টিপু সুলতানকে ঘিরে ফের মেরুকরণের রাজনীতি কর্নাটকে।
দু’বছর ধরে কর্নাটকের কংগ্রেস সরকার ধুমধাম করে টিপু সুলতানের জন্মদিন পালন করছে। তা নিয়ে হিংসাও ছড়িয়েছে রাজ্যে। এ বছর ১০ নভেম্বর সেই অনুষ্ঠানের আগে আসরে নেমে পড়লেন নরেন্দ্র মোদী সরকারের মন্ত্রী। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনন্ত কুমার হেগড়ে আজ রাজ্য সরকারকে চিঠি লিখে জানান, ‘হিন্দু-বিরোধী’ ‘বর্বর হত্যাকারী’র জন্মদিনের অনুষ্ঠান থেকে তাঁকে বাদ রাখতে। জবাবে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়া বলেছেন, রাজ্য সরকার সকলকেই আমন্ত্রণ জানাবে। কারা আসবেন, আসবেন না— সেটি তাঁদের ব্যাপার। তবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেবে এতে তাঁর নাক গলানো শোভনীয় নয়।
শুধু কর্নাটকেই যে টিপু-জয়ন্তী পালন হয়, এমন নয়। পশ্চিমবঙ্গে ৫২টি গ্রন্থাগারে যাঁদের জয়ন্তী পালন হয়, তার মধ্যে রয়েছে মহীশূরের সুলতানের নামও। বিজেপির বক্তব্য, কর্নাটকে আগামী বছর ভোট। রাজ্যের প্রায় ১৩% সংখ্যালঘু ভোটারের মন জিততেই রাজ্যের কংগ্রেস সরকার ২০১৫ সাল থেকে টিপু-জয়ন্তী শুরু করেছে। তখনও রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় হিংসা হয়েছিল। টিপু হিন্দু-বিরোধী ছিলেন, এই দাবি তুলে আরএসএস-ও মহীশূরের সুলতানের ঘোরতর বিরোধী। সে কারণেই বিজেপি নেতারা আরও সরব।
বিজেপির দাবি নিয়ে যথারীতি ক্ষোভ জানিয়েছে কংগ্রেস। তাদের বক্তব্য, টিপুকে নিয়ে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করছে বিজেপিই। জেডিএস-ও বিজেপির বিরুদ্ধে সরব। দলের নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী বাসবরাজ হোরাট্টির বক্তব্য, ক্ষমতায় থাকাকালীন বিজেপির একাধিক শীর্ষ নেতা-মন্ত্রী টিপু সুলতানের প্রশংসায় মুখর হন। নিজের বক্তব্যের সমর্থনে কিছু ছবি দেখিয়ে হোরাট্টির দাবি, রাজ্যের দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগদীশ শেট্টার ও ইয়েদুরাপ্পা একাধিক বার টিপুর অনুকরণ করে পাগড়ি মাথায় চাপিয়ে টিপু-জয়ন্তীর অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। এমনকী টিপুকে নিয়ে বই লেখার জন্য শেখ আলির প্রশংসা করতে গিয়ে টিপুরে ‘মহীশূরের বাঘ’ বলে সম্বোধন করার পাশাপাশি তাঁর শাসনেরও ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন শেট্টার। জেডিএসের দাবি, এখন নেহাতই মেরুকরণের লক্ষ্যে টিপুর বিরোধিতা করছে বিজেপি।
কংগ্রেসের অভিযোগ, বিজেপি বরাবরই মেরুকরণের রাজনীতি করে ফায়দা তোলার চেষ্টা করেছে। দলের এক নেতার তাজমহলকে ঘিরে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করছেন সঙ্গীত সোম-বিনয় কাটিয়ারেরা। দেশে পর্যটনের অন্যতম আকর্ষণের কেন্দ্র তাজমহল। আর তাকেই ধ্বংসের ইঙ্গিত দিচ্ছেন বিজেপি নেতারা! অথচ দল কোনও ব্যবস্থাই নিচ্ছে না। উল্টে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও সেই সুরে কথা বলছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy