জখম: কাফিলের ভাই কাসিফ।
গোরক্ষপুরের যে বাবা রাঘবদাস (বিআরডি) মেডিক্যাল কলেজে কয়েক মাস আগে শিশুমৃত্যুর ঢল নেমেছিল, সেখানে এখনও চিকিৎসক ও পরিকাঠামোর অভাব রয়েছে বলে বলে কয়েক দিনে মুখ খুলেছিলেন চিকিৎসক কাফিল খান। এরই মধ্যে রবিবার রাতে তাঁর ভাই কাসিফ জামিলের উপর হামলা চালাল দুষ্কৃতীরা।
যোগী আদিত্যনাথের গোরক্ষপুরে গোরক্ষনাথ মন্দিরের কাছেই দুষ্কৃতীরা কাসিফকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এই ঘটনার পরে কাফিল খান বলেন, ‘‘আগেই বলেছিলাম, ওরা আমাদের খুনের চেষ্টা করবে।’’ শুধু তা-ই নয়, বুলেটবিদ্ধ হওয়ার পরে আইনি ফ্যাঁকড়া তুলে কাসিফের অস্ত্রোপচার পুলিশ তিন-চার ঘণ্টা আটকে রেখেছিল বলেও অভিযোগ তুলেছেন কাফিল। তবে এর পরেও তাঁর ঘোষণা, ‘‘আমি মাথা নোয়াব না। অন্য কোথাও যাব না। এখানেই থাকব। মরলে এখানেই মরব!’’
কাফিল খানের ভাইয়ের ওপর এই হামলার পরে যোগী আদিত্যনাথের জমানায় উত্তরপ্রদেশে নতুন করে ‘গুন্ডারাজ’ শুরুর অভিযোগ উঠেছে। বিএসপি নেত্রী মায়াবতী বলেন, ‘‘রাজ্যে জঙ্গলরাজ ফিরে এসেছে। গোরক্ষপুরে মুখ্যমন্ত্রীর বাসস্থান থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে কাফিল খানের ভাইয়ের ওপর হামলাই তার প্রমাণ।’’
গত বছর গোরক্ষপুরের হাসপাতালে অক্সিজেনের জোগান বন্ধ হয়ে এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত ৬০টি শিশুর মৃত্যু হয়। চিকিৎসক কাফিল খান সে সময় ব্যক্তিগত ভাবে অক্সিজেনের ব্যবস্থা করে বহু শিশুর প্রাণ বাঁচিয়ে ছিলেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী যোগী তা পছন্দ করেননি। কাফিলকেই গ্রেফতার করে পুলিশ। এপ্রিলে জামিন পান তিনি। তার পর থেকে বেশ কয়েক বার নিজের ও পরিবারের লোকেদের নিরাপত্তার অভাবের অভিযোগ তুলেছিলেন কাফিল। পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, কালকের হামলার তদন্ত শুরু হয়েছে। কাসিফের ব্যবসায়িক বিবাদও হামলার কারণ হতে পারে।
আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ বলেন, ‘‘জেল থেকে বেরিয়েই কাফিল পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছিলেন। এ বার তাঁর ভাইকে খুনের চেষ্টা হল। এটাই যোগীর গুন্ডারাজ!’’ যোগীকে নিশানা করেছেন গুজরাতের বিধায়ক জিগ্নেশ মেবানীও।
রাত ১১টা নাগাদ হামলার পরে প্রথমে কাসিফকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ এসে দাবি করে, সদর হাসপাতালে মেডিক্যাল পরীক্ষা করাতে হবে। এর পর ফের বিআরডি মেডিক্যাল কলেজে মেডিক্যাল পরীক্ষার দাবি তোলে পুলিশ। কাফিলের যুক্তি, পুলিশের টানাহেঁচড়ায় অস্ত্রোপচার করে বুলেট বার করতে রাত দু’টো বেজে যায়। কাফিল-কাসিফের বৃদ্ধা মা নুজ়হত পরভিন বলেন, ‘‘রোজার মধ্যেই আমার ছেলের উপর হামলা হল। সরকারের কাছে অনুরোধ, আমার পরিবারের নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হোক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy