রাহুল গেলেও, অনুষ্ঠানে গেলেন না মায়া-মমতা।—ফাইল চিত্র।
হিন্দি বলয়ের তিন রাজ্য, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান এবং ছত্তীসগঢ়ে শপথ গ্রহণ চলছে কংগ্রেসের। সেই উপলক্ষে দলের প্রাক্তন নেতা-মন্ত্রীরা তো হাজির রয়েইছেন। সেই সঙ্গে রয়েছেন অন্যান্য দলের প্রধানরাও। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে তিন রাজনৈতিক চরিত্রের অনুপস্থিতি নজর কাড়ছে রাজনৈতিক মহলের। এই তিনজন হলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অখিলেশ যাদব এবং মায়াবতী। শারীরিক অসুস্থতার জেরে যেতে পারেননি মায়াবতী। মায়ের বাত্সরিক কাজের জন্য যাননি মায়াবতীও। অখিলেশ যাদব কেন যাননি নির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি। আর তা নিয়েই জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
সদ্য পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের ফল বেরিয়েছে। তাতে বিজেপিকে হারিয়ে তিন রাজ্যে ক্ষমতায় ফিরেছে কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী বাছতে একটু সময় লেগেছে বটে, তবেশপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে দেরি করেনি তারা। রবিবার ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে ভূপেশ বাঘেলের নাম ঘোষণা করার পরই, সোমবার তিন রাজ্যেই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান রেখেছে তারা। আর প্রতিটি অনুষ্ঠানেই হাজির থাকছেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি রাহুল গাঁধী। এ দিন সকালে রাজস্থান দিয়েই শপথগ্রহণপর্ব শুরু হয় কংগ্রেসের। রাহুল গাঁধীর উপস্থিতিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন অশোক গহলৌত। উপমুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন সচিন পাইলট।
জয়পুরে শপথগ্রহণের ওই অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন জেডিএস নেতা এইচডি দেবগৌড়া এবং অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডুও। জয়পুরে অনুষ্ঠান মিটে গেলে বিমানে চড়ে সরাসরি মধ্যপ্রদেশের উদ্দেশে রওনা দেন রাহুল। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ, ডিএমকে প্রধান এমকে স্ট্যালিন, জম্মু-কাশ্মীর ন্যাশনাল কনফারেন্সের চেয়ারম্যান ফারুখ আবদুল্লা এবং সংযুক্ত জনতা দলের বহিষ্কৃত নেতা শরদ যাদবকে নিয়ে ভোপালে হাজির হন তিনি। দুপুরে ভোপালে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান রয়েছে কমলনাথের। উপ মুখমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেবেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। বিকেল ৪টেয় ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেবেন ভূপেশ বাঘেল।আবহাওয়া অনুকূল না থাকায় সায়েন্স কলেজ থেকে অনুষ্ঠানস্থল সরিয়ে নেওয়া হয়েছে রায়পুরের ইনডোর স্টেডিয়ামে।
মনমোহন সিংহের সঙ্গে বাসে রাহুল গাঁধী। ছবি: এএনআই।
আরও পড়ুন: ১৯৮৪ শিখ দাঙ্গায় সজ্জন কুমারের যাবজ্জীবন, ‘মূল্য দিতে হবে গাঁধী পরিবারকে’, তোপ জেটলির
তবে বিধানসভা নির্বাচনের ফল সামনে আসার পর বিরোধী ঐক্যের যে ছবি ধরা পড়েছিল, উত্তরের তিন রাজ্যে কংগ্রেসের সরকার প্রতিষ্ঠায়সেই ঐক্য যেন কিছুটা বেসুরো ঠেকেছে। বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সমর্থনে এগিয়ে এলেও, রাফাল বিতর্ক নিয়ে দিন কয়েক আগে কংগ্রেস এবং বিজেপি, দুই দলকেই তুলোধনা করেছেন বহুজন সমাজ পার্টির নেত্রী মায়াবতী। শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে গরহাজির ছিলেন তিনি। দেখা মেলেনি উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদবেরও। মমতাও কংগ্রেস নেতাদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানেও যাননি। তার বদলে ভোপালে পাঠিয়েছেন দলের নেতা দীনেশ ত্রিবেদীকে। তা নিয়ে প্রশ্ন করলে সংবাদমাধ্যমকে কমলনাথ জানান, সোমবার মায়ের মৃত্যুবার্ষিকী পালন করছেন মমতা। তাই আসতে পারেননি। তাহলে জন্য বিশেষ বার্তা নিশ্চয়ই পাঠিয়েছেন? জবাবে দীনেশ ত্রিবেদী বলেন, ‘‘আমার অনুষ্ঠানে হাজির থাকাটাই তো বার্তা!’’
বাসে শরদ পওয়ার ও শরদ যাদব। ছবি: এএনআই।
আরও পড়ুন: কেমন ফাঁস দিলে কেমন দাগ? রজত খুনের আগে ইন্টারনেটে সার্চ করেছিলেন অনিন্দিতা
শেষ মুহূর্তে যে বসপার সাহায্যে মধ্যপ্রদেশে জয় নিশ্চিত করেছে কংগ্রেস, সেই দলের নেত্রী মায়াবতী কমলনাথের শপথগ্রহণে যাননি। তবে তাঁর অনুপস্থিতির কারণ নাকি শারীরিক অসুস্থতা! দাবি কমলনাথের। তিনি বলেন, ‘‘স্নায়ুর সমস্যায় ভুগছেন। তাই আসতে পারেননি মায়াবতী।’’
লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি বিরোধী জোট গড়ে তোলাই লক্ষ্য ছিল কংগ্রেসের। তাই বিধানসভায় সকলকে নিয়ে ক্ষমতা জাহির করতে চেয়েছিল তারা। ঠিক যেমনটি চোখে পড়েছিল বছরের গোড়ায়, যখন মে মাসে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন এইচডি কুমারস্বামী। কিন্তু ছন্দপতন বোধহয় ঘটে যায় গতকাল। যখন রাহুল গাঁধীকে বিরোধীদের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেন ডিএমকে প্রধান এমকে স্ট্যালিন। তার জেরেই শেষ মুহূর্তে বিরোধীরা বেঁকে বসেছেন বলে ধারণা রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। তাতে অস্বস্তি বেড়েছে কংগ্রেসের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy