ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে তাঁদের পরিচিতি এখনও তেমন নেই বললেই চলে। কিন্তু নিঃশব্দে তাঁরাই ঘটালেন বিপ্লব। ‘কার্বন নিউট্রাল’ সিনেমা তৈরি করে ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে অনেকটা জায়গা দখল করে নিলেন অসমের বিশ্বজিৎ বোরা, অরুণাচলপ্রদেশের মায়া খোলি। তাঁদের পরিচালিত সিনেমার নাম ‘অ্যায়সা ইয়ে জঁহা’।
‘কার্বন নিউট্রাল’ সিনেমা কী?
পরিচালকরা জানালেন, সিনেমা তৈরির সময় বিভিন্ন ভাবে পরিবেশে কার্বন মিশে যায়। নতুন নিয়মে তার সমান বা বেশি অক্সিজেন পরিবেশে মিশিয়ে দেওয়া যায়। বিশ্বজিৎবাবু বলেন, “শ্যুটিংয়ের সময় জেনারেটর, গাড়ি, পলিথিন, বিদ্যুৎ-সহ কিছু জিনিসের ব্যবহারে প্রচুর কার্বন তৈরি হয়। কোনও চলচ্চিত্র নির্মাতা যদি উৎপন্ন কার্বনের পরিমাণ হিসেব করে পর্যাপ্ত সবুজায়নের উদ্যোগ নিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে সিনেমাটি কার্বন নিউট্রাল বলে চিহ্নিত করা হয়।” তাঁদের দাবি, ভারত তো নয়ই, বিশ্বে এমন উদাহরণ খুব বেশি নেই।
তথ্য অনুযায়ী, ২০০৪ সালে চারটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার বিজয়ী সায়েন্স ফিকশন সিনেমা ‘দ্য ডে আফটার টুমরো’, গোল্ডেন গ্লোব-প্রাপ্ত ২০০৫ সালের ‘সিরিয়ানা’, ২০০৫ সালের ‘সুইট ল্যান্ড’, ২০০৬-এর আল গোরের ‘অ্যান ইনকনভেনিয়েন্ট ট্রুথ’, ২০০৮-এর ‘দ্য ডে দ্য আর্থ স্টুড স্টিল’ এমনই কিছু কার্বন নিউট্রাল ছবি।
২০০৯ সালে মুম্বইয়ে প্রোডাকশন হাউস তৈরি করেন খোলি এবং জহ্নু বরুয়ার সহকারী বিশ্বজিৎবাবু। আগেও তাঁরা কয়েকটি তথ্যচিত্র ও সিনেমা তৈরি করেছেন। সেগুলি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবেও গিয়েছে। তাঁরা জানান, ‘এয়সা ইয়ে জহাঁ’র কাহিনি মুম্বই ও অসম মিলিয়ে। তাতে দেখানো হয়েছে, কী ভাবে সাফল্য ও যশের জন্য দৌড়ে বেড়ানো মানুষ পরিবেশ ও প্রকৃতি থেকে ক্রমশ দূরে সরে যাচ্ছে। হারিয়ে যাচ্ছে তাঁদের মূল্যবোধ। সংলাপ লিখেছেন দু’বার জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত অশোর মিশ্র। জাতীয় পুরস্কার পাওয়া সম্পাদক সুরেশ পাই সম্পাদনা করেছেন। সঙ্গীত পরিচালক ‘ইউফোরিয়া’র পলাশ সেন এবং নৃত্য নিদের্শক গণেশ আচার্য, রাহুল তোমরে, দীপক দে। ছবিটির সহ-প্রযোজক কেজলিন খোলি ও সতীশ শর্মা। সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার ‘এনএইচ ১০’ ও ‘ব্যোমকেশ’ খ্যাত অলোক দে।
বিশ্বজিৎবাবু জানান, সিনেমাটি তৈরির পর ‘সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ অ্যান্ড এডুকেশন’-এর উদ্যোগে পরিবেশের উপরে কতটা প্রভাব পড়েছে তার মূল্যায়ন চালানো হয়। সেই মতো, মুম্বই ও উত্তর-পূর্বে ইতিমধ্যেই তাঁরা ৪০০টি গাছ লাগিয়েছেন। খোলি ও বোরার মতে, উত্তর-পূর্বের সবুজ পরিবেশ থেকে আসার জন্যই তাঁদের মধ্যে পরিবেশ চেতনা বেশি কাজ করেছে। তাই যৌথ ভাবে তৈরি প্রথম ছবির সঙ্গে তাঁরা সবুজকে মিলিয়ে দিতে চেয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy