মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নসিম জইদি। ছবি: সংগৃহীত।
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)-এ কারচুপি হয়েছে প্রমাণ করে দেখাতে হবে। শনিবার সাংবাদিক বৈঠক ডেকে রাজনৈতিক দলগুলিকে এ বার সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নসিম জাইদি।
গত মার্চে চার রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি-র বিপুল জয়ের পর থেকেই বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি ভোটযন্ত্রে কারচুপির অভিযোগ তুলতে শুরু করে। এমনকী, দিল্লি পুরসভা নির্বাচনে বিজেপি-র উত্থানে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল ইভিএমে কারচুপির অভিযোগ নিয়ে তেড়েফুঁড়ে ওঠেন। সেখানেই শেষ নয়, আপ নেতা সৌরভ ভরদ্বাজ দিল্লি বিধানসভায় প্রকাশ্যে ‘ডেমো’ দেখান, কী ভাবে ইভিএম কারচুপি করা যায়!
যত দিন গিয়েছে, ইভিএমের কারচুপি নিয়ে সুর চড়িয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সেই অভিযোগকে বারং বারই খারিজ করা হয়েছে। তাতেও দমানো যায়নি রাজনৈতিক দলগুলিকে।
আরও পড়ুন: জুলাই থেকেই বাড়তে পারে মোবাইল ব্যবহারের খরচ
শেষমেশ কোমর বেঁধে আসরে নামতে বাধ্য হয় মুখ্য নির্বাচন কমিশন। কমিশনের তরফে দাবি করা হয়, যারা ইভিএমে কারচুপির অভিযোগ তুলছে তারা প্রমাণ ছাড়াই এই অভিযোগ তুলছে। মুখ্য নির্বাচন কমিশন নসিম জইদি বলেন, “যাঁরা ইভিএমের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন, তাঁরা কিন্তু এর সপক্ষে কোনও প্রামাণ্য তথ্য দিতে পারেননি।” সেই রাজনৈতিক দলগুলোকে এ বার সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে নসিম জইদি জানান, ইভিএমে কারচুপি প্রমাণ করে দেখাতে হবে। প্রয়োজনে আইটি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কমিশনের অফিসে আসার কথা বলেছেন তিনি।
আগামী ৩ জুন থেকে কমিশনের দফতরে এসে এই চ্যালেঞ্জ করা যাবে। তবে, এই চ্যালেঞ্জে অংশ নিতে রাজনৈতিক দলগুলিতে আগামী ২৬ মে বিকেল পাঁচটার মধ্যে অংশগ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। এক একটি রাজনৈতিক দল চারটি করে ইভিএম পরীক্ষা করতে পারবে। গত নির্বাচনগুলিতে ব্যবহার করা ওই ইভিএমগুলি পরীক্ষার জন্য মোট চার ঘণ্টা সময় দেওয়া হবে। একটি রাজনৈতিক দল বিশেষজ্ঞ-সহ সর্বাধিক তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল পাঠাতে পারবে। নসিমের দাবি, ইভিএম-এ যে প্রোগাম ইনস্টল করা আছে, তাতে কোনও ভাইরাস ঢুকিয়ে দিয়ে কারচুপি করা কখনওই সম্ভব নয়। তাঁর দাবি, “ট্রোজান হর্স নামক ভাইরাস ইভিএমের চিপে ঢুকিয়ে দিয়ে কারচুপি করা সম্ভব নয়। কারণ ওই চিপগুলি এক বারই প্রোগ্রাম করা যায়। এবং ইভিএমগুলোতে কোনও ওয়াই-ফাই চিপও নেই।”
ভোটগ্রহণ পদ্ধিতিতে স্বচ্ছতা আনতে আগামী দিনে সমস্ত নির্বাচনে প্রতিটি বুথে ভোটার ভেরিফায়েবল পেপার অডিট ট্রেল (ভিভিপ্যাট) এবং ইভিএম ব্যবহার করা হবে বলেও জানান নসিম। ভিভিপ্যাট মেশিন কেন এই চার রাজ্যের নির্বাচনে ব্যবহার করা হয়নি, তা নিয়ে এ মাসের শুরুতেই ১৩টি রাজনৈতিক দল মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের কাছে দরবার করে। কমিশন বার বারই দাবি করেছে, যে হেতু ইভিএম স্ট্যান্ড অ্যালোন মেশিন তাই কোনও ভাবেই এর কারচুপি সম্ভব নয়।
তবে, কমিশনের এই দাবিকে গুরুত্ব দিতে রাজি হয়নি রাজনৈতিক দলগুলি। উল্টে এ দিন আপ এবং বহুজন সমাজবাদী পার্টি অভিযোগ তুলেছে রাজনৈতিক চাপে পড়েই ইভিএম হ্যাকাথনের বিষয়টি নিয়ে দেরি করেছে কমিশন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy