মানিক সরকার। ফাইল চিত্র।
পরিস্থিতি কঠিন। প্রকাশ্যে সাধারণ কর্মসূচি নিতে গেলেও নিরন্তর বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ। বিরোধী আসনে ফিরে যাওয়ার পরে ত্রিপুরায় এ বার সিপিএমের সম্মেলন প্রক্রিয়া তাই চলছে নীরবে। এবং যথাসম্ভব গোপনে!
পার্টি কংগ্রেসের আগে রাজ্যে রাজ্যে সম্মেলন-পর্ব শেষ হয়ে যাওয়াই সিপিএমে সাংগঠনিক রেওয়াজ। কিন্তু চলতি বছরে পার্টি কংগ্রেসের আগে ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচন ছিল বলে পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল সম্মেলন। ভোটে সিপিএম ক্ষমতা হারানোর পরে এবং বিজেপি সরকারে আসার পরে পরিস্থিতিই বদলে গিয়েছে আমূল! বহু জায়গায় সিপিএমের দলীয় কার্যালয় দখল হয়েছে, নির্বাচিত পঞ্চায়েত বা পুর-প্রতিনিধিদের পদত্যাগ ‘করতে’ হয়েছে। মিছিল-সমাবেশে হামলার ঘটনাও ঘটেছে বিস্তর। এমনকি, ‘রাজরোষে’ দলের দৈনিক মুখপত্র বন্ধ হওয়ার পরে ত্রিপুরা হাইকোর্ট থেকে স্থগিতাদেশ এনে আপাতত কাগজ চালু রাখতে হয়েছে। সম্মেলনকে ঘিরে যাতে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো না হয়ে ওঠে, সেই ভাবনা থেকেই এ বার উত্তর-পূর্বের রাজ্যে অন্য রকম আয়োজন। যার সমাপ্তি হওয়ার কথা নভেম্বরের শেষে।
সিপিএম সূত্রের খবর, লোকাল কমিটি এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে মহকুমা কমিটির সম্মেলন এ বার সেরে নেওয়া হয়েছে গোপনে। শুধু সংশ্লিষ্ট দলীয় প্রতিনিধিদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কবে কোথায় সম্মেলন হচ্ছে। তার পরে একে একে ৮টি জেলার সম্মেলন-পর্ব সম্পন্ন হয়েছে। সম্মেলন ঘিরে সিপিএমের যে রকম প্রচার এবং সমাবেশ হয়, তার কিছুই এ বার ছিল না। রাজ্যের মোট ৮টি জেলার মধ্যে উনকোটিতে বদল হয়েছে জেলা সম্পাদক পদে। অসুস্থতার কারণে সরে গিয়েছেন পুরনো জেলা সম্পাদক। বাকি ৭ জেলায় নেতৃত্বে কোনও রদবদল করা হয়নি। দলের রাজ্য কমিটির এক সদস্যের কথায়, ‘‘কঠিন পরিস্থিতিতে এখন লড়াই করতে হচ্ছে। তাই পরিবর্তনের উপরে জোর দেওয়া হয়নি। যেখানে যতটুকু প্রয়োজন, ততটুকুই করা হয়েছে।’’
জেলা স্তরে বিশেষ বদল না এলেও রাজ্য নেতৃত্বে অবশ্য বদলের দাবি আছে দলের অন্দরেই। সে ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের হাতে কঠিন পরিস্থিতিতে দলের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। ফের জেলার ক্ষেত্রে যে যুক্তি, সেটাই মাথায় রেখে বিজন ধরকেই রাজ্য সম্পাদক পদে বহাল রাখার পক্ষপাতী দলের অন্য একাংশ। তাঁদের মতে, ক’মাস পরে লোকসভা ভোটে শক্ত লড়াই। তার আগে সংগঠনে বেশি ঝাঁকুনি দেওয়া নিষ্প্রয়োজন। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও কঠিন সময়ে সতর্ক পা ফেলতে চান।
আগামী ১৮ নভেম্বর আগরতলায় বসছে দলের রাজ্য কমিটির বৈঠক। নভেম্বরের শেষে রাজ্য সম্মেলনের দিনক্ষণ ওই বৈঠকেই চূড়ান্ত হওয়ার কথা। দলীয় সূত্রের ইঙ্গিত, রাজ্য সম্মেলনের জন্য টাউন হলের কথা ভাবা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy