ক্ষমতায় এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছিলেন তাঁর প্রশাসনিক মন্ত্র -‘মিনিমাম গভর্নমেন্ট, ম্যাক্সিমাম গভর্ন্যান্স!’ অর্থাৎ সব বিষয়ে সরকার মাথা গলাবে না, কিন্তু সুশাসন কায়েম হবে। মোদীর সেই মন্ত্রকে সামনে রেখে অসহিষ্ণুতা বিতর্কে আজ সরকারকে বিঁধতে চাইলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসে আজ লোকসভায় মহিলাদের ক্ষমতায়ন নিয়ে বিতর্ক চলছিল। এমনিতে সংসদে সক্রিয় থাকলেও সনিয়া সচরাচর বিতর্কে অংশ েনন না। কিন্তু আজ ওই আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি কৌশলে বিতর্কের অভিমুখ ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। মোদীর প্রশাসনিক মন্ত্রের কথা স্মরণ করিয়ে সনিয়া বলেন, ‘‘মিনিমাম গভর্নমেন্টের দর্শনে বিশ্বাস করি না। কিন্তু যে ভাবে সুশাসনের সংজ্ঞা নির্ধারণ করা হচ্ছে তা নিয়েও আমার আপত্তি রয়েছে।’’
কী সেই সংজ্ঞা? সনিয়া বলেন, ‘‘শুধু দ্রুত আর্থিক বৃদ্ধি আনাই সুশাসন নয়। দেশের সামাজিক কাঠামো ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করাও সুশাসনের অঙ্গ।’’ সনিয়ার মতে, গণতান্ত্রিক ও উদার মূল্যবোধের ওপরেই সুশাসনের ভিত তৈরি হয়। নাগরিক সমাজ, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, সমাজকর্মীদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা দেওয়া প্রয়োজন। সনিয়ার কটাক্ষ, ‘‘সুশাসন মানে মহিলাদের অধিকার সুনিশ্চিত করা নিয়ে দ্বিচারিতা করা বোঝায় না।’’ মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশের প্রসঙ্গ তোলেন সনিয়া। বলেন, ‘‘সুশাসন বলতে মহিলাদের ন্যায্য অধিকার বুঝিয়ে দেওয়ার কথাও বোঝায়। আর সে জন্য এ বার মহিলা সংরক্ষণ বিল সংসদে পাশ হওয়া দরকার।’’
কংগ্রেস নেতাদের মতে, এক সময় বিজেপি মহিলা সংরক্ষণ বিলের সমর্থনে সওয়াল করত। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর জমানা থেকেই এই অবস্থান নিয়ে চলছে বিজেপি। কিন্তু শরিকদের বাধায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ করানোর ব্যাপারে এখন চুপ। এ জন্যই সরকারের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ এনেছেন সনিয়া। তিনি জানান, মহিলাদের ক্ষমতায়নের ব্যাপারে কংগ্রেসের অবদান প্রশ্নাতীত। স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় মহিলাদের তাতে সামিল করেছিলেন মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী। তা ছাড়া দেশের প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি ও লোকসভার স্পিকার পদে মহিলাকে নির্বাচিত বা মনোনীত করার কৃতিত্বও রয়েছে কংগ্রেসের।
বিজেপি-শাসিত হরিয়ানায় সাম্প্রতিক পঞ্চায়েত নির্বাচন আইনের কথাও টােনন সনিয়া। ওই আইনে পঞ্চায়েত প্রার্থী হওয়ার ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। সনিয়ার দাবি, ‘‘শিক্ষাগত যোগ্যতা বেঁধে দিয়ে কার্যত বহু দলিত, অনগ্রসর, আদিবাসী মহিলা মুখের উপরে দরজা বন্ধ করা হচ্ছে। এতে সাংবিধানিক অধিকার রক্ষিত হচ্ছে? না সুশাসন কায়েম হচ্ছে?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy