Advertisement
E-Paper

আদানি-ওয়াকফ-মণিপুর! শীতের অধিবেশন উত্তাপ নিয়েই শুরু হচ্ছে সংসদে, পদ্মের ‘অক্সিজেন’ মহারাষ্ট্র

দুই রাজ্যে বিধানসভা ভোট এবং ১১ রাজ্যে ৫০টি (৪৮ বিধানসভা, দুই লোকসভা) আসনে উপনির্বাচনের টাটকা রেশ নিয়ে সোমবার শুরু সংসদের অধিবেশন। ঝড় উঠবে আদানিকাণ্ড, মণিপুর, ওয়াকফের মতো বিষয়ে।

Winter session of Parliament just after Maharashtra-Jharkhand elections & the issues like Adani, Manipur, Waqf

(বাঁ দিকে) নরেন্দ্র মোদী। রাহুল গান্ধী। (ডান দিকে) —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ১৯:২৮
Share
Save

এক-এক ফল হয়েছে দুই বিধানসভা ভোটের যুদ্ধে। তবে ধারে এবং ভারে এগিয়ে থাকা মহারাষ্ট্র জিতে বেশি চাঙ্গা বিজেপি এবং তার এনডিএ শিবির। সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে গৌতম আদানিকে ঘিরে যে ঝড়ের পূর্বাভাস, তাকে প্রতিহত করার যুদ্ধে বিজেপিকে ‘বিরাট’ মানসিক জোর জুগিয়ে দিল মরাঠাভূমে ‘বিরাট’ জয়। শনিবারের বিজয়োচ্ছ্বাসের রেশ থাকতে থাকতেই, মাঝে একটা রবিবার রেখে, সোমবারই শুরু হতে চলেছে সংসদের অধিবেশন।

অধিবেশনের আগের দিন নিয়মমাফিক যে সর্বদলীয় বৈঠক হল, সেখানে বিরোধী দলগুলির বক্তব্যে স্পষ্ট, শিল্পপতি গৌতম আদানিদের বিরুদ্ধে ঘুষ দিয়ে বরাত পাওয়ার যে অভিযোগ আমেরিকার আদালতে উঠেছে, তা নিয়ে আসন্ন অধিবেশনে ঝড় তোলা হবে। উঠবে বিজেপি শাসিত মণিপুরে নতুন করে চেগে ওঠা অশান্তি বা ওয়াকফ বিল ঘিরে বিতর্কও।

অধিবেশনের ঠিক মুখে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’কে স্বস্তিতে রেখে দিয়েছে মূলত পূর্ব ভারত। মহারাষ্ট্রে ‘ইন্ডিয়া’র ভরাডুবি হলেও, মান রেখেছে ঝাড়খণ্ড। বাংলার বিধানসভা উপনির্বাচনে বিজেপিকে ‘ধুয়ে দিয়েছ’ তৃণমূল। বিজেপি অবশ্য উপনির্বাচনে সার্বিক ভাবে তুলনামূলক ভাল ফল করেছে। বিরোধী জোট সংসদের অধিবেশনের আগে বিপর্যস্ত অবস্থায় পড়তে পড়তেও পড়েনি পূর্ব ভারতের সৌজন্যেই। কংগ্রেস দু’টি লোকসভা আসনের উপনির্বাচনেই জিতেছে। তবে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী কেরলে চার লক্ষাধিক ভোটে জিতলেও, মহারাষ্ট্রের আসনটি কোনও রকমে ধরে রাখতে পেরেছে তাঁর দল।

অন্য দিকে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে অনেকটা শক্তিক্ষয় করে ক্ষমতায় আসার পরে সংসদে বিরোধী শিবিরের চাপ মানতে হচ্ছে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহদের। সেই জায়গা থেকে অনেকটা স্বস্তি এনে দিয়েছে মহারাষ্ট্র। ২৮৮-র মধ্যে ২৩৩ আসনে জয় পাওয়া এনডিএ তিন-চতুর্থাংশ শক্তি নিয়ে দেশের অন্যতম বড় রাজ্যে ক্ষমতায়। হরিয়ানা জয়ের পরেও যে স্বস্তি শাসকশিবির পায়নি সেটা এ বারে মিলে গিয়েছে। ফলে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাস নিয়ে সংসদে দেখা যাবে মোদী, শাহদের। রাজ্যের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘বিরোধীরা আলোচনা ভেস্তে দিয়ে সংসদ অচল করতে চাইলে ভুল করবে। যদিও জাতীয় রাজনীতিতে উন্নয়ন-বিরোধী হিসাবে এখন সব চেয়ে বেশি নাম করেছে তৃণমূল।’’

তৃণমূল ওয়াকফ, আদানি, মণিপুরের মতো বিষয় নিয়ে সংসদে উত্তাপ বাড়াতে তৈরি। দলের সাংসদ সামিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘বাংলায় মাদারিহাট আসনও ওরা হেরে গিয়েছে। আমাদের রাজ্যে বিজেপির ভোট কমেছে আর আমাদের বেড়েছে। মহারাষ্ট্রে জয় পেলেই যে ওরা যা খুশি তাই করতে পারে এমনটা ভাবা উচিত নয়। বিজেপির বিরুদ্ধে আমরা মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে লড়াই করব, কোনও ক্ষেত্রই ওদের ছেড়ে দেওয়া হবে না।’’

ঝাড়খণ্ডে ক্ষমতা ধরে রাখাটা বিরোধী জোটের কাছে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সেখানেও কংগ্রেসের কৃতিত্ব কিছু নেই। শনিবার ঘোষিত ফলাফলে প্রাপ্তি বলতে দু’টি জেতা লোকসভা আসন পুনর্দখল। কেরলের ওয়েনাড়ে দাদা রাহুল গান্ধীর ছেড়ে যাওয়া আসনে জিতে প্রিয়ঙ্কা গান্ধীর সংসদে অভিষেক হচ্ছে। শীতকালীন অধিবেশনে কোন দিন থেকে দাদা রাহুলের সঙ্গে সংসদে বোন প্রিয়ঙ্কাকে দেখা যাবে তা এখনও নিশ্চিত নয়। কারণ, কবে প্রিয়ঙ্কার শপথগ্রহণ তা এখনও জানানো হয়নি।

মহারাষ্ট্রে বড় জয় পাওয়ার ফলে খুব তাড়াতাড়ি রাজ্যসভাতেও বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতা এসে যাবে। তবে তার আগে লোকসভায় কংগ্রেসকে চেপে ধরতে চাইবে বিজেপি। দাদা-বোনের উপস্থিতিতে ‘পরিবারতন্ত্র’ নিয়ে আক্রমণ বাড়াবেন মোদীরা। আর কংগ্রেসের সঙ্গী হওয়া ‘বিপজ্জনক’ বলে শনিবারই যে মন্তব্য মোদী করেছেন তাতে অন্য ইঙ্গিতও রয়েছে। হরিয়ানার পর মহারাষ্ট্রেও জেতার পর মোদী বলেন, ‘‘কংগ্রেসের জন্যই ভরাডুবি হয়েছে মহাবিকাশ আঘাড়ীর।’’ এটা স্পষ্টতই বিরোধী জোটের অন্য দলগুলির সঙ্গে কংগ্রেসের সম্পর্কে চিড় ধরানোর লক্ষ্যেই।

শীতকালীন অধিবেশনে কংগ্রেসের ‘দুর্বলতা’র জায়গাটা নিতে পারে সপা, তৃণমূলের মতো বড় শরিকেরা। পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার ৬টি আসনের উপনির্বাচনে ছ’টিতেই বড় ব্যবধানে জয়ের পরে উৎফুল্ল তৃণমূল। বিরোধী জোটা ‘ইন্ডিয়া’-তে তাই মনোবলের দিক থেকেও শক্তিশালী শরিক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। ফলে সংসদে বিরোধী বেঞ্চে মানসিক ভাবে এগিয়ে থাকবেন তাঁরাই, এমনটা মনে করছেন বাংলার শাসকদলের অনেক নেতাই।

এখনও পর্যন্ত সরকার পক্ষের যা সিদ্ধান্ত তাতে ১৫টি বিল আনা হবে লোকসভায়। যদিও সব চেয়ে বেশি উত্তাপ ছড়াবে ওয়াকফ আইন সংশোধনী বিল। ওয়াকফ বা মণিপুরের মতো বিষয় থাকলেও, অধিবেশনের শুরু থেকে বিরোধীরা বেশি চাপ তৈরি করতে চলেছেন আদানির ‘ঘুষকাণ্ড’ নিয়েই। ঝোড়ো অধিবেশনের ইঙ্গিত দিয়ে রাখল রবিবারের সর্বদলীয় বৈঠকও।

parliament Winter Session Parliament Winter Session Narendra Modi Rahul Gandhi

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।