অখিলেশ-রাহুলের জোটের হাওয়া কেড়ে নিতে এখন মায়াবতীর গুরুত্ব বাড়ানোর চেষ্টা করছে নরেন্দ্র মোদীর দল।
উত্তরপ্রদেশে প্রথম দু’দফার ভোটে বিজেপির লড়াই হয়েছে অখিলেশ-রাহুল জোটের সঙ্গে। গোড়া থেকেই বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ বলে আসছিলেন, সমাজবাদী পার্টিই তাঁদের প্রধান প্রতিপক্ষ। এখন সেই অমিতই বলছেন, উত্তরপ্রদেশে ভোটের অন্তত কয়েকটি পর্যায়ে মায়াবতীর সঙ্গেই মূল লড়াই বিজেপির। বিজেপি নেতা বেঙ্কাইয়া নায়ডু জানিয়েছেন, মায়াবতী যে ভাবে ধর্মের ভিত্তিতে ভোট দেওয়ার কথা প্রকাশ্যে বলছেন, তার বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে নালিশ জানাবেন তাঁরা।
সমাজবাদী পার্টিকে ‘একতরফা’ ভোট না দিয়ে বিএসপিকে তা দেওয়ার জন্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কাছে মায়াবতীর আবেদন নতুন নয়। ধর্মের ভিত্তিতে ভোট না চাওয়ার ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের হুঁশিয়ারির একদিন পরেই মায়াবতী সরাসরি সংখ্যালঘুদের ভোট দেওয়ার কথা বলেছেন। প্রশ্ন হল, মায়াবতী যখন সেই একই কথা বলছেন, তখন বিজেপি কেন মাঝপথে কৌশল বদলে তাঁকে তেড়েফুঁড়ে আক্রমণ করছে?
বিজেপির শীর্ষ সূত্রের মতে, মায়াবতী খুব ভাল ফল করলে বিজেপিরই লোকসান। কিন্তু তিনি যদি সংখ্যালঘু ভোটে থাবা বসিয়ে অখিলেশ ও রাহুল গাঁধীর জোটকে দুর্বল করতে পারেন, তা হলেই লাভ বিজেপির। তাই মায়াবতীকে গুরুত্ব দিয়ে বিজেপি আসলে অখিলেশ-রাহুল জোটকে দুর্বল করে নিজের আখের গোছাতে চাইছে।
গত কাল উত্তরপ্রদেশে যে অঞ্চলে ভোট হয়েছে, সেখানেই সব থেকে বেশি সংখ্যালঘুদের প্রভাব ছিল। বিজেপির নিজস্ব বিশ্লেষণ হল, যে পরিমাণ সংখ্যালঘু ভোট দিয়েছেন, সেই তুলনায় হিন্দুরা ভোট দেননি। বিজেপিকে মনে করছে, প্রথম দফার নির্বাচনেও জাঠেরা তাদের ভোট দেননি। এই পরিস্থিতিতে পরের পর্বগুলিতে জোটকে মোকাবিলা করতে হলে মায়াবতীই ভরসা। যদিও সরকার গঠনের পরিস্থিতি হলে একজোট হওয়ার জন্য পর্দার আড়ালে মায়াবতীর সঙ্গে বোঝাপড়া করে রেখেছে বিজেপি। অখিলেশ এখন প্রচার সভায় সেই ‘ভয়’ই পাওয়াচ্ছেন সংখ্যালঘু ভোটারদের। বলছেন, মায়াবতীকে ভোট দেওয়ার মানে সেটি বিজেপির ঝুলিতেই যাওয়া।
যে পাঁচ রাজ্যে নির্বাচন, তার মধ্যে পঞ্জাবে বিজেপি যে ধরাশায়ী হচ্ছে, সে কথা দলের সব নেতাই কবুল করছেন। খোদ অমিত শাহও মনে করছেন, পঞ্জাবে কেজরীবালের সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু কেজরীকে প্রথম দিকে অবজ্ঞা করেছিল
বিজেপি। এমনকী ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহরাও উপেক্ষা করেছিলেন তাঁকে। পরে কৌশল বদলে শেষ বাজারে নরেন্দ্র মোদীও তেড়েফুঁড়ে কেজরীবালকে আক্রমণ করতে শুরু করেন। যাতে কোনও ভাবে কেজরীবালকে গুরুত্ব দিয়ে কংগ্রেসের ভোট কমানো যায়।
উত্তরপ্রদেশে প্রথম দু’দফার পর থেকেই এখন কৌশল বদলানো শুরু করেছে বিজেপি। সে রাজ্যে এখনও পাঁচ দফার ভোট বাকি। প্রতিটি দফাতেই কমবেশি সংখ্যালঘু ভোট রয়েছে। বিজেপি সংখ্যালঘু ভোটের প্রত্যাশা করে না। কিন্তু রাহুল-অখিলেশের দাপট কমাতে অন্তত মায়াবতী যাতে বিজেপির পরিত্রাতা হয়ে উঠতে পারেন, সেই চেষ্টাই করছে নরেন্দ্র মোদীর দল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy