দেশের কোভিড পরিসংখ্যান। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ইতিমধ্যেই আছড়ে পড়েছে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ। রোজই দেশের দৈনিক সংক্রমণ বাড়ছে। বুধবার তা ৪৭ হাজার ছাড়িয়েছে। মহারাষ্ট্রের পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ। তবে দিল্লিতেও গত কয়েক দিনে বেড়েছে দৈনিক সংক্রমণ। এ ছাড়া কর্নাটক, তামিলনাড়ু, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, পঞ্জাবেও কোভিড পরিস্থিতিরও অবনতি হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে দেশে ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৭ হাজার ২৬২ জন। এ নিয়ে দেশে মোট ১ কোটি ১৭ লক্ষ ৩৪ হাজার ৫৮ জন সংক্রমিত হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে মৃত্যু হয়েছে ২৭৫ জনের। এর মধ্যে ১৩২ জনই মহারাষ্টের। সব মিলিয়ে করোনা দেশে প্রাণ কেড়েছে ১ লক্ষ ৬০ হাজার ৪৪১ জনের। দেশে মৃত্যুর হার ১.৩৭ শতাংশ।
সামনেই দোল, শব-এ-বরাত, নবরাত্রির মতো উৎসব রয়েছে। পাঁচটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনও রয়েছে। এই পরিস্থিতি সংক্রমণ বৃদ্ধি নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করছে। বিশেষজ্ঞরা মাস্কে মুখ ঢেকে রাখা, হাত ধোয়া, ভিড় এড়ানোর মতো আচরণ বিধি কঠোর ভাবে পালনের জন্য বারবার অনুরোধ করছেন সাধারণ মানুষকে। কিন্তু জনতার একটা বড় অংশের মধ্যেই সচেতনতার যথেষ্ট অভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই দ্বিতীয় ঢেউ যাতে প্রবল আকার ধারণ না করে তার জন্য নড়ে চড়ে বসছে প্রশাসন। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভল্লা সব রাজ্যকে একটি নির্দেশিকা পাঠিয়েছেন। সেখানে স্থানীয় পর্যায়ে কন্টেনমেন্ট জোন চিহ্নিত করা এবং কোভিড বিধিনিষেধ ঘোষণা করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে রাজ্যগুলিকে। করোনা সংক্রমণ রুখতে রাজ্যগুলি প্রয়োজনে ওয়ার্ড, ব্লক, শহর বা জেলা পর্যায়ে স্থানীয় ভাবে সব ধরনের গতিবিধিতে বিধি-নিষেধ জারি করতে পারবে।
সংক্রমণ নিয়ে উদ্বেগের অপর কারণ অবশ্যই করোনাভাইরাসের নতুন প্রজাতি। দেশে বিভিন্ন প্রান্তে ইতিমধ্যেই এই প্রজাতির খোঁজ মিলেছে। কিছু কিছু জায়গায় তা ভয়াবহ হচ্ছে। যেমন পঞ্জাব। যেথানে, নতুন কোভিড সংক্রমণের ৮১ শতাংশই হচ্ছে ব্রিটেনে খোঁজ মেলা করোনার নতুন প্রজাতির। এর জেরে পঞ্জাবে গত কয়েক দিনে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে দৈনিক সংক্রমণ। সেখানে রোজ দু’হাজারের বেশি লোক আক্রান্ত হচ্ছেন। হরিয়ানার অবস্থারও অবনতি হয়েছে। মধ্যপ্রদেশ, গুজরাত, ছত্তীসগঢ়, তামিলনাড়ুতে দৈনিক আক্রান্ত দেড় হাজার ছাড়িয়ে যাচ্ছে। একই পরিস্থিতি কর্নাটকে। সেখানে হত ২৪ ঘণ্টায় নতুন আক্রান্ত দু’হাজার ছাড়িয়েছে। দিল্লিতেও গত ক’দিনে লাফিয়ে বেড়েছে আক্রান্ত। বেড়ে তা ১ হাজার পার করেছে। গত বছর ডিসেম্বরে রাজধানীর পরিস্থিতি এই পর্যায়ে পৌঁছেছিল। করোনা দ্বিতীয় ঢেউ রুখতে প্রকাশ্যে হোলি, শব-এ-বরাত এবং নবরাত্রি উৎসব পালনের উপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে রাজধানীতে। মুম্বইয়ের জুহু সমুদ্রসৈকত বন্ধ করে দেওয়ার কথা চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন জেলাতে ইতিমধ্যেই চলাফেরা, দোকানপাট খোলার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। প্রকাশ্যে বা ব্যক্তিগতভাবে হোলি উৎসব পালনেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে মুম্বইয়ে।
১৬ জানুয়ারি থেকে দেশে শুরু হয়েছিল টিকাকরণ কর্মসূচি। মঙ্গলবার অবধি ৫ কোটির বেশি কোভিড টিকার ডো়জ দেওয়া হয়েছে দেশে। প্রথম দফায় করোনা যোদ্ধা, দ্বিতীয় দফায় প্রবীণ এবং কো-মর্বিডিটি থাকা বয়স্করা টিকা পাচ্ছিলেন। কিন্তু ১ এপ্রিল থেকে ৪৫ বছরের বেশি সকলকে টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy