—প্রতীকী চিত্র।
দুঃখের কারণ ঘটলে জেলবন্দিরা প্যারোলে সাময়িক ভাবে মুক্তি পেয়ে থাকেন। তবে খুশির কারণে কেন পাবেন না? একটি মামলায় এমনটাই প্রশ্ন তুলল বম্বে হাই কোর্ট। সেই সঙ্গে এক ব্যক্তি খুশির কারণে প্যারোলে মুক্তিও দিয়েছে আদালত। ওই বন্দির পুত্র উচ্চশিক্ষার সূত্রে বিদেশে যাচ্ছেন। তাঁকে বিদায় জানাতে প্যারোলে মুক্তি পেয়েছেন তিনি।
বম্বে হাই কোর্টের বিচারপতি ভারতী ডাংরে এবং বিচারপতি মঞ্জুষা দেশপাণ্ডের বেঞ্চে মামলাটি শুনানির জন্য উঠেছিল। বিবেক শ্রীবাস্তব নামের এক ব্যক্তি আদালতে প্যারোলের জন্য আবেদন জানান। তিনি জানান, তাঁর পুত্র অস্ট্রেলিয়ায় উচ্চশিক্ষার সুযোগ পেয়েছেন। এই সময়ে তাঁর বাড়িতে গিয়ে পরিবারের পাশে থাকা জরুরি। পুত্রের পড়াশোনার খরচ জোগাতে হবে তাঁকেই। সেই সঙ্গে তিনি পুত্রকে বিদায়ও জানাতে চান তাঁর দেশ ছাড়ার আগে।
মামলাকারীর আবেদনের বিরোধিতা করে বিপক্ষ। তাদের বক্তব্য ছিল, প্যারোল যে কোনও বন্দিকে সাধারণত কোনও জরুরি পরিস্থিতিতে দেওয়া হয়। শুধুমাত্র পুত্রকে বিদায় জানাতে এবং তাঁর পড়াশোনার খরচ জোগাতে কেউ প্যারোলে মুক্তি পেতে পারেন না। বিপক্ষের এই যুক্তি বোঝা যাচ্ছে না বলে জানায় আদালত। এ প্রসঙ্গে বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ, যে কোনও বন্দিকে সাময়িক ভাবে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেওয়া যায়। বহির্জগতের সঙ্গে যাতে তাঁদের যোগাযোগ বজায় থাকে, পারিবারিক সম্পর্ক যাতে অটুট থাকে, তা নিশ্চিত করতেই এই প্যারোলে মুক্তির নিয়ম রয়েছে। বন্দি হলেও তিনি কারও না কারও বাবা, স্বামী, পুত্র কিংবা ভাই। প্যারোলে মুক্তিকে বরাবর ‘মানবিক উদ্যোগ’ হিসাবেই দেখা হয়েছে।
আদালত আরও জানিয়েছে, দুঃখের মতো খুশিও একটি আবেগ। কাছের মানুষের মৃত্যু হলে সেই দুঃখ ভাগ করে নেওয়ার জন্য বন্দিরা প্যারোলে মুক্তি পেয়ে থাকেন। তাই সুখের অনুভূতিও ভাগ করে নেওয়ার জন্য এই সাময়িক মুক্তি তাঁদের প্রাপ্য। পুত্রের সঙ্গে দেখা করার জন্য মামলাকারীকে ১০ দিনের প্যারোল দিয়েছে আদালত।
২০১২ সালের একটি খুনের মামলায় অভিযুক্ত হন মামলাকারী শ্রীবাস্তব। ২০১৮ সালে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। আপাতত তিনি যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত। পুত্র বিদেশে যাওয়ার সুযোগ পাওয়ায় এক মাসের জন্য মুক্তি চেয়েছিলেন তিনি। আদালত ১০ দিনের জন্য শর্তসাপেক্ষে তাঁকে মুক্তি দিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy