ফাইল চিত্র।
নেওয়া যেতেই পারে, কিন্তু তাতে দেশের মান যাবে— এই যুক্তিতেই কেরল পুনর্গঠনে বিদেশি রাষ্ট্রের থেকে সরাসরি অর্থ সাহায্য নেওয়া হবে না বলে ফের স্পষ্ট করে দিল কেন্দ্র। আজ কেরলের বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় পর্যটন প্রতিমন্ত্রী আলফোন্স কান্নানথানাম বলেন, ‘‘সুনামির পরে মনমোহন সরকার বিদেশি সাহায্য না নেওয়ার প্রশ্নে যে নীতি নিয়েছিল, আমাদের সরকার তাই মেনে চলছে।’’ তবে বিদেশি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে ত্রাণ গ্রহণের একটি রাস্তা খোলা হয়েছে। এখন মূল নীতিতেও পরিবর্তনের কথা ভাবা হচ্ছে সরকারের অন্দরে।
কেরলের বন্যায় নরেন্দ্র মোদী সরকার সব মিলিয়ে ৬০০ কোটি টাকা প্রাথমিক অনুদান ঘোষণা করে। তার ক’দিন পরেই কেরল পুনর্গঠনে ৭০০ কোটি টাকা সাহায্যের কথা ঘোষণা করেন আমিরশাহির শাসক। কেন্দ্র সেই সাহায্য ফিরিয়ে দেয়। তার পর থেকেই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ঘৃণা ও বিভেদের রাজনীতির অভিযোগ উঠেছে।
জাতীয় প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা নীতিতে বিদেশি সাহায্যের প্রশ্নে বলা রয়েছে, ‘নীতিগত ভাবে ভারত প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলায় কোনও দেশের সাহায্য চাইবে না। তবে কোনও দেশের সরকার নিজে থেকে বিপন্নদের সাহায্যে এগিয়ে এলে কেন্দ্র চাইলে তা নিতে পারে’।
আরও পড়ুন: ভাসল ভিটের গ্রামও, তবু নীরব ‘ভূমিপুত্র’
সেই সূত্র ধরে সিপিএম সাংসদ এম বি রাজেশ বলেন, ‘‘যে ভাবে গুজরাতে ভূমিকম্পের সময় বিদেশি ত্রাণ নেওয়া হয়, সে ভাবেই কেরলের পরিস্থিতি বিচার করে নীতি পাল্টানো হোক।’’
মনমোহন সরকারের বিদেশসচিব ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার দায়িত্বে থাকা প্রাক্তন কূটনীতিক শিবশঙ্কর মেনন বলেন, ‘‘২০০৪ সালে ত্রাণের ক্ষেত্রে বিদেশি সাহায্য নেওয়া না হলেও দীর্ঘমেয়াদি পুনর্বাসনের প্রশ্নে ঘটনা ধরে ধরে সাহায্য নেওয়া হয়েছিল।’’ প্রাক্তন বিদেশসচিব নিরুপমা রাও বলেন, ‘‘না বলাটা সোজা। কিন্তু আরব দেশগুলির সঙ্গে মলয়ালি সমাজের যা সম্পর্ক, তাতে কেরল প্রশ্নে না বলা বেশ কঠিন।’’
আমিরশাহির দেওয়া ৭০০ কোটি টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার পর থেকে লাগাতার সমালোচনার মুখে কেরলের জন্য ঘুরপথে ত্রাণ গ্রহণের একটি রাস্তা ইতিমধ্যেই খুলেছে মোদী সরকার। সাউথ ব্লক জানিয়েছে, বিদেশি রাষ্ট্রের পরিবর্তে বিদেশি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার থেকে দান নেওয়া যাবে। বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, বিদেশে বসবাসকারী ভারতীয়রা বা কোনও আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অর্থ সাহায্য দিতে চাইলে তা নিতে সমস্যা নেই। ঘটনাচক্রে আজই ভারতের রেড ক্রস সোসাইটিকে কেরলের জন্য ১ কোটি ৫৩ লক্ষ টাকা অর্থসাহায্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
পাকিস্তানের নয়া প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান কেরলের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে জানান, তাঁর সরকার সব রকমের মানবিক সাহায্য দিতে প্রস্তুত। সেই সূত্রেই প্রশ্ন উঠেছে, এ বার কী করবে মোদী সরকার?
কেরলকে দেওয়া অর্থ-বরাদ্দ বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়ে আজই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘‘কেরলকে ৬০০ কোটি টাকার প্রাথমিক সাহায্য দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের রিপোর্ট এলে তা খতিয়ে দেখে ফের সাহায্য দেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy