দলিত বিতর্ক নিয়ে এ বার ঘরে-বাইরে আক্রমণের মুখে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
এক দিকে মায়াবতী আজ সাংবাদিক সম্মেলন করে প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন। তেমনই দলের মধ্যে অসন্তুষ্ট নেতা যশবন্ত সিনহাও দাবি তুললেন, প্রধানমন্ত্রীর উচিত ছিল সংসদে এই নিয়ে মুখ খোলা। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী ও দলের অস্বস্তি বাড়িয়ে কর্নাটকে এক দলিত নিগ্রহের ঘটনা সামনে উঠে এল। সপ্তাহখানেক আগে কর্নাটকের চিকমাগালুরুতে গোমাংস রান্নার অভিযোগে বজরং দলের জনা পঞ্চাশ এক দলিত পরিবারকে আক্রমণ করেছে। তা নিয়ে কংগ্রেস নতুন করে বিজেপির উপর রাজনৈতিক আক্রমণের সুযোগ পেয়ে গেল।
মোদীর নিজের রাজ্য গুজরাতে দলিত নিগ্রহ, উত্তরপ্রদেশে দলিত নেত্রীকে বিজেপির নেতার কুকথার পর গোটা দেশজুড়ে বিতর্কে মলম লাগাতে প্রধানমন্ত্রী উত্তরপ্রদেশের জনসভায় গিয়ে উন্নয়নের প্রলেপ দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, জাতিবাদের বিষ দিয়ে কারও কোনও ভাল হয়নি। উন্নয়নবাদ দিয়েই দেশের ভাল হবে। কিন্তু সরাসরি দলিত বিতর্ক নিয়ে মুখ খোলেননি তিনি। এর আগে হায়দরাবাদের ছাত্র রোহিত ভেমুলার আত্মহত্যার পর উত্তরপ্রদেশে গিয়েই প্রধানমন্ত্রী এই নিয়ে সমবেদনা প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু সাম্প্রতিক বিতর্কে এ বারে আরও চাপ বাড়ছে তাঁর উপর। বিশেষ করে সংসদের অধিবেশন এখন চলছে। তার আগে কর্নাটকের খবর সামনে এসে পড়ায় বিরোধী দলগুলির হাতে নতুন অস্ত্র এল।
দলিত-বিতর্ক নিয়ে বিজেপির কাছে এই মুহূর্তে সবথেকে বড় আশঙ্কার বিষয় উত্তরপ্রদেশের ভোট। মোদীর সেনাপতি অমিত শাহ সেখানে অনেক দিন ধরেই মায়াবতীর ভিত নাড়িয়ে দলিত ভোটকে কাছে টানার চেষ্টা করছেন। তাতে দলের নেতা দয়াশঙ্কর সিংহের কুকথা জল ঢেলে দিয়েছে। তাঁকে দল থেকে বের করে দিয়েও নিষ্কৃতি হয়নি। এখন অবশ্য রাজনৈতিক ভাবে পরিস্থিতির মোড় ঘোরাতে মায়াবতীর দলের নেতাদের মুখ থেকে দয়াশঙ্করের স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে করা মন্তব্যকে বিজেপি পাল্টা হাতিয়ার করতে চাইছে। রাজ্যপাল রাম নাইকের কাছে গিয়ে বিজেপি নালিশ জানিয়েছে। দয়াশঙ্করের স্ত্রীও মায়াবতী ও তাঁর দলের নেতাদের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছেন।
আগামিকাল রাজ্যপাল দয়াশঙ্করের মেয়ের সঙ্গেও দেখা করতে চলেছেন। পাশাপাশি মায়বতীর দলের প্রতিবাদ সভার ভিডিও ফুটেজও চেয়ে পাঠিয়েছেন। মায়াবতীর দলের নেতারা মনে করছেন, বিজেপির ইশারাতেই এখন কাজ করছেন রাজ্যপাল। দয়াশঙ্করের মন্তব্যে মায়াবতী যে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ পেয়েছেন, সেটি কোনও ভাবেই হাতছাড়া করতে চাইছেন না। তাই রাজ্য জুড়ে কালকের প্রতিবাদ সভা তিনি বাতিল করে লখনউ ছুটে গিয়েছেন। নিজে সাংবাদিক সম্মেলন করে অভিযোগ করেছেন, মোদীর রাজ্য গুজরাতের উনায় দলিত নিগ্রহের পিছনে রয়েছে বিজেপি-আরএসএস। দয়াশঙ্করের স্ত্রী তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর করেছেন, কিন্তু দলিত নেত্রীর বিরুদ্ধে মন্তব্য করার সময় নিজের স্বামীর বিরুদ্ধে এফআইআর করেননি।
এরই মধ্যে আসরে নেমে আজ বিতর্ক উস্কে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব। তিনি বলেন, দয়াশঙ্করের মন্তব্য সঠিক নয়। কিন্তু মায়াবতীর দলের টিকিট বিতরণ নিয়ে তিনি যে কথা বলেছেন, সেটি সর্বৈব সঠিক। যা দেখে মায়াবতীর মন্তব্য, অখিলেশ তাঁকে পিসি বলে ডাকেন, কিন্তু নিজের পিসির বিরুদ্ধে মন্তব্য নিয়ে তাঁর কোনও গা নেই। দয়াশঙ্করকে গ্রেফতারও করবে না অখিলেশ সরকার।
আরও পড়ুন- হাতে ১৫ দিন, জিএসটি নিয়ে কংগ্রেসের উপর চাপ বাড়াচ্ছে কেন্দ্র
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy