ঋদ্ধিমান সাহার হাত থেকে বাংলার টুপি পেলেন অঙ্কিত চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সিএবি।
বাংলার হয়ে ১৭ বছর বয়সে ব্যাট করতে নেমেছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। সেটা ছিল রঞ্জি ট্রফির ফাইনাল। বাংলা যে ম্যাচ জিতেছিল। বাংলার হয়ে সবচেয়ে কম বয়সে রঞ্জি খেলার নজিরও গড়েছিলেন সৌরভ। বৃহস্পতিবার যে নজির ভেঙে দিল অঙ্কিত চট্টোপাধ্যায়। ১৬ বছর বয়সে ব্যাট করতে নামল বাংলার হয়ে। দু’জনেই বাঁহাতি ব্যাটার।
অঙ্কিতের বয়স ১৫ বছর ৩৬১ দিন। ১৬তম জন্মদিনের মাত্র পাঁচ দিন আগে জীবনের অন্যতম সেরা উপহারটি পেয়ে গেল সে। কল্যাণীর মাঠে ঋদ্ধিমান সাহার হাত থেকে বাংলার টুপি পেল অঙ্কিত। বনগাঁ হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র সে। প্রতি দিন ভোর সাড়ে ৩টের সময় ঘুম থেকে উঠে পড়ে ৪.২৫ মিনিটের বনগাঁ লোকাল ধরার জন্য। দু’ঘণ্টা লাগে শিয়ালদহ আসতে। সেখান থেকে সোজা কলকাতা ময়দান। শুরু অনুশীলন।
গত তিন বছর ধরে দাদার সঙ্গে কলকাতা আসে অঙ্কিত। বনগাঁ থেকে কলকাতা ময়দান, সেখান থেকে ফিরে পড়াশোনা করে তার দিন শেষ হয় রাত ১০টায়। সেই পরিশ্রমের ফল পেল অঙ্কিত। আঙুলের চোটের কারণে বাংলার হয়ে হরিয়ানার বিরুদ্ধে খেলতে পারছেন না অভিজ্ঞ অভিমন্যু ঈশ্বরণ। সেই জায়গায় সুযোগ পেল অঙ্কিত।
দু’দিন আগেই জানতে পেরেছিল যে, তাকে দলে নেওয়া হবে। তাতে ঘাবড়ে যায়নি সে। বরং বাঁহাতি ওপেনার তৈরি হয়েছিল কঠিন পরীক্ষা দিতে। যা তাকে শিখিয়ে ছোটবেলার কোচ দোলন গোলদার। রঞ্জিতে প্রথম দিনের শেষে সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অঙ্কিত বলে, “আমার কাছে এটা খুব স্বাভাবিক একটা ঘটনা। গত কাল রাতে আমার ভাল ঘুমও হয়েছে। ব্যাট করতে নেমে আক্রমণ করতে যাইনি। তবে প্রথম বলটা মারার মতো ছিল, তাই মেরেছি।”
অঙ্কিতের বাবা অনুপ চট্টোপাধ্যায় ঠিকাদারকর্মী। খেলার প্রতি ছেলের ঝোঁক দেখে ব্যাট কিনে দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, “আমাদের বাড়ির পিছনে একটা উঠোন আছে। সেখানেই খেলত। খেলার প্রতি ভালবাসা রয়েছে সেটা বুঝতে পারি।” তাই সোনালি ক্রিকেট কোচিং সেন্টারে দোলন স্যরের কাছে ভর্তি করে দিয়েছিলেন অঙ্কিতকে। দোলন বলেন, “খুব শান্ত ছেলে। সব মন দিয়ে শুনত। যত ক্ষণ না বারণ করতাম, তত ক্ষণ অনুশীলন করে যেত।”
বিজয় মার্চেন্ট ট্রফিতে বাংলার অনূর্ধ্ব-১৬ দলের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান করেছিল অঙ্কিত। সেখান থেকেই জায়গা করে নেয় সৌরাশিস লাহিড়ীর অনূর্ধ্ব-১৯ বাংলা দলে। সেই দলের হয়ে বিনু মাঁকড় ট্রফিতে ৭৫ বলে শতরান করে অঙ্কিত। অসমের বিরুদ্ধে ন’টি ছক্কা মেরেছিল। সৌরাশিস বলেন, “ভয়ডরহীন ক্রিকেটার। দলের জন্য খেলে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে প্রথম শটটাই খেলল কভার ড্রাইভ। ওটাই ওর প্রিয় শট। বাঁহাতি ব্যাটার বলে দেখতেও ভাল লাগে।”
বিরাট কোহলির ভক্ত অঙ্কিত। মাঠে বিরাটের আগ্রাসন পছন্দ বাংলার তরুণ ব্যাটারের। বাবা, দাদা, কোচদের ধন্যবাদ জানিয়ে সে বলে, “সবে শুরু। এখনও অনেকটা পথ বাকি।” গর্বিত বাবা অনুপ বলেন, “ঘরে ও একদমই বাচ্চা। এখনও মা খাইয়ে দেয় ওকে। ঘরে ফিরে মিষ্টি খেয়ে আনন্দ করব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy