Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

নজর আজ আদালতে, কী বোমা ফাটাবেন অলোক? চিন্তায় শাসক

সেন্ট্রাল ভিজিল্যান্স কমিশনের (সিভিসি) সিদ্ধান্তকে হাতিয়ার করে মঙ্গলবার মধ্যরাতে অনির্দিষ্টকালীন ছুটিতে পাঠানো হয়েছে সিবিআই প্রধান অলোক বর্মাকে।

অলোক বর্মা। ——ফাইল চিত্র।

অলোক বর্মা। ——ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৮ ০২:১৮
Share: Save:

সেন্ট্রাল ভিজিল্যান্স কমিশনের (সিভিসি) সিদ্ধান্তকে হাতিয়ার করে মঙ্গলবার মধ্যরাতে অনির্দিষ্টকালীন ছুটিতে পাঠানো হয়েছে সিবিআই প্রধান অলোক বর্মাকে। সেই পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে গত কালই সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছেন বর্মা। আগামিকাল শীর্ষ আদালতে সেই শুনানিতে তিনি কী বোমা ফাটান, তার জন্য আতঙ্কের প্রহর গুনছে শাসক শিবির।

এই পরিস্থিতিতে আজ সিবিআইয়ের তরফে বলা হয়েছে, বর্মা কিন্তু এখনও সংস্থার ডিরেক্টর। আস্থানা এখনও স্পেশাল ডিরেক্টর। তাঁদের ছুটিতে থাকার সময়টুকু কেবল ডিরেক্টরের দায়িত্ব পালন করবেন এম নাগেশ্বর রাও। অনেকের মতে, বর্মাকে তাঁর পদ থেকে সরানো হয়নি, আদালতে এমন সওয়াল করার পথ খোলা রাখতেই সিবিআই-কে দিয়ে এই ঘোষণা।

বস্তুত, সিবিআই-কে সরকার ব্যবহার করেছে, এমন অভিযোগের ইঙ্গিতই তাঁর আবেদনে রেখেছেন বর্মা। তিনি লিখেছেন, সিবিআইয়ের কাজে হস্তক্ষেপ বাড়ছিল। বেশ কিছু তদন্ত যে পথে এগোচ্ছিল, তা সরকারের কাম্য ছিল না। বর্মার এই বক্তব্য লুফে নিয়ে কংগ্রেসের অভিযোগ, রাফাল তদন্তের ফাইল খোলার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন বর্মা। তাই তড়িঘড়ি তাঁর ক্ষমতা কে়ড়ে নেওয়া হল। একই সঙ্গে তাদের দাবি, বর্মাকে সরানোর এক্তিয়ারই সিভিসির নেই।

তবে অরুণ জেটলির মতে, দুর্নীতির মতো অভিযোগের ক্ষেত্রে সিভিসি স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে সিবিআই প্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে। যদিও একাধিক আইনজীবীর মতে, সিভিসি দুর্নীতির তদন্ত করতে পারে, কিন্তু সিবিআই প্রধানকে নিয়োগ, বদলি বা ছুটিতে যেতে বলার অধিকার তার নেই। ২০১৩ সালের লোকপাল ও লোকায়ুক্ত আইন অনুযায়ী একমাত্র প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলনেতা ও প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে গঠিত কলেজিয়ামই সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

যাঁর সঙ্গে বর্মার বিবাদ, সেই আস্থানা সরকারি মহলে নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। ভবিষ্যতে সিবিআই প্রধান করার জন্যই গুজরাত ক্যাডারের ওই আমলাকে সিবিআইয়ে আনা হয়। বর্মা পিটিশনে লিখেছেন, আস্থানার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগের নিষ্পত্তি না-হওয়ায় তিনি ওই নিয়োগে আপত্তি জানিয়েছিলেন। বর্মার অভিযোগ, তাঁর হাতে থাকা ব্যপম, অগুস্তা ওয়েস্টল্যান্ড, লালুর দুর্নীতির মতো তদন্ত আস্থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়। একাধিক সংবেদনশীল তদন্তে আস্থানা বাধা সৃষ্টি করেছিলেন বলেও অভিযোগ। পিটিশনে বর্মার দাবি, তদন্তকারী অফিসার, যুগ্ম অধিকর্তা-সহ বাকি অফিসারেরা কোনও বিষয়ে একমত হলেও আস্থানা কেবলই বিপরীত মত দিতেন। বর্মার পিটিশনে আস্থানা ও সরকারের সুসম্পর্কের বিষয়টি উঠে আসায় অস্বস্তিতে শাসক শিবির। আশঙ্কা, এমন কিছু তথ্য বর্মার কাছে রয়েছে, যা প্রকাশ্যে এলে আস্থানার স্বজনপোষণ স্পষ্ট হবে। যাতে আখেরে অভিযোগের আঙুল উঠতে পারে মোদী সরকারের দিকেই।

কাল প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি এস কে কউল ও বিচারপতি কে এম জোসেফের বেঞ্চে শুনানি হওয়ার কথা। কিন্তু প্রধান বিচারপতি নিজে যে হেতু কলেজিয়ামের সদস্য, তাই তাঁর বেঞ্চে ওই মামলার শুনানি হয় কি না, সেটাও দেখার।

অন্য বিষয়গুলি:

Alok Verma CBI Supreme Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE