ছাব্বিশের বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সীমান্তে অনুপ্রবেশকে যে অস্ত্র করতে চলেছে বিজেপি, গত নভেম্বরে রাজ্যের ছ’টি কেন্দ্রে উপনির্বাচনের আগে বাংলায় এসে বিএসএফ-এর অনুষ্ঠানে তা স্পষ্ট করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তারই পাল্টা হিসাবে তৃণমূল এ বার বিএসএফের ভূমিকাকে হাতিয়ার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজ তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান রাধামোহন দাস আগরওয়ালকে একটি দীর্ঘ চিঠি দিয়েছেন। সেখানে তিনি চার বছর আগের একটি কেন্দ্রীয় নির্দেশিকার (দেশের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলির আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে ৫০ কিলোমিটার ভিতরে ঢুকে কোনও অভিযুক্তকে গ্রেফতার বা আটক করতে পারবে বিএসএফ, যা আগে ছিল ১৫ কিমি) পুরনো বিরোধিতাকে নতুন পোশাকে ফিরিয়ে এনেছেন। বিএসএফের ভূমিকায় পশ্চিমবঙ্গের সমস্যার দিকটিকেও বিশদে তুলে ধরেছেন।
তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতার কথায়, “বিজেপি অনুপ্রবেশকে রাজনৈতিক প্রচারের বিষয় করতে চাইছে। কিন্তু এ কথা মাথায় রাখতে হবে, সীমান্ত পরিচালনা এবং রক্ষার দায়িত্ব কেন্দ্রের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর।”
আজ কমিটির চেয়ারম্যানকে দেওয়া চিঠিতে ডেরেক লিখেছেন, “(বিএসএফের এক্তিয়ার বাড়ানো নিয়ে) ২০২১ সালে আনা নির্দেশিকায় বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের মতো সীমান্তবর্তী রাজ্যে তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে। উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়ির মতো কৌশলগত এলাকায় এর যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে।’’ ডেরেক আরও লেখেন, “বাংলার ২৩টির মধ্যে অন্তত ১০টি জেলা গভীর ভাবে সমস্যায় পড়েছে, কারণ তারা বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্ত ভাগ করে নেয়। এই দশটি জেলায় ২১টি লোকসভা আসন রয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই এই সিদ্ধান্তের রাজনৈতিক অভিসন্ধি বোঝা যাচ্ছে।’’ তিনি লিখেছেন, ‘‘এই নিদেশিকার ফলে রাজ্যের এক-তৃতীয়াংশ, যা কি না ভূকৌশলগত ভাবে স্পর্শকাতর, সরাসরি বিএসএফ-এর এক্তিয়ারে চলে আসছে। রাজ্যগুলির সঙ্গে কথা না বলেই একতরফা ভাবে এই নির্দেশিকা ঘোষণা করা হয়েছে। এই ধরনের পরিবর্তন যুক্তরাষ্ট্রীয় সম্পর্ককে খাটো করে দেয়।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)