্য অধ্যাদেশ তৈরি করে। রাতেই রাজ্যের পাঠানো অধ্যাদেশের খসড়া চলে যায় দিল্লিতে। কেন্দ্রের ছাড়পত্র পাওয়ার পর আজ জাল্লিকাট্টু চালু করার পক্ষে সায় দিলেন রাজ্যপাল।
রাজ্য সরকার জানিয়েছে, জালিকাট্টু পাকাপাকি ভাবে চালু রাখতে আগের পশু নির্যাতন বিরোধী আইনটি সংশোধন করতে হবে। আগামী সোমবার থেকে বিধানসভার অধিবেশন শুরু হচ্ছে। অধিবেশনের প্রথম দিনেই এই বিষয়ে একটি বিল পেশ করবে পনীরসেলভম সরকার।
আজ সকালেই প্রধানমন্ত্রী টুইট করেন, তামিলনাড়ুর মানুষের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বজায় রাখার জন্য সব রকম চেষ্টা চলছে। মোদীর এই সমর্থনের জন্য এ দিন তাঁকে চিঠি লিখে ধন্যবাদ জানান পনীরসেলভম। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘‘তামিলনাড়ুর সরকার ও মানুষের পক্ষ থেকে আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। পোঙ্গল উৎসবের সময়ে ফের এই প্রচীন প্রথা চালু হওয়ায় আমরা আনন্দিত।’’
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার আগে পর্যন্ত চেন্নাই-সহ গোটা তামিলনাড়ুর চেহারা ছিল বিগত কয়েক দিনের মতোই অশান্ত। সকাল থেকে বাতিল হয়ে গিয়েছে একাধিক ট্রেন। জাল্লিকাট্টু থেকে নিষেধাজ্ঞা তোলার দাবিতে আজ থেকে ডিএমকের কার্যনিবাহী সভাপতি এম কে স্ট্যালিনের নেতৃত্বে অনশনে বসেছেন দলের কর্মী-সমর্থকরা। তামিলনাড়ুর মানুষের স্বার্থ এবং ভাবাবেগকে উপেক্ষা করলে তার ফল মারাত্মক হতে পারে বলে গত কালই কেন্দ্রকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল ডিএমকে। আজ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরাসরি বঞ্চনার অভিযোগ তুলেছিল শাসক দল এডিএমকেও। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর মধ্যে থেকে আঞ্চলিক কোনও দাবি নিয়ে কেন্দ্রের উপর এ ভাবে চাপ বাড়ানোর নজির সাম্প্রতিক অতীতে দেখা যায়নি বলেই মনে করছেন রাজনীতিকদের একাংশ।
কিন্তু দিনের শেষে এডিএমকে ও তামিল ভাবাবেগের সঙ্গে থাকার খেলায় নরেন্দ্র মোদী এগিয়েই রইলেন বলে দাবি বিজেপি-র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy