আদিত্য সচদেব হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরে রকি যাদব ওরফে রাজেশ রঞ্জন। বৃহস্পতিবার গয়া আদালতে। ছবি: পিটিআই।
গাড়ি ‘ওভারটেক’ করায় গয়ায় স্কুলছাত্রকে গুলি করে খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করা হল রকি যাদব ওরফে রাজেশ রঞ্জনকে। বৃহস্পতিবার গয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক সচ্চিদানন্দ সিংহ ওই রায় দেন। রকির বাবা বিন্দি, ভাই টেনি-সহ ৩ জনের বিরুদ্ধে প্রমাণ
লোপাটের অভিযোগ ছিল। ৬ সেপ্টেম্বর সাজা ঘোষণা করবে আদালত।
২০১৬ সালের ৭ মে রাতে ঘটনাটি ঘটে। দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে বেরিয়েছিলেন গয়ার বাসিন্দা আদিত্য সচদেব। তাঁর বন্ধুর বাবার মারুতি সুইফট গাড়িতে ছিলেন সকলে। গয়া-বুদ্ধগয়া সড়কে রকির রেঞ্জ রোভার গাড়িকে ‘ওভারটেক’ করে ওই গাড়িটি। রকির সঙ্গে ছিল তার মায়ের দেহরক্ষী রাজেশ কুমার। প্রচণ্ড রেগে শূন্যে গুলি চালায় রকি। আওয়াজ শুনে গাড়ি থামান আদিত্যরা। কেন তার গাড়িকে ওভারটেক করা হল, তা নিয়ে আদিত্যদের সঙ্গে বচসা শুরু করে বছর বাইশের রকি। ওই পড়ুয়ারা গাড়িতে উঠে পালাতে গেলে পিস্তল বের করে গুলি চালায় রকি। গুলি মাথায় লেগে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় গাড়ির পিছনের সিটে বসে থাকা উনিশ বছরের আদিত্যর। বেগতিক দেখে ব্যবসায়ী বাবা বিন্দি যাদবের কারখানায় গা-ঢাকা দেয় রকি। তার মা মনোরমাদেবী ছিলেন জেডিইউয়ের বিধান পরিষদ সদস্য। ছেলেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন তিনি। তীব্র সমালোচনার মুখে মনোরমাদেবীকে সাসপেন্ড করেন নীতীশ কুমার।
পুলিশ গ্রেফতার করে রকিকে। শুরু হয় শুনানি। গত বছর অক্টোবরে পটনা হাইকোর্টে জামিন পায় রকি। কিন্তু রাজ্য সরকার ওই নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানায়। জামিন বাতিল করে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, এ বছর ৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মামলার নিষ্পত্তি করতে হবে। শুনানি চলাকালীন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আদিত্যর চার বন্ধু পুরনো বয়ান থেকে সরে আসেন। শুধুমাত্র ফরেন্সিক প্রমাণের উপর ভিত্তি করে আদালতে সওয়াল জবাব চলে। ১০ লক্ষ টাকা দামের বেরেটা পিস্তল থেকে আদিত্যকে গুলি করেছিল রকি। সেটাই রকির বিরুদ্ধে সব চেয়ে বড় প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরেন সরকারি আইনজীবী। তা ছাড়া ঘটনার সময় রকির মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশনও দেখা হয়।
আদালতের রায় শুনে আদিত্যর মা চাঁদ সচদেব বলেন, ‘‘১৬ মাস কী দুঃসহ যন্ত্রণায় দিন কাটিয়েছি তা ভগবানই জানেন। আশা করি এ বার ন্যায় মিলবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy