Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

সরব অনুপম, গজেন্দ্রর পাশে কুরু-পাণ্ডব জোট

পুণের সিংহাসনে ‘যুধিষ্ঠির’কে চান না অনুপম খের। ফিল্ম ও মঞ্চের প্রবীণ অভিনেতা আজ সাফ বলেছেন, গজেন্দ্র চৌহানের চেয়ে যোগ্যতর কাউকেই আনা হোক ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া (এফটিআইআই)-র শীর্ষ পদে। যদিও পাণ্ডব-কৌরব নির্বিশেষে প্রায় গোটা মহাভারত-ব্রিগেডই আজ মুখ খুলেছে গজেন্দ্রর হয়ে। ভীষ্ম, দুর্যোধন, কর্ণ, দ্রৌপদী, শকুনি — কে নেই!

সংবাদ সংস্থা
মুম্বই শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৫ ১৮:০১
Share: Save:

পুণের সিংহাসনে ‘যুধিষ্ঠির’কে চান না অনুপম খের। ফিল্ম ও মঞ্চের প্রবীণ অভিনেতা আজ সাফ বলেছেন, গজেন্দ্র চৌহানের চেয়ে যোগ্যতর কাউকেই আনা হোক ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া (এফটিআইআই)-র শীর্ষ পদে। যদিও পাণ্ডব-কৌরব নির্বিশেষে প্রায় গোটা মহাভারত-ব্রিগেডই আজ মুখ খুলেছে গজেন্দ্রর হয়ে। ভীষ্ম, দুর্যোধন, কর্ণ, দ্রৌপদী, শকুনি — কে নেই!

স্বাভাবিক ভাবেই কিছুটা অক্সিজেন পেয়েছেন গজেন্দ্র।
গত কাল ইউটিউব-বার্তায় রণবীর কপূর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন পুণের আন্দোলনরত পড়ুয়াদের। বলছিলেন, ‘‘প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদে এমন কেউ আসুন, যাঁকে দেখে ছাত্রছাত্রীরা অনুপ্রাণিত হবেন।’’
আজ চণ্ডীগড়ে অনুপমের সুর ছিল আরও তীক্ষ্ণ। তিনি বলেছেন, ‘‘গজেন্দ্রজিকে এক জন যোগ্য প্রযোজক, পরিচালক বা অভিনেতা— কোনওটাই বলা যায় না।’’ কেন? অনুপমের যুক্তি, ‘‘এফটিআইআই একটা ধারার বাহক। এমন কাউকে দরকার, যিনি সারা বিশ্বের সিনেমা সম্পর্কে জানবেন। আবার আজকের সিনেমার খুঁটিনাটি সম্পর্কেও ওয়াকিবহাল হবেন।’’ একই সঙ্গে সরকারি নিয়ন্ত্রণ থেকে বেরিয়ে এফটিআইআই-এর পূর্ণ স্বশাসনের দাবিও তুলেছেন তিনি।

অভিনেতা নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকীও আজ বলেছেন, ‘‘এফটিআইআই-এর এই পরিস্থিতি খুবই দুর্ভাগ্যজনক।’’ গজেন্দ্রর অপসারণের দাবিতে পুণেতে যে অচলাবস্থা চলছে, অনুপম অবশ্য তার বিপক্ষে। ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, ‘‘ওঁরা ক্লাস করুন, ছবি বানান। কারণ চেয়ারম্যান এই প্রতিষ্ঠানের দৈনন্দিন কাজকর্মের সঙ্গে জড়িত নন।’’ বস্তুত, অনেকটা একই যুক্তি তুলে ধরে গজেন্দ্রর পাশে দাঁড়িয়েছেন মহাভারতে তাঁর সহ-অভিনেতাদের একাংশ।

‘দুর্যোধন’ পুনিত ইসার বলেছেন, ‘‘জাতীয় স্তরে স্বীকৃতি থাকলেই কেউ ভাল প্রশাসক হতে পারবেন— এর গ্যারান্টি কোথায়?’’ ‘কর্ণ’ পঙ্কজ ধীরের বক্তব্য, ‘‘এফটিআইআই-এর চেয়ারম্যানের পদটি হল প্রশাসকের। শিক্ষকের নয়। সরকার যখন গজেন্দ্রকে নিয়োগ করেছে, নিশ্চয়ই তার কোনও কারণ রয়েছে।’’ তাঁর মতে, অতীতে সাধারণ শিক্ষকদের হাত দিয়েই এফটিআইআই থেকে ভবিষ্যতের মহীরুহরা বেরিয়েছেন।

ছাত্রছাত্রী এবং বিশিষ্ট জনেদের একাংশের অভিযোগ, ভারতীয় সিনেমায় উল্লেখযোগ্য কোনও অবদান না থাকলেও স্রেফ বিজেপি-ঘনিষ্ঠতার সুবাদে ওই পদে বসেছেন গজেন্দ্র। ‘যুধিষ্ঠির’কে চেয়ারম্যান পদে বসিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকার এফটিআইআই-এ নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতে চাইছে বলে তাঁদের অভিযোগ। এ প্রসঙ্গে ‘শকুনি’ চরিত্রের অভিনেতা গুফি পেইন্টালের বক্তব্য, ‘‘সরকার যে নিজের লোককে অগ্রাধিকার দেবে, সেটাই স্বাভাবিক। গজেন্দ্রর বদলে তো শত্রুঘ্ন সিন্হা বা হেমা মালিনীকেও নিয়োগ করতে পারত (দু’জনেই বিজেপি সাংসদ)। ফলে এ সব নিয়ে বিতর্ক না বাড়িয়ে গজেন্দ্রকে সময় দেওয়া হোক।’’

ঘটনাচক্রে, ‘দ্রৌপদী’ এখন পশ্চিমবঙ্গের দাপুটে বিজেপি নেত্রী। তিনি— রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ও চান, গজেন্দ্রকে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হোক। তাঁর কথায়, ‘‘কাউকে অপমান করা ঠিক নয়। উনি হয়তো (নিজেকে প্রমাণ করার ক্ষেত্রে) ততটা ভাগ্যবান নন। ফিল্মি দুনিয়ায় যোগ্যতা থাকলেও কি সবাই সুযোগ পায়?’’

গজেন্দ্রর হয়ে সব চেয়ে সরব যিনি, সিরিয়ালের সেই ‘ভীষ্ম’ মুকেশ খন্না সরাসরি নিশানা করেছেন ছাত্রদের। আজ তিনি বলেছেন, ‘‘সরকার যাকে খুশি নিয়োগ করতে পারে। তাতে ছাত্রদের কিছু বলার থাকতে পারে না। সমস্যা পড়ুয়াদেরই।
তারা রাজনীতি করছে। কোনও পড়ুয়ার যদি চেয়ারম্যান পছন্দ না হয়, তা হলে সে এফটিআইআই ছেড়ে চলে যেতে পারে।’’ মুকেশের এই মন্তব্যের জেরে শুরু হয়েছে নয়া বিতর্ক। সুপারহিরো ‘শক্তিমান’ চরিত্রে অভিনয় করা মুকেশ সম্প্রতি চিলড্রেন্স ফিল্ম সোসাইটি অব ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান পদে বসেছেন। গত প্রায় ১৫ বছর ধরে বিজেপির যাবতীয় প্রচারে দেখা গিয়েছে তাঁকে। দলীয় আনুগত্যের প্রমাণ দিতে গিয়ে মুকেশ নিজের পদের ওজন ভুলে এমন বেফাঁস হলেন কেন— প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ।

সত্যিটা যা-ই হোক, তার অনেক আগে মিশে গিয়েছে পাণ্ডবে-কৌরবে!

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE