Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

জঞ্জাল-জ্বালা দিল্লির, পথে নেমে সরব রাহুল

দেশ জুড়ে স্বচ্ছতা অভিযান শুরু করতে নিজেই হাতে ঝাড়ু তুলে নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু গত দিন দশেক ধরে তাঁরই খাসতালুকে জমেছে জঞ্জালের স্তূপ। কারণ, বেতন না পেয়ে রাজধানীর সাফাইকর্মীদের ধর্মঘট। আজ তাঁদের হয়েই পথে নামলেন রাহুল গাঁধী।

সাফাইকর্মীদের অভিযোগ শুনছেন রাহুল গাঁধী। শুক্রবার দিল্লির পাটপরগঞ্জে। ছবি: পিটিআই।

সাফাইকর্মীদের অভিযোগ শুনছেন রাহুল গাঁধী। শুক্রবার দিল্লির পাটপরগঞ্জে। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৫ ০৩:১৯
Share: Save:

দেশ জুড়ে স্বচ্ছতা অভিযান শুরু করতে নিজেই হাতে ঝাড়ু তুলে নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু গত দিন দশেক ধরে তাঁরই খাসতালুকে জমেছে জঞ্জালের স্তূপ। কারণ, বেতন না পেয়ে রাজধানীর সাফাইকর্মীদের ধর্মঘট। আজ তাঁদের হয়েই পথে নামলেন রাহুল গাঁধী। স্বচ্ছ দিল্লির দাবি তোলার পাশাপাশি সাফাইকর্মীদের বেতন নিয়ে রাজনীতি করার অভিযোগ তুললেন দিল্লির আপ ও কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে। ঘটনাচক্রে, এ দিনই পরের দিকে দিল্লি হাইকোর্টের এক নির্দেশ এবং সাফাইকর্মীদের বেতন বাবদ উপ-রাজ্যপাল নজীব জঙ্গ ৪৯৩ কোটি টাকা মঞ্জুর করার পর সেই ধর্মঘট উঠে যায়।

দিল্লিতে অরবিন্দ কেজরীবাল সরকার গঠনের পর থেকেই সমস্যা তৈরি হয়েছিল জঞ্জাল সাফাই নিয়ে। রাজ্য সরকার আম আদমি পার্টির। কিন্তু পুরসভাগুলিতে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। অভিযোগ, এই দু’য়ের টানাপড়েনেই গত দু’মাস ধরে সাফাই কর্মচারীরা বেতন পাচ্ছেন না। তাই গত দশ দিন ধরে ধর্মঘট করছিলেন প্রায় ১২ হাজার সাফাইকর্মী। ফলে যা হওয়ার তা-ই হয়েছে। ডাস্টবিন ছাপিয়ে আবর্জনা উপচে পড়েছে রাস্তার মোড়ে। সেগুলির ওপর দিয়ে গাড়ি চলাচল ও কুকুরের টানাটানিতে আরও খারাপ অবস্থা। বিশেষ করে পূর্ব দিল্লির বাসিন্দাদের নাভিশ্বাস ওঠার উপক্রম হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে আজ দিল্লি পুরসভার দফতরের সামনে বিক্ষোভরত সাফাইকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করতে চলে যান রাহুল। তাঁদের মাঝখানে গিয়ে মাটিতে বসে পড়েন তিনি। কর্মীদের অভিযোগ শোনেন। রাহুলকে ঘিরে স্লোগানও তোলেন সাফাই কর্মচারীরা। সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় রাহুল বলেন, ‘‘আপনাদের বেতনের ব্যাপারে কারও চিন্তা নেই। দিল্লিতে আপ সরকার ও কেন্দ্রে মোদী সরকার উভয়েই রাজনীতি করছে। আর তার ফল ভুগছেন দিল্লির মানুষ ও গরিব সাফাইকর্মীরা। এর একটাই দাওয়াই, নিজেদের ক্ষমতা দেখিয়ে দেওয়া। কথা দিচ্ছি, আপনাদের হয়ে লড়াই করব।’’

মজার কথা, আজ রাহুল মাঠে নামার পর-পরই, কেন্দ্রের আর্থিক বঞ্চনা নিয়ে সরব হন আম আদমির পার্টির নেতারা। কেউ কেউ কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘মঙ্গোলিয়ার জন্য টাকা রয়েছে মোদীর, আর মঙ্গলপুরীর জন্য নেই!’’ আপ নেতারা জানিয়ে দেন, মোদী সরকার বঞ্চনা করলে রাজ্য সরকারই সাফাইকর্মীদের বেতন মিটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবে। এমনকী আগামিকাল থেকে তাঁদের দলের কর্মীদের তত্ত্বাবধানেই রাজধানীতে সাফাই অভিযান শুরু হবে বলে দাবি করেন আপ নেতারা।

যদিও এ সব কিছুরই প্রয়োজন হয়নি। আজই একটি মামলায় দিল্লি হাইকোর্ট আপ সরকারকে আগামী ১৫ তারিখের মধ্যে সাফাইকর্মীদের বেতন মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। আবার দিল্লির উপ-রাজ্যপাল নজীব জঙ্গ তিন পুরসভার মেয়রদের ডেকে সাফাইকর্মীদের বেতন বাবদ ৪৯৩ কোটি টাকা অনুমোদন করার কথা জানিয়ে দেন। সেই ঘোষণার পরেই ধর্মঘট উঠে যায়।

কংগ্রেস নেতাদের অবশ্য দাবি, রাহুল মাঠে নেমেছেন বলেই কাজ হল। আপ ও বিজেপি, দুই দলের নেতারাই বুঝতে পেরেছেন, চাপানউতোরের রাজনীতির খেসারত দিতে হতে পারে তাঁদের। তাই দশ দিন পরে তড়িঘড়ি আজই সক্রিয় হলেন তাঁরা।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE