Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Delhi Assembly Election 2020

‘দেশ ভাগের ষড়যন্ত্র’, শাহিন বাগ উচ্ছেদই চান মোদী

আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে তিনি বললেন, ‘‘কিছু লোক এসেছিলেন রাজনীতি বদলের জন্য, এখন তাঁদের মুখোশ খুলে গিয়েছে।’

নয়াদিল্লিতে ভোট প্রচারে গিয়ে আক্রমণাত্মক মোদী। ছবি: পিটিআই।

নয়াদিল্লিতে ভোট প্রচারে গিয়ে আক্রমণাত্মক মোদী। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:৩৬
Share: Save:

দিল্লিতে ভোটের প্রচারে গিয়ে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ বলেছেন, ‘‘জিন্নার আজাদির স্লোগান ওঠে শাহিন বাগে। রাহুল গাঁধী, অরবিন্দ কেজরীবাল তাঁদেরই সঙ্গে।’’ যোগী আদিত্যনাথ বলেন, ‘‘পাকিস্তানের মন্ত্রী কেন কেজরীবালের পক্ষে? কারণ, শাহিন বাগে বিরিয়ানি খাওয়াচ্ছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী।’’ সংসদে আজ বিজেপি সাংসদ প্রবেশ বর্মার ঘোষণা— ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগান উঠছে শাহিন বাগে! প্রশ্ন উঠছিল, শাহিন বাগ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীরও কি একই মত? নাকি অমিত শাহের মেরুকরণের রাজনীতির পাশে নরেন্দ্র মোদী নেই?

দিল্লির ভোট প্রচারে প্রধানমন্ত্রীর প্রথম জনসভায় আজই ছিল তার পরীক্ষা। যে সভায় প্রথমেই বিজেপির বিজয় গোয়েল শুনিয়ে রেখেছেন, ‘‘জাতীয়তাবাদ জিতবে, শাহিন বাগ হারবে।’’ আর প্রধানমন্ত্রী মঞ্চে আসার পরে দিল্লি বিজেপির সভাপতি মনোজ তিওয়ারি বললেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর সামনেই বলছি, আপ আর কংগ্রেস চায় গোটা দিল্লিই হোক শাহিন বাগ, আমরা চাই শান্তি বাগ।’’

কী বলবেন প্রধানমন্ত্রী?

বুকে পদ্মফুল নিয়ে প্রধানমন্ত্রী গুচ্ছ-গুচ্ছ উন্নয়নের কথা শোনাচ্ছিলেন। তার মধ্যেই এসেছে অযোধ্যা, এসেছে তিন তালাকে মুসলিম মেয়ে-বোনদের সুরাহার কথা। কিন্তু বক্তৃতার শেষ লগ্নে এসে শাহিন বাগ প্রসঙ্গ তুলেই ফেললেন প্রধানমন্ত্রী। আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে বললেন, ‘‘কিছু লোক এসেছিলেন রাজনীতি বদলের জন্য, এখন তাঁদের মুখোশ খুলে গিয়েছে। বাটলা হাউসের ঘটনায় এঁরাই দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে বলেছিলেন। ভারতকে টুকরো-টুকরো করার অভিপ্রায় রাখা লোকেদের এঁরা বাঁচাচ্ছেন শুধু ভোটব্যাঙ্ক ও তোষণের রাজনীতির জন্য।’’

মোদীর কথায়, ‘‘সীলমপুর, জামিয়া বা শাহিন বাগে, কিছু দিন ধরে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হচ্ছে। এই বিক্ষোভ নিছক কাকতালীয় নয়, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। এর পিছনে দেশ বিভাজনের রাজনীতির ছক রয়েছে।’’

শাহিন বাগ ছুঁয়ে প্রধানমন্ত্রী যে অন্য প্রসঙ্গে চলে গিয়েছেন, এমন নয়। বিরোধীদের নিশানা করে বলেন, ‘‘স্রেফ একটি আইনের বিরোধিতা হলে সরকারের যাবতীয় আশ্বাসের পর এটি শেষ হত। কিন্তু আপ ও কংগ্রেস রাজনীতির খেলা খেলছে। সংবিধান ও তেরঙ্গাকে সামনে রেখে আসল ষড়যন্ত্র থেকে দৃষ্টি সরানো হচ্ছে। সংবিধানের ভিতে তৈরি আদালত অনেক বার অসন্তোষ জানিয়ে বলেছে— বিক্ষোভে যেন আমজনতাকে দুর্ভোগ পোহাতে না হয়। যাঁরা সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্টের অসন্তোষের পরোয়া করেন না, তাঁরা দুনিয়াকে সংবিধানে শেখাচ্ছেন!’’ ইতিমধ্যে শাহিন বাগের বিক্ষোভকারীদের সরাতে আজই সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন এক বিজেপি নেতা।

অমিত শাহের সেনাপতিরা গত কয়েক দিন ধরেই যুক্তি সাজাচ্ছেন, ‘সংখ্যাগরিষ্ঠরা এখনও চুপ করে সহ্য করছেন’। সে কথা তুলেই মোদী বললেন, ‘‘দিল্লির জনতা নীরব, কিন্তু রাগে ফুটছেন। এই (শাহিন বাগের) মানসিকতাকে এখানেই থামানো জরুরি। না হলে শক্তি বাড়িয়ে চক্রান্ত্রকারীরা কাল অন্য
রাস্তা আটকাবেন।’’

জবাবে আপের নেতারা বলছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীও অন্য মন্ত্রীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামলেন।’’ সঙ্ঘ পরিবারের শ্রমিক সংগঠন বিএমএসের দিল্লি সভাপতি দেবরাজ ভডানা আজই যোগ দিয়েছেন আপে। তার পরেও বিজেপি সাংসদ মীনাক্ষী লেখি বলছেন, ৭০ আসনের মধ্যে ৪৫টি পাবেই তাঁর দল। ১১ ফেব্রুয়ারি দেখার, শাহিন বাগ হারায়, না জেতায় বিজেপিকে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy