Advertisement
২৭ নভেম্বর ২০২৪

মৎস্যজীবী, চৌধুরীদের ভোটেই চোখ প্রার্থীদের

গ্রামের চেয়ে শহরে জাতপাতের হিসেব কম, এটাই সাধারণ চিত্র। শহরের মানুষ শিক্ষা ও যুক্তিতর্কের ভিত্তিতে সব কিছু বিচার করেন। ব্যতিক্রম উত্তর করিমগঞ্জ। জেলাসদর হলেও জাতপাতের লড়াই সেখানে ব্যাপক। অন্যান্য আসনে ভোটের বিভাজন বলতে শুধুই হিন্দু, মুসলমান। উত্তর করিমগঞ্জে যুক্ত হয় উপ-বিভাজনও।

শীর্ষেন্দু শী
করিমগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৬ ০৪:০৫
Share: Save:

গ্রামের চেয়ে শহরে জাতপাতের হিসেব কম, এটাই সাধারণ চিত্র। শহরের মানুষ শিক্ষা ও যুক্তিতর্কের ভিত্তিতে সব কিছু বিচার করেন। ব্যতিক্রম উত্তর করিমগঞ্জ। জেলাসদর হলেও জাতপাতের লড়াই সেখানে ব্যাপক। অন্যান্য আসনে ভোটের বিভাজন বলতে শুধুই হিন্দু, মুসলমান। উত্তর করিমগঞ্জে যুক্ত হয় উপ-বিভাজনও।

মুসলমানরা এখানে দু’টি গোষ্ঠীতে বিভক্ত। এক দিকে কিরাণ এবং মৎস্যজীবী সম্প্রদায়। অন্য দিকে চৌধুরী-তালুকদার। কিরাণ এবং মৎস্যজীবীরা যাঁকে ভোট দেন, চৌধুরী-তালুকদাররা সেই প্রার্থীর বিপক্ষে ভোট দেবেনই— এটাই অলিখিত নিয়মে পরিণত হয়েছে। ওই আসনে মোট ভোটার ১ লক্ষ ৬৬ হাজার ১৫১ জন। মুসলমান ৮৩ হাজার ৫১৪। হিন্দু ৮২ হাজার ৬৩৭। মুসলমানদের মধ্যে মৎস্যজীবী এবং কিরাণ সম্প্রদায়ের ভোট রয়েছে প্রায় ৩২ হাজার। চৌধুরী-তালুকদার ভোটারের সংখ্যা ৫১ হাজারের বেশি।

গত বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ কিছু হিন্দু ভোট এবং কিরাণ ও মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের প্রচুর ভোট পেয়েছিলেন। সেই সুবাদেই তিনি নির্বাচিত হন। এ বারের নির্বাচনেও তাঁদের ভোটেই বড় আশা কংগ্রেসের।

কমলাক্ষবাবুর অবশ্য দাবি, এলাকার উন্নয়নের হিসেবে সব সম্প্রদায়ের মানুষ তাঁকে ভোট দেবেন। নির্বাচনী প্রচারে তাঁর দলও উন্নয়নের কথাতেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। চার বারের বিধায়ক মিশনরঞ্জন দাসের সঙ্গে নানা ভাবে তাঁর পাঁচ বছরের তুলনা টানছেন।

তবে কংগ্রেসের যুক্তি মানতে নারাজ বিজেপি প্রার্থী মিশনবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘উত্তর করিমগঞ্জ আসনে জাতপাতের রাজনীতি করছেন কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ। মানুষ তা ধরে ফেলেছেন।’’ তাই জাতপাতের ঊর্ধ্বে উঠে ভোটাররা তাঁকে নির্বাচিত করবেন বলে আশা করছেন তিনি। বিজেপির অভিযোগ, উত্তর করিমগঞ্জে উন্নয়নমূলক যে সব কাজ হয়েছে, তার অধিকাংশের ঠিকাদারি করেছেন কমলাক্ষবাবুর আত্মীয়-স্বজনই।

একই অভিযোগ এআইইউডিএফ প্রার্থী সাহাবুল ইসলাম চৌধুরীর। তিনি বলেন, ‘‘কমলাক্ষবাবু জনগণের জন্য কোনও কাজ করেননি। করেছেন নিজের লোকেদের ঠিকা পাইয়ে দিতে। তাই ঠিকাদারিটাই হয়েছে, কাজ হয়নি কোথাও।’’ এআইইউডিএফ প্রার্থীর দাবি, যে কিরাণ এবং মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের ভোটে গত বার কমলাক্ষবাবু বিধায়ক হয়েছিলেন, এ বার তাঁরা তাঁর দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। বরং সমস্ত জনগোষ্ঠীর ভোট এআইইউডিএফ পেতে সক্ষম হবে বলে আশা করেন সাহাবুল। সব মিলিয়ে উত্তর করিমগঞ্জ আসনের চিত্র এখনও পরিষ্কার নয়। চৌধুরী-তালুকদাররা কোন দিকে যাবেন, তার উপর নির্ভর করবে কিরাণ-মৎস্যজীবীদের অবস্থান। সে সঙ্গে রয়েছে হিন্দু ভোটে কে কতটা থাবা বসাতে পারেন। চার বার মিশনবাবুর বিধায়ক হওয়ার প্রধান অস্ত্র ছিল ওই হিন্দু ভোটই।

কিন্তু এ বার? সেই উত্তর পেতে অপেক্ষা করতে হবে আরও কয়েক দিন।

অন্য বিষয়গুলি:

state election 2016
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy