অমিত শাহ। ফাইল চিত্র।
গান্ধী পরিবারের সঙ্গে যুক্ত দুটি সংস্থার বিদেশি অনুদান পাওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দিল নরেন্দ্র মোদী সরকার।
আজ অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক রাজীব গান্ধী ফাউন্ডেশন ও রাজীব গান্ধী চ্যারিটেবল ট্রাস্টের বিদেশি অনুদান নিয়ন্ত্রণ আইনে প্রাপ্ত লাইসেন্স বাতিল করে দিয়েছে। ১৯৯১ সালে রাজীব গান্ধীর মৃত্যুর পরে তৈরি রাজীব গান্ধী ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন সনিয়া গান্ধী। রাহুল গান্ধী, প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা ছাড়াও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ, পি চিদম্বরম, মন্টেক সিংহ অহলুওয়ালিয়ারা এর ট্রাস্টি। একই ভাবে ২০০২ সালে তৈরি রাজীব গান্ধী চ্যারিটেবল ট্রাস্টেরও প্রধান সনিয়া গান্ধী। এই দু’টি সংস্থাই আর বিদেশি অনুদান নিতে পারবে না।
চার বছর আগে দেশের ৪২টি সংস্থার বিরুদ্ধে বিদেশি অনুদান নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে তদন্ত শুরু করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। বিজেপি দু’বছর আগে অভিযোগ তুলেছিল, রাজীব গান্ধী ফাউন্ডেশন ২০০৫-০৬ সালে দিল্লিতে অবস্থিত চিনের দূতাবাস থেকে অনুদান পেয়েছিল। চিনের সরকার ও চিনের দূতাবাস থেকে ৩ লক্ষ ডলার অনুদান নেওয়ার অভিযোগ তোলেন বিজেপি নেতারা। চিনের সঙ্গে গান্ধী পরিবারের গোপন আঁতাঁতেরও অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি। এর পরেই এই ঘটনার তদন্তে ইডি-র বিশেষ অধিকর্তার নেতৃত্বে একটি আন্তঃমন্ত্রক কমিটি তৈরি হয়। কমিটিতে আয়কর দফতর, অর্থ মন্ত্রক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তারাও ছিলেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, সেই কমিটির তদন্তের ভিত্তিতেই রাজীব গান্ধীর নামাঙ্কিত দুই সংস্থার বিদেশি অনুদানের লাইসেন্স বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। তদন্তে আয়কর রিটার্নের নথিতে কারচুপি, তহবিলের অপব্যবহার, চিনের থেকে অনুদান, আর্থিক নয়ছয়ের মতো বিষয় খতিয়ে দেখা হয়েছে।
রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রায় আমজনতার স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া মিলছে বলে কংগ্রেস নেতারা দাবি করছেন। উল্টো দিকে ডলারের তুলনায় টাকার পতন, বেকারত্ব বেড়ে চলা এবং লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে মোদী সরকারকে বিরোধীরা নিশানা করছেন। কংগ্রেস অভিযোগ তুলেছে, সেখান থেকে নজর ঘোরাতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গান্ধী পরিবারের সঙ্গে যুক্ত সংস্থার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছেন। কংগ্রেস এ নিয়ে হইচই করার রাস্তায় হাঁটেনি। তবে কংগ্রেসের জনসংযোগ দফতরের প্রধান জয়রাম রমেশ বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, “অর্থনীতি গভীর সঙ্কটে। ভারত জোড়ো যাত্রায় মানুষের বিপুল সাড়া মিলছে। মানুষ যে বিদ্বেষ ও বিভাজনের রাজনীতিতে বিরক্ত, তা স্পষ্ট। প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া কী? দীপাবলির আগে সপ্তাহান্তে তাঁরা রাজীব গান্ধী ফাউন্ডেশন ও চ্যারিটেবল ট্রাস্টের লাইসেন্স বাতিল করছেন। পুরনো অভিযোগ ফের সামনে আনা হচ্ছে। বদনাম করে রোজকার সমস্যা থেকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা।” জয়রামের দাবি, রাজীবের মূল্যবোধের ভিত্তিতে তৈরি দুই সংস্থাই সদ্ভাবনা, সকলের জন্য উন্নয়ন, মহিলাদের ক্ষমতায়ন, ত্রাণের কাজ করছে। দুই সংস্থাই সেবামূলক সংগঠন। সমস্ত আইন, নিয়ম মেনে চলে। বর্তমান সরকারের চরিত্র থেকে বোঝা যায় কেন তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। দুই সংস্থাই এর বিরুদ্ধে প্রয়োজন মতো আইনি পদক্ষেপ করবে।
কংগ্রেসের দাবি, চিনের সেনা গত দু’বছর ধরে ভারতের জমি দখল করে বসে রয়েছে। এ নিয়ে মোদী সরকারকে প্রশ্ন করার পরেই মোদী সরকার তথা বিজেপি রাজীব গান্ধী ফাউন্ডেশন ও চ্যারিটেবল ট্রাস্টের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে। বাস্তব হল, লাদাখে চিনের সেনা এখনও ভারতের জমি দখল করে রয়েছে। সেটাকেই স্বাভাবিক অবস্থান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে।
উল্টো দিকে বিজেপি আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সিদ্ধান্তকে কাজে লাগিয়ে যুক্তি দিয়েছে, গান্ধী পরিবার বা তার সঙ্গে যুক্ত সংস্থা আইনের ঊর্ধ্বে নয়। বিজেপি মুখপাত্র সম্বিত পাত্র বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সিদ্ধান্ত দুই সংস্থার দুর্নীতি খোলসা করে দিয়েছে। রাজীব গান্ধী ফাউন্ডেশন চিনের সরকার, চিনের দূতাবাসের পাশাপাশি বিতর্কিত ধর্মপ্রচারক জ়াকির নাইক, দুর্নীতিতে অভিযুক্ত ইয়েস ব্যাঙ্কের প্রাক্তন কর্ণধার রানা কপূরের থেকেও অনুদান নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের অর্থও রাজীব গান্ধী ফাউন্ডেশনের কোষাগারে জমা হয়েছে।’’ সম্বিত বলেন, “যেখানেই দুর্নীতি, সেখানেই গান্ধী পরিবার। এরা দায়বদ্ধতা ছাড়াই ক্ষমতার সুবিধা ভোগ করেছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy