পদ্ম-সম্মান প্রাপকের তালিকায় নাম থাকল উত্তর-পূর্বের পাঁচ জনের।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, এ বছর মরণোত্তর পদ্মবিভূষণ পাচ্ছেন মেঘালয়ের পূর্ণ অ্যাজটেক সাংমা। গারো পাহাড়ের অবিসংবাদিত নেতা পূর্ণ লোকসভার স্পিকার ছিলেন। ছিলেন কেন্দ্রের ও রাজ্যের মন্ত্রী। তুরা আসনে ১৯৭৭ সাল থেকে শুরু করে ন’বার সাংসদ হন তিনি। কংগ্রেস থেকে এনসিপি দল গড়েছিলেন তিনি। ২০১৩ সালে এনসিপি ছেড়ে বেরিয়ে তৈরি করেন এনপিপি দল। নেতাজিভক্ত সাংমা মেঘালয় তথা উত্তর-পূর্বের রাজনীতিতে কিম্বদন্তীতে পরিণত হন।
অসমে নারী ও শিশু সাহিত্যিক ও সমাজকর্মী এলি আহমেদ পাচ্ছেন পদ্মশ্রী। ছোটবেলা থেকেই গান ও কবিতা লেখেন এলিদেবী। ঠাকুমার কাছে বড় হওয়া এলির গান-কবিতা লেখায় তীব্র বিরোধ এসেছিল। কিন্তু তরুণী এলি স্পষ্ট জানান, আজান ও কোরানেও সা রে গা মা-র সুর রয়েছে। তাই ইসলাম সঙ্গীতবিরোধী হতে পারে না। অশীতিপর এলি এখনও শিশুমন বজায় রেখে কাজ করে চলেছেন। এখনও নাচেন বিহু। চিত্রনাট্য, পরিচালনা, পোষাক পরিকল্পনা, অভিনয়— সব দিকে প্রতিভার স্বাক্ষর রাখা এলি বাইদেউ অসমের ‘অল রাউন্ডার’ শিল্পী বলে পরিচিত। তাঁর বিখ্যাত বই রোমন্থন, অসম জ্যোতি। নারীদের ম্যাগাজিন ওরানির মালকিন ও সম্পাদক তিনি। বিভিন্ন ছবিতে তাঁর লেখা গান জনপ্রিয় হয়েছে।
বিজ্ঞানে পদ্মশ্রী পাচ্ছেন দেশের নামকরা বিজ্ঞানী, চন্দ্রায়ন-১ প্রকল্পের মুখ্য বিজ্ঞানী ও চন্দ্রায়ন-২ ও মঙ্গলায়ন প্রকল্পের অন্যতম রূপকার জিতেন্দ্রনাথ গোস্বামী। যোরহাটের জিতেন্দ্র উচ্চমাধ্যমিকে ষষ্ঠ হয়ে কটন কলেজে পড়তে যান। এমএসসি করেন গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। পরে উচ্চতর শিক্ষা ও গবেষণা সারেন ক্যালিফোর্নিয়া ও ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ে। সৌরজগৎ ও জ্যোতির্বিজ্ঞান নিয়ে তাঁর গবেষণা ও কাজ। পেয়েছেন নাসার পুরস্কার, অসম রত্ন-সহ অনেক সম্মান। ২০০৭ সালে তিনি অ্যাস্ট্রনমিক্যাল সোসাইটি অফ ইন্ডিয়ার সভাপতি হন। দেড়শোর বেশি বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ রয়েছে তাঁর। মার্কিন মিটিওরিটিক্যাল সোসাইটি, জিওকেমিক্যাল সোসাইটি, ইউরোপিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অফ জিওকেমিস্ট্রি, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রনমিক্যাল অকাদেমির সভ্য তিনি। মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল দু’জনকে অভিনন্দন জানান।
মণিপুরের প্রবীণ নাট্যকর্মী ওয়ারেপ্পা নব পদ্মশ্রী পাচ্ছেন। শতাধিক নাটকের প্রযোজক, দেড়শ নাটকের পরিচালক ও অভিনেতা ওয়ারেপ্পা মণিপুর রাজ্য অকাদেমি পুরস্কার, ওড়িশা থেকে নাট্যভূষণ, নাট্যশ্রী পুরস্কার-সহ অর্ধশতাধিক পুরস্কার পেয়েছেন। থিয়েটার সেন্টার মণিপুরের সভাপতি তিনি। কানহাইয়ালাল, রতন থৈয়াম, গুরু মংলেম, বাদল সরকার, গিরীশ করনাড, হাবিব তনভির, লন্ডনের জন মার্টিন, জাপানের টি স্বাস্কিদের সঙ্গে অনেকদিন ধরে নাট্যচর্চা করেছেন ওয়ারেপ্পা। ১৯৯৪ সাল থেকে প্রতি বছর একমাসের নাট্য কর্মশালা আয়োজন করেন তিনি। মইরাং প্রভার মতো লুপ্তপ্রায় মণিপুরি নাট্যশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখায় গত আড়াই দশকে তাঁর অবদান অনেক।
মণিপুরের সঙ্গীত গবেষক লৈশরাম বীরেন্দ্রকুমার সিংহও পাচ্ছেন পদ্মশ্রী। সঙ্গীতের ব্যাকরণ, মণিপুরি সঙ্গীত ধারার সঙ্গে চিন-মায়ানমারের যোগ, তার স্বাতন্ত্র্য নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy