১৯৮৪ হত্যাকাণ্ডে দোষীদের শাস্তির দাবিতে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ শিখ সম্প্রদায়ের মানুষদের। ফাইল চিত্র।
১৯৮৪-র শিখবিরোধী দাঙ্গায় দোষী সাব্যস্ত ৮৮ জনের শাস্তির সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিল দিল্লি হাইকোর্ট। নয়াদিল্লির ত্রিলোকপুরী এলাকায় দাঙ্গা, খুন, বাড়িতে আগুন জ্বালানো এবং কার্ফু অগ্রাহ্য করার দায়ে ১৯৯৬ সালে এই ৮৮ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে শাস্তি দিয়েছিল নিম্ন আদালত। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল দোষীরা। যদিও তাদের দাবি অগ্রাহ্য করে ২২ বছর পর নিম্ন আদালতের সিদ্ধান্তকেই বহাল রাখার কথা জানাল দিল্লি হাইকোর্ট।
১৯৮৪ সালে শিখ দেহরক্ষীর গুলিতে মারা যান ইন্দিরা গাঁধী। তার পরই ভয়াবহ শিখবিরোধী দাঙ্গা চাক্ষুষ করে সারা দেশ। সারা দেশে মারা গিয়েছিলেন শিখ সম্প্রদায়ের প্রায় ৩০০০ জন মানুষ। সেই দাঙ্গা চরমতম আকার নিয়েছিল রাজধানী নয়াদিল্লিতে। শুধু নয়াদিল্লির শিখ অধ্যুষিত ত্রিলোকপুরী এলাকাতেই বাড়ি থেকে টেনে বের করে এনে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছিল ৯৫ জনকে। জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল অন্তত ১০০টি বাড়ি। শিখ হত্যার বিচার চেয়ে দীর্ঘদিন ধরে এই মামলা লড়ছেন প্রবীন আইনজীবী এইচ এস ফুলকা। দিল্লি হাইকোর্টের এই রায়কে ঐতিহাসিক বলেছেন তিনি। একই সঙ্গে তাঁর ক্ষোভ, ৯৫টি দেহ উদ্ধার করা সত্ত্বেও কারও বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করা হয়নি। দোষী সাব্যস্ত ৮৮ জনকে পাঁচ বছর কারাবাসের শাস্তি দিলেও একে একে জামিন পেয়ে যায় সকলেই।
ত্রিলোকপুরীর দাঙ্গায় উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল খোদ কংগ্রেস নেতাদের বিরুদ্ধে। দাঙ্গার পরই ১০০ জনকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ। তাদের মধ্যে ৮৮ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। পাঁচ বছর কারাদণ্ডের শাস্তিও দেওয়া হয়েছিল তাদের। এই ৮৮ জনের মধ্যে অনেকেই আজ মৃত। যারা বেঁচে আছে, তারাই শাস্তির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আবেদন জানিয়েছিল দিল্লি হাইকোর্টে।
আরও পড়ুন: করতারপুর করিডর মানেই আলোচনা নয়, সার্কের আমন্ত্রণ ফিরিয়ে কড়া বার্তা সুষমার
২০১৫ সালে ২২০টি বন্ধ করে দেওয়া মামলার তদন্ত নতুন করে শুরু করে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গড়ার কথা জানায় কেন্দ্র। সেই সময় এই শিখবিরোধী হত্যাকাণ্ডকে ‘গণহত্যা’ বলেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি জিপি মাথুরের নেতৃত্বাধীন একটি বেঞ্চ জানিয়েছিল, তথ্যপ্রমাণ থাকা সত্ত্বেও পুলিশ ইচ্ছাকৃত ভাবে অন্তত ২২৫টি মামলা বন্ধ করে দিয়েছে। তার পরই সিট তৈরি করে বন্ধ হয়ে যাওয়া মামলাগুলিতে ফের তদন্ত শুরু করার নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্র।
আরও পড়ুন: করতারপুর গুরুদ্বার নিয়ে এত কিছু জানতেন!
এই ২২৫টি মামলার মধ্যে বেশ কয়েকটিতে কংগ্রেস নেতাদের যুক্ত থাকার তথ্যপ্রমাণ-সহ অভিযোগ আছে। যার মধ্যে আছেন দিল্লির কংগ্রেস নেতা সজ্জনকুমার এবং জগদীশ টাইটলারও।
(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরা বাংলা খবর পেতে পড়ুন আমাদের দেশ বিভাগ।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy