সিবিআইয়ের গৃহযুদ্ধে এবার নতুন প্রহসন। দুই সরকারি আইনজীবী একইসঙ্গে আদালতে হাজির হয়ে দাবি করলেন, তিনিই সিবিআইয়ের আইনজীবী।
একজন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল বিক্রমজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যজন স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর কে রাঘবচারিলু। দু’জনেরই দাবি, তাঁকেই সিবিআইয়ের হয়ে সওয়াল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শেষে অবশ্য রণেভঙ্গ দিলেন একজন। গোটা ঘটনায় অবশ্য গৃহযুদ্ধে নাজেহাল সিবিআইয়ের দিশেহারা অবস্থাই আরও স্পষ্ট হয়েছে।
অলোক বর্মার নেতৃত্বে সিবিআই সিবিআইয়েরই স্পেশাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছিল। সেই এফআইআর খারিজ করার দাবি জানিয়ে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন আস্থানা। ওই মামলায় এতদিন সিবিআইয়ের হয়ে সওয়াল করছিলেন স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর কে রাঘবচারিলু। কিন্তু আজ দিল্লি হাইকোর্টে কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল বিক্রমজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম বার হাজির হয়ে বলেন, তাঁকেই সিবিআইয়ের হয়ে সওয়াল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাঘবচারিলু প্রতিবাদ করে জানান, আস্থানা মামলা করার পরেই তাঁকে নিয়োগ করেছে সিবিআই। শেষে বিক্রমজিৎ জানান, তিনি কর্তৃপক্ষের নির্দেশ নিয়ে এসে জানাবেন, দু’জনের মধ্যে কে সিবিআইয়ের হয়ে সওয়াল করবেন।
প্রশ্ন হল, এমন পরিস্থিতি তৈরি হল কী করে? সিবিআইয়ের একটি সূত্রের মতে, রাঘবচারিলুর সঙ্গে কথা বলেছিলেন আস্থানার মামলায় নতুন তদন্তকারী অফিসার সতীশ দাগার। এক যুগ্ম-অধিকর্তা আবার বিক্রমজিতের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। সমন্বয়ের অভাবে দু’য়ে মিলে এই ডামাডোল।
প্রসঙ্গত, এই মামলার শুনানিতে আস্থানার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে জবাব দেওয়ার ক্ষেত্রে এর আগে সিবিআই ‘গড়িমসি’ করছিল। তবে আজ দিল্লি হাইকোর্টে সিবিআই জানায়, আস্থানার বিরুদ্ধে এফআইআর-এ গুরুতর অপরাধের উল্লেখ রয়েছে। ওইসব অপরাধে অভিযুক্তকে পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেফতার করা যায়। এর তদন্ত প্রয়োজন। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সপক্ষে বেশ কিছু নথি উদ্ধার হয়েছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছনো যায়নি।
সিবিআই আদালতে যুক্তি দিয়েছে, আস্থানার বিরুদ্ধে তদন্ত একেবারেই প্রাথমিক স্তরে। কিন্তু তদন্ত এগনো যাচ্ছে না। কারণ অধিকাংশ নথি, ফাইলই এখন কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স কমিশনে। কমিশন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বর্মার বিরুদ্ধে আস্থানার অভিযোগের তদন্ত করছে। আস্থানার বিরুদ্ধে সিবিআইয়েরই এএসপি এস এস গুর্ম কোর্টে মামলা করেছিলেন। সেক্ষেত্রে আবার সিবিআই এবং আস্থানার আইনজীবীরা একজোট হয়ে গুর্মের মামলা খারিজ করে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছেন।
তবে সব মিলিয়ে স্বস্তি বেড়েছে আস্থানার। এর আগেই দিল্লি হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, আপাতত আস্থানাকে গ্রেফতার বা তাঁর
বিরুদ্ধে কোনও দমনমূলক পদক্ষেপ করতে পারবে না সিবিআই। আজ সেই সময়সীমা ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত বা়ড়ানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy