মারণখেলা: এ ভাবেই রক্ত দিয়ে নকশা করতে হয় ব্লু হোয়েলে।
নীল তিমি-র গ্রাস থেকে সদ্য বেঁচে ফিরেছেন যুবকটি। এখন মুক্ত কণ্ঠে বলছেন, ‘‘মানসিক ভাবে ভীষণ পীড়ন করে এই খেলা। চাইলেও এর মারণফাঁদ থেকে বেরনো যায় না।’’
মঙ্গলবার ভোর চারটেয়, ছুরি দিয়ে হাত কেটে ‘নীল তিমি’র চিহ্ন তৈরি করতে যাচ্ছিলেন আলেকজান্ডার নামে পুদুচেরিরর ওই যুবক। মোক্ষম সময়ে তাঁর কারাইকালের বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ এবং তাঁকে বাঁচায়।
পুলিশকর্তা বংশীধর রেড্ডির পাশে বসে আলেকজান্ডার বুধবার সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, কী ভাবে একটু একটু করে মৃত্যুর পথে টেনে নিয়ে যায় নীল তিমি। বলেছেন, ‘‘যারা অ্যাডভেঞ্চার ভালবাসে, তারাও নীল তিমির আস্তানায় এলে মনের রোগী হয়ে যায়।’’ আলেকজান্ডারের কথায়, ‘‘এটা কোনও গেম বা অ্যাপ নয়। এটা ডাউনলোড করা যায় না। ব্লু হোয়েলের অ্যাডমিন নিজে এই লিংক পাঠান কোনও এক দুর্ভাগাকে।’’ আলেকজান্ডারও দু’সপ্তাহ আগে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ মারফত এই খেলার লিংক পান। ছুটি নিয়ে নেরাভিতে দেশের বাড়িতে ফিরে নীল তিমির নেশায় বুঁদ হয়ে যান তিনি। সে নেশা এতই ভয়ানক যে, চেন্নাই ফিরে আর কাজে যোগই দেননি তিনি।
প্রথমে ব্যক্তিগত তথ্য ও ছবি দিতে হয়। সে সব হাতিয়ে আলাপচারিতা শুরু করে অ্যাডমিন। দেওয়া হয় টাস্ক। প্রতিদিন রাত দুটোর মধ্যে সেই সব টাস্ক শেষ করতে হয়। ক’দিন আগে আলেকজান্ডারকে মাঝরাতে এক সমাধিক্ষেত্রে যেতে বলা হয়েছিল। মাঝরাতে আক্কারাইভট্টম কবরখানায় গিয়ে সেলফি তুলে অনলাইনে পোস্ট করেন তিনি। অ্যাডমিনের নির্দেশে প্রতিদিন তাঁকে একা একা একটা করে ভয়ের ফিল্ম দেখতে হয়েছে। ভয়ের অনুভবটাকে একেবারে কেটে ফেলে দিতে হবে, এটাই খেলার উদ্দেশ্য।
অদ্ভুত আচার-আচরণ দেখে বিপদের গন্ধ পান তাঁর ভাই অজিত। ‘‘মনে পাহাড়প্রমাণ চাপ। কারও সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছে করত না। ঘর বন্ধ করে একা বসে থাকতাম,’’ বলেছেন আলেকজান্ডার। সময় নষ্ট না করে পুলিশে যোগাযোগ করে পরিবার। তাঁরা এসে বাঁচায় আলেকজান্ডারকে। মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলে এখন অনেকটা ধাতস্থ ওই যুবক।
মাদ্রাজ হাইকোর্ট ইতিমধ্যেই এই খেলা নিষিদ্ধ করার কথা বলেছে। বুধবার মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চহ্বাণ জানিয়েছেন, তাঁর সরকার এই খেলা নিষিদ্ধ করার প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy