গুরুকে দিয়ে শিষ্যকে আটকাতে চাইছে বিজেপি।
অণ্ণা হজারের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে একসময় অরবিন্দ কেজরীবালের উত্থান হয়েছিল। এ বার দিল্লি বিধানসভা ভোটে তাঁকে ঘায়েল করতে অণ্ণাকে হাতিয়ার করতে চাইছে মোদীর দল। বিজেপি সূত্রে খবর, অণ্ণার সঙ্গে আলোচনাও শুরু হয়েছে। তিনি রাজি হলে ভোটের সময় কেজরীবালের বিরুদ্ধে তাঁকে ব্যবহার করা হবে। দিল্লিতে কোনও দলই সরকার গড়তে না পারায় বিধানসভা ভঙ্গ করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, ফেব্রুয়ারির গোড়াতেই দিল্লিতে ভোট। রাজনৈতিক দলগুলির হাতে সময় মাত্র দু’মাস। গত বছর বিধানসভা ভোটে বিজেপি সব থেকে বড় দল হলেও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। কংগ্রেসের সমর্থনে সরকার গড়লেও মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেন কেজরীবাল। লোকসভায় সাতটি আসন বিজেপি জিতেছে ঠিকই, তবে ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলছেন কেজরীবাল। এ বার বিধানসভা ভোটে সেই ‘কেজরীবাল কাঁটা’ দূর করতে মরিয়া বিজেপি। সে জন্য তাঁর ‘গুরু’ অণ্ণাকে টেনে নির্বাচনে আম আদমি পার্টিকে বধ করতে চাইছে তারা।
ক’দিন আগেই আম আদমি পার্টির অশ্বিনী উপাধ্যায় বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। অশ্বিনী জানান, “অণ্ণা কোনও দিনই চাননি কেজরীবাল রাজনীতিতে যোগ দেন। অণ্ণা আন্দোলনের সাফল্যকে পুঁজি করেই কেজরীবাল আসলে নিজের ক্ষমতার লোভ চরিতার্থ করতে চেয়েছেন।” ঘনিষ্ঠ মহলে অণ্ণা বলেছেন, কেজরীবালকে তিনি পরামর্শ দিয়েছিলেন, লোকসভা নির্বাচনে না লড়ে শুধু দিল্লির উপরেই জোর দিতে। কিন্তু কেজরীবাল দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়ে লোকসভায় বারাণসীতে গিয়ে মোদীর বিরুদ্ধে লড়েছিলেন। সম্প্রতি মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানা বিধানসভার নির্বাচনে লড়েননি কেজরীবাল। কিন্তু দিল্লিতে বিধানসভা নির্বাচন আসতেই তিনি সক্রিয় হয়েছেন। বিজেপির আশঙ্কা, যে ভাবে লোকসভা নির্বাচনে কিছু আসনে তাদের টক্কর দিয়েছিল কেজরীবাল, তাতে স্পষ্ট, দিল্লিতে আপের জনপ্রিয়তা রয়েছে। মধ্যবিত্তের মোহভঙ্গ হলেও নিম্নবিত্তরা আজও ভরসা রাখেন কেজরীবালের উপর।
মোদীর নেতৃত্বে সেই ভোটব্যাঙ্কেও থাবা বসাতে চায় বিজেপি। প্রধানমন্ত্রীর ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’ শুরু করেছেন, সেটি নিয়ে বিজেপির দিল্লি নেতৃত্ব আরও বেশি করে প্রচার করছেন। কারণ, সেই অভিযানে শরিক হয়ে আম আদমি পার্টির নির্বাচনী প্রতীক ‘ঝাড়ু’ হাতে বিজেপি কেজরীবালের ভোটব্যাঙ্কও কেড়ে নিতে চাইছে। গত কাল সংসদীয় মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডু দলের সব সাংসদকে নির্দেশ দিয়েছেন, সংসদ চলাকালীন সন্ধ্যায় অন্তত তিন ঘন্টা দিল্লির নির্বাচনের জন্য তাঁদের দিতে হবে। এর পরেও কেজরীবালের প্রতি মানুষের মোহ যাতে আরও ভঙ্গ হয়, সেই আশা নিয়ে অণ্ণাকেও আসরে নামাতে চাইছে বিজেপি। তারা মনে করছে, দিল্লি বিধানসভায় অরবিন্দ কেজরীবালের মোকাবিলায় অণ্ণা হজারে তুরুপের তাস হতে পারেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy