স্কুল বা স্কুলের নির্দিষ্ট দোকান থেকে বইপত্র বা পোশাক কেনার জন্য অভিভাবকদের বাধ্য করতে পারবেন না স্কুল কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘকালের এমন মৌরসিপাট্টা ছেঁটে বৃহস্পতিবার সিবিএসই কর্তৃপক্ষ এই নিয়ে একগুচ্ছ নির্দেশ জারি করায় হাঁফ ছেড়েছেন অভিভাবকেরা। বস্তুত অভিভাকদের একাংশের চাপেই এই নির্দেশিকা বলে সিবিএসই সূত্রের খবর।
কী সেই নির্দেশ?
সিবিএসই কর্তৃপক্ষ বলেছেন, ‘স্কুলের কাজ উচ্চমানের শিক্ষা দেওয়া। এর বাইরে অন্য কোনও ব্যবসা করতে পারবে না স্কুল। বই, পড়ার সরঞ্জাম, স্কুলের পোশাক, জুতো-মোজা বিক্রি— এ সব করা বোর্ডের নিয়ম বিরুদ্ধ।’
বোর্ডের নির্দেশের পর বিভিন্ন স্কুলের অবশ্য দাবি, পড়ার সরঞ্জামের মধ্যে সমমান বজায় রাখতেই তাঁরা একটি নির্দিষ্ট সংস্থা থেকে তা কিনতে বলেন। তাঁদের দাবি, অভিভাবকদের কথা ভেবেই স্কুল থেকে বই বিক্রি করা হয়। অভিনব ভারতী স্কুলের অধ্যক্ষ শ্রাবণী সামন্ত বলেন, ‘‘পুরো নির্দেশ এখনও পড়িনি। পড়ুয়াদের জিনিসের মান এক রাখার জন্যই দোকান নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়। তবে বোর্ড যা নির্দেশ দিয়েছে, আমরা তা মানব।’’ গোখেল মেমোরিয়াল গার্লস স্কুলের কর্তৃপক্ষ জানান, পোশাক কেনার জন্য ছাত্রীদের একাধিক দোকানের কথা বলা হয়। আর অভিভাবকদের সুবিধার জন্যই বিভিন্ন প্রকাশন সংস্থা নির্দিষ্ট দিনে স্কুল চত্বরে বই বিক্রি করে। বোর্ড এ সব বন্ধ করতে বললে সে ভাবেই চলা হবে।
যদিও অভিভাবকেরা বোর্ডের সিদ্ধান্তে খুশি। দক্ষিণ কলকাতার নামী সিবিএসই স্কুলের এক অভিভাবকের মন্তব্য, ‘‘ছেলে প্রতিবার নতুন ক্লাসে ওঠে আর আমরা ভয়ে থাকি। স্কুল থেকে লম্বা একট তালিকা ধরিয়ে দিয়ে বলবে এই সব পোশাক, জুতো-মোজা, খাতা-বই কিনতে হবে নির্দিষ্ট একটি দোকান থেকেই। এই কারণে কয়েক হাজার টাকা বাড়তি গলে যাচ্ছে। অথচ বাজারে তা অনেক কম দামে মিললেও কেনা যাবে না!’’
বোর্ডের এক কর্তা এ দিন জানান, পড়ুয়াদের ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (এনসিইআরটি) থেকে প্রকাশিত বই কেনার পরামর্শ দিতে বলা হয়েছে স্কুলগুলিকে। কারণ, অনেক স্কুলই এনসিইআরটি-র পাশাপাশি অন্যান্য প্রকাশনা সংস্থার বই কেনা বাধ্যতামূলক করেছে। এটা নিয়ম বহির্ভূত কাজ। বিভিন্ন স্কুলের অবশ্য অভিযোগ, এনসিইআরটি পর্যাপ্ত পরিমাণে বই না ছাপায় ঘাটতি থেকে যায়। সে জন্যই পড়ুয়াদের অন্য প্রকাশনা সংস্থার বই কিনতে বলেন তাঁরা। প্রায় একই অভিযোগ জানিয়ে অভিভাবকেরা বলেন, অনেক সময় বোর্ডের কাছে লিখিত অভিযোগ জানানোর পরে সেশনের মাঝপথেও সেই বই এসে পৌঁছয় না। অভিযোগ খতিয়ে দেখে বোর্ড এ দিন স্কুলগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে, কত বই দরকার সেই তথ্য শিক্ষাবর্ষ শুরুর আগেই অনলাইনে এনসিইআরটি-কে জানাতে হবে।
সিবিএসই-র মতোই আইসিএসই বোর্ডের অধীন স্কুলগুলির অভিভাবকেরাও দীর্ঘদিন ধরে একই অভিযোগ জানিয়ে আসছেন। যদিও এই প্রসঙ্গে আইসিএসই বোর্ডের চিফ এক্সিকিউটিভ জি অ্যারাথুন কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy