প্রতীকী ছবি।
সিবিআই ডিরেক্টরের দু’বছরের মেয়াদ কোনও ভাবেই কমানো যায় না বলে সুপ্রিম কোর্টে দাবি করলেন অলোক বর্মার আইনজীবী।
সিবিআই ডিরেক্টর বর্মা ও স্পেশাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানা পরস্পরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলার পরে দু’জনকেই দায়িত্ব থেকে সরানো হয়েছে। খাতায়-কলমে বর্মা ডিরেক্টর পদে থাকলেও সিবিআই প্রধানের কাজ করছেন অন্য একজন। আজ বর্মার হয়ে প্রবীণ আইনজীবী ফলি নরিম্যানের যুক্তি, ‘‘বর্মাকে ২০১৭-র ১ ফেব্রুয়ারি ডিরেক্টর পদে নিয়োগ করা হয়। আইন অনুযায়ী, দু’বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে তাঁকে সরানো যায় না। বদলিও করা যাবে না।’’
বর্মার বিরুদ্ধে আস্থানার অভিযোগ পেয়ে তাঁকে দায়িত্ব থেকে সরানোর সুপারিশ করেছিল কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স কমিশন। তার ভিত্তিতে ২৩ অক্টোবর মধ্য রাতে বর্মাকে সরায় মোদী সরকার। সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন বর্মা। নরিম্যানের দাবি, কমিশনের এমন সুপারিশ করার এক্তিয়ার নেই। সিবিআই ডিরেক্টর বাছাইয়ের দায়িত্বে থাকে প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি ও লোকসভার বিরোধী দলনেতাকে নিয়ে গঠিত কমিটি। আজ প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বেঞ্চে একই যুক্তি দিয়েছেন ওই কমিটির সদস্য মল্লিকার্জুন খড়্গের আইনজীবী কপিল সিব্বল। খড়্গে লোকসভায় বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা। সিব্বলের দাবি, ডিরেক্টর যদি ঘুষ নিতে গিয়ে বমাল ধরাও পড়েন, তা হলেও তাঁকে সরাতে হলে কমিটির কাছে আসতে হবে সরকারকে।
এই যুক্তি খারিজ করে মোদী সরকারের অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল জানান, কমিটি সিবিআই ডিরেক্টরকে বাছাই করে। কিন্তু তাঁকে নিয়োগ করে সরকার। সরকারের সুপারিশের মধ্যে থেকেই কমিটি একজনকে বেছে নেয়। তাঁর দাবি, ভিজিল্যান্স কমিশনেরও অধিকার রয়েছে সিবিআই ডিরেক্টরকে সরানোর সুপারিশ করার।
কিন্তু নরিম্যান ও সিব্বল এক সুরে যুক্তি দেন, ১৯৯৭ সালে সুপ্রিম কোর্ট বিনীত নারায়ণ মামলায় সিবিআই ডিরেক্টরের মেয়াদ দু’বছর বেঁধে দিয়েছিল। অ্যাটর্নি জেনারেল যুক্তি দেন, বর্মা সিবিআই ডিরেক্টর পদে রয়েছেন। সমস্ত সুযোগ-সুবিধাও পাচ্ছেন। আগামী ৫ ডিসেম্বর এই মামলায় ফের শুনানি হবে। বর্মার অবসরের দিন ৩১ জানুয়ারি। ফলে সুপ্রিম কোর্ট যদি তাঁকে পদে ফেরানোর নির্দেশও দেয়, তা হলেও তাঁর হাতে বেশি সময় থাকবে না।
বর্মাকে সরিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এম নাগেশ্বর রাওকে। আস্থানার বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন বর্মা। রাও এসে ওই তদন্তের দায়িত্বে থাকা ১০ জন অফিসারকে বদলি করে দিয়েছেন। ওই অফিসারদের মধ্যেও অনেকে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন। তাঁদের আইনজীবী রাজীব ধবন ও ইন্দিরা জয়সিংহ অভিযোগ তোলেন, ২৩ অক্টোবর মধ্যরাতেই বর্মাকে সরিয়ে দেওয়ার পরে দায়িত্ব নিয়ে আস্থানার বিরুদ্ধে তদন্তকারীদের বদলি করে দেন রাও। যাতে তাঁরা আস্থানার বিরুদ্ধে তদন্ত না করতে পারেন। ২৩ অক্টোবরের রাতকে ‘নাইট অব লং নাইভস’ বলেও আখ্যা দেন ধবন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy