নির্মলা সীতারামন। —নিজস্ব চিত্র।
নজরে ‘একুশ।’ তাই সড়ক থেকে রেল প্রকল্প— ভোটমুখী পশ্চিমবঙ্গের নাম একাধিক বারই এল নির্মলা সীতারামনের বাজেটে। বাজেটে বঙ্গের মতোই প্রাধান্য পেয়েছে ভোটমুখী কেরল, অসম, তামিলাড়ুও।
রাজ্যে বিধানসভা ভোটের ঠিক আগে কেন্দ্রীয় বাজেটে পশ্চিমবঙ্গের ঝুলিতে বাড়তি কী আসে, তা জানতে উৎসুক ছিলেন রাজ্যবাসী। আজ বাজেট বক্তৃতা দিতে গিয়ে নির্মলার লালপেড়ে শাড়ি বেছে নেওয়ার পিছনে বঙ্গবাসীকে বার্তা দেওয়ার রাজনীতি খুঁজে পেয়েছেন অনেকে। বাজেট বক্তব্যের গোড়াতেই নির্মলা উদ্ধৃত করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে। ‘টেগোর’ নয়, ঠাকুর উচ্চারণ করে ছুঁতে চেয়েছেন বঙ্গের ভোটারদের। আর পশ্চিমবঙ্গের প্রকল্পের ঘোষণায় বারংবার টেবিল চাপড়ে হাততালি দিতে দেখা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর দেখাদেখি গোটা ট্রেজারি বেঞ্চকে। নতুন প্রকল্পের ঘোষণায় বেছে বেছে আগে নাম নিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের। বিরতি নিয়েছেন। তৃণমূল বেঞ্চের উদ্দেশে মুচকি হেসে নির্মলা ফের শুরু করেছেন তাঁর বাজেট বক্তৃতা। রাতে বাংলায় টুইট করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের বিকাশ আর সেখানকার মানুষের সুবিধার জন্য আজ প্রকাশিত বাজেটের মাধ্যমে মোদীজি ২৫ হাজার কোটি টাকার অনুদান ঘোষণা করেছেন। যার মাধ্যমে ৬৭৫ কিলোমিটার রাজপথের নির্মাণ হবে। এরই সঙ্গে বাংলা এবং অসমের চা বাগানে কর্মরত মানুষের কল্যাণের জন্য হাজার কোটি টাকাও দেওয়া হচ্ছে।’’
আজকের বাজেটে মূলত পশ্চিমবঙ্গের সড়ক ও রেল প্রকল্পের পরিকাঠামোগত উন্নতিতে জোর দেওয়া হয়েছে। বাজেটে রাজ্য পেয়েছে ৬৭৫ কিলোমিটার সড়ক। বরাদ্দ হয়েছে ৬৭৫ কোটি টাকা। গত লোকসভায় উত্তরবঙ্গে দলের সাফল্যের কথা মাথায় রেখে উত্তরবঙ্গ ও কলকাতা সংযোগকারী কলকাতা-শিলিগুড়ি সড়কের আধুনিকীকরণের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। ভোটমুখী অসমের চা-শ্রমিক বিশেষত মহিলা ও শিশুকল্যাণে বরাদ্দ হয়েছে ১ হাজার কোটি টাকা। রাজ্যের শিল্প সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে রেলের দু’টি নতুন পণ্যবাহী করিডরের মাধ্যমে রাজ্যকে জোড়ার কথা ঘোষণা হয়েছে। এর মধ্যে ইস্ট কোস্ট করিডরের মাধ্যমে খড়্গপুরের সঙ্গে দক্ষিণ ভারতের বিজয়ওয়াড়া, অন্য দিকে ইস্ট-ওয়েস্ট সাব করিডরের মাধ্যমে এক দিকে পশ্চিম ভারতের ভুসাবল থেকে খড়্গপুর হয়ে ডানকুনি। ওই করিডরের দ্বিতীয় অংশে—রাজখরসাওয়াঁ থেকে অন্ডালে যোগাযোগ বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে কেন্দ্র। সড়কের উন্নয়নের সঙ্গেই দেশে সরকারি গণপরিবহণ ব্যবস্থার উন্নতির লক্ষ্যে ১৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। রাজ্য বিজেপি নেতাদের দাবি, তারও সুফল পেতে চলেছে বঙ্গ। পাল্টা যুক্তিতে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘‘ভোটের কথা ভেবে ওই বাজেট করা হয়েছে। বড় মাপের বরাদ্দই করা হয়েছে কেবল, কিন্তু কবে এর রূপায়ণ হবে, তার দিশা নেই।’’ তৃণমূলের দাবি, ওই প্রকল্পের আগেই রাজ্যে ভোট দামামা বেজে যাবে। গত ছয় বছরে এই ঘোষণা করা যেত। তা না করে শেষবেলায় এ ধরনের ঘোষণা করা যে অর্থহীন, তা রাজ্যের মানুষ বুঝতে পারবেন।
কেরল ও তামিলনাড়ুতেও সড়ক পরিকাঠামোয় জোর দিয়ে রাজ্যবাসীর মন জয়ের চেষ্টা করেছে মোদী সরকার। তামিলনাড়ুতে তিন হাজার সড়ক নির্মাণের জন্য ৬৫ হাজার কোটি টাকা ও কেরলে ১১০০ কিমি সড়ক নির্মাণে বরাদ্দ হয়েছে ৬৫ হাজার কোটি টাকা। আর অসমে লড়াই সরকার ধরে রাখার। সড়ক পরিকাঠামো উন্নয়নে ওই রাজ্যে দেওয়া হয়েছে ১৩০০ কিমি সড়ক নির্মাণে ৩৪ হাজার কোটি টাকা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy