প্রতীকী ছবি।
ওড়িশার মালকানগিরি জেলা মাওবাদী অধ্যুষিত। মূলত আদিবাসী মানুষের বাস সেখানে। সেখানকার বালিমেলা জলাধারের তীরবর্তী এলাকার কৃষকরা ধান, যবের চাষ আর করছেন না। বদলে তাঁরা শুরু করেছেন গাঁজার চাষ। এই চাষে অনেক কম পরিশ্রমে অনেক বেশি লাভ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। তবে ভারতে গাঁজার চাষ করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। তা তাঁরা জানেন। কিন্তু সে সবের তোয়াক্কা না করেই গাঁজা চাষ করছেন তাঁরা। কারণ একটাই। এই চাষ করে হাতে টাকা আসছে অনেক বেশি।
ওই জেলার বড়পদর গ্রাম পঞ্চায়েতে থাকেন ৪৫ বছরের এক আদিবাসী কৃষক। বালিমেলা জলাধারের কাছে দু’একর জমি রয়েছে তাঁর। সেপ্টেম্বর শেষ হতেই নিজের জমিতে গাঁজার চাষ শুরু করেছেন তিনি। দিনে তিন বার জল দিতে যান। মাঝেমধ্যে ইউরিয়াও দেন। এ নিয়ে ওই কৃষক বলেছেন, ‘‘ধান বা যব চাষের থেকে গাঁজার চাষ করা কঠিন। কিন্তু এখানকার জমিতে তা তুলনায় সহজ কাজ। গাঁজা চাষে টাকাও বেশি। ওই চাষে ঝুঁকি রয়েছে। কিন্তু লাভের সুযোগ অনেক বেশি।’’ তাঁর গ্রামের বহু কৃষকই এই চাষ করছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
ভারতে গাঁজা চাষ এবং তা বিক্রি করা আইনবিরুদ্ধ। নারকোটিক্স ড্রাগস অ্যান্ড সাইকোট্রপিক সাবস্ট্যান্সেস (এনডিপিএস) আইনের ২০ নম্বর ধারা অনুসারে, ১০ বছর পর্যন্ত জেল এবং এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। এ কথা মালকানগিরির ওই কৃষকও জানেন। কিন্তু পুলিশের ভয়ে এই চাষ বন্ধ করতে রাজি নন তিনি। এ ব্যাপারে তিনি বলেছেন, ‘‘এই সব এলাকায় আগের থেকে এখন পুলিশ বেশি আসে। আমি পুলিশের অভিযানের কথা শুনেছি। গত কয়েক বছরে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে তা দেখিনি।’’
ওই এলাকায় চাষ করা গাঁজা জানুয়ারির মধ্যেই বিক্রির জন্য তৈরি হয়ে যাবে। তার পর স্থানীয় এক ব্যবসায়ী তা কিনে নেবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। মাত্র মাস পাঁচেক সময়ের মধ্যে এক একর জমি থেকে ওই কৃষকের রোজগার হবে প্রায় সাড়ে তিন থেকে চার লক্ষ টাকা। এবং উৎপাদিত গাঁজা নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা নেই। বরং সমস্তটাই বিক্রি হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
গাঁজা চাষ আটকাতে নিয়মিত অভিযান চালায় ওড়িশার পুলিশ। ২০২০-২১ অর্থবর্ষেই ১০টি জেলার সাড়ে ২৩ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ হওয়া গাঁজা নষ্ট করে দেওয়া হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও মালকানগিরির মতো প্রত্যন্ত এলাকার কৃষকরা রোজগার বাড়াতে ভরসা রাখছেন গাঁজা চাষেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy