নাবালক বিচার বিল নিয়ে তখন বিতর্ক চলছে রাজ্যসভায়। বক্তৃতা দিচ্ছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ ব্রায়েন। নির্ভয়া কাণ্ডের উদাহরণ টেনে তিনি বললেন, ‘‘আমার মেয়ের বয়স কুড়ি। তার সঙ্গে এমন কোনও ঘটনা ঘটলে আমি বন্দুক বের করে অপরাধীকে গুলি করে মারতাম।’’ এই মন্তব্যের জেরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। ভরা সংসদ থেকে সরাসরি টিভি সম্প্রচারে এক জন সাংসদের এমন মন্তব্য সঙ্গত কি না, সেই প্রশ্ন উঠেছে। ডেরেক বলেছেন, ‘‘আমি এক জন বাবা হিসেবে নিজের ক্ষোভ জানিয়েছি। সাংসদ
হিসেবে নয়।’’
ডেরেকের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সংসদের বাইরে সিপিএম নেতাদের একাংশ বলেছেন, তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা সত্যিই যদি এত উদ্বিগ্ন হন, তা হলে তাঁর সে কথা বলা উচিত দলনেত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। বলা উচিত, রাজ্যের পরিবেশ যেন পাল্টায়। বস্তুত, আজ রাজ্যসভায় ডেরেকের পরে বলতে উঠে তাঁর এই মন্তব্য নিয়ে তৃণমূলকে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন সিপিএম সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, ‘‘রাজ্যসভায় তৃণমূল ধর্ষণের বিরুদ্ধে এত কথা বলছে। কিন্তু রাজ্যের নির্যাতিতাদের প্রশ্নে তৃণমূল নেতৃত্বের এই সংবেদনশীলতা দেখা যায় না।’’ উদাহরণ দিয়ে ঋতব্রত বলেন, পার্ক স্ট্রিট কাণ্ডের পর সরকারি তরফে কোনও সংবেদনশীলতা তো দেখা যায়ইনি, উল্টে প্রশাসনের শীর্ষ স্তর থেকে ওই ঘটনাকে ‘সাজানো’ বলা হয়েছিল। আদালতের বিচারে প্রমাণ হয়েছে, ওই ঘটনা সাজানো ছিল না। ঋতব্রতের কথায়, ‘‘সম্প্রতি শাসক দলের অনুষ্ঠানে শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছেন এক অভিনেত্রী। আসলে পশ্চিমবঙ্গ ধর্ষণের রাজধানীতে পরিণত হয়েছে।’’
সিপিএম সাংসদের এই বক্তব্যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যই দেখেছেন তৃণমূল নেতারা। যদিও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের একটি সূত্রের বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গে গত কয়েক বছরে নারী নির্যাতনের বেশ কিছু ঘটনা যেমন দেশজোড়া চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে, তেমনই নাবালক অপরাধীর সংখ্যাও যে প্রতি বছর লাফিয়ে বাড়ছে এই রাজ্যে। এই দাবি অবশ্য মানতে নারাজ তৃণমূল শিবির। দলের বক্তব্য, গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখে তবেই মন্তব্য করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy