শীতকালীন অধিবেশন শুরুর দিনে সংসদে অমিত শাহ। ছবি: পিটিআই।
অধিবেশন শুরু হতে তখনও মিনিট দুই বাকি। হঠাৎই প্রবল হাততালিতে ফেটে পড়ল শাসক শিবির। প্রথম বার রাজ্যসভায় প্রবেশ করলেন নরেন্দ্র মোদীর সেনাপতি অমিত শাহ।
সংখ্যার হিসেবে রাজ্যসভায় এখনও দুর্বল বিজেপি-জোট। মোদীর চলতি জমানাতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়াও দুষ্কর। তার উপরে শিবসেনার মতো শরিক দলও কথায় কথায় বেগ দেয়। গুজরাতের ভোট প্রচারেও খোদ প্রধানমন্ত্রী বারবার বলেছেন, রাজ্যসভায় সংখ্যা না থাকায় অনেক বিল আটকে যাচ্ছে।
এমন এক পরিস্থিতিতে সংসদের উচ্চকক্ষে বিজেপি সভাপতির প্রবেশ। আর আজ থেকেই ‘দাপট’ দেখানো শুরু করল বিজেপি। সেটি টের পেয়েই আরও মুখর হল একজোট বিরোধী। শরদ যাদবকে বরখাস্ত করা আর মনমোহন সিংহকে জড়িয়ে মোদীর ‘পাক-ছক’-এর অভিযোগ তোলা নিয়ে হল্লা করে দু’বার অচল করল সংসদ। তাঁরা ক্ষমা চাইতে বললেন মোদীকে। অমিতের উপস্থিতিতেই।
আরও পড়ুন: গাইড কীসের, আমিই সব, নয়া সুর দিলীপের
অভিবাদন কুড়িয়েই রাজ্যসভার প্রথম সারিতে বসে পড়লেন অমিত। প্রধানমন্ত্রীও এ দিন রাজ্যসভায় ছিলেন কিছু ক্ষণ। অমিতের আসন তাঁর পাশেই। উভয়ের চোখাচোখি হল, কিন্তু কথা হলনা দু’জনের। অমিত কথা বললেন না অন্য কারও সঙ্গেও। নিজের নোটপ্যাডে কিছু একটা তালিকা তৈরি করলেন। উঁকিঝুঁকি মেরে বিজেপির কিছু নেতা বোঝার চেষ্টা করলেন, এটি কি গুজরাতের মন্ত্রীর তালিকা? অমিতকে দেখে যতই হাততালি দিন দলের সাংসদেরা, মনে ভয়ও আছে। কারণ, খোদ প্রধানমন্ত্রীই আগে শাসানি দিয়ে রেখেছেন, সংসদে আর ফাঁকি মারা যাবে না। কারণ, অমিত থাকছেন সংসদে।
বিরোধীদের কাছে সংখ্যা আছে। কিন্তু সীতারাম ইয়েচুরি, মায়াবতী, শরদ যাদবের মতো মুখর নেতারা আর রাজ্যসভায় নেই। আজ সকাল থেকেই নতুন চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডু কড়া হাতে রাজ্যসভা পরিচালনা করতে থাকেন। যা দেখে বিরোধীদের অনেকেই বলছেন, এ বারে তো আর কোনও কথাই বলতে দেওয়া হবে না। শরদ যাদবকেও বরখাস্ত করা হয়েছে। দিল্লি হাইকোর্ট যার বিরুদ্ধে অন্তর্বতী স্থগিতাদেশ দিতেও অস্বীকার করেছে এ দিন। রাজ্যসভায় কংগ্রেসের গুলাম নবি আজাদ থেকে সমাজবাদী পার্টির নরেশ অগ্রবাল শরদের সাংসদ পদ খারিজের প্রতিবাদ করলেও অনড় বেঙ্কাইয়ার সাফ কথা, চেয়ারের সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনও আলোচনা নয়।
গুজরাতের ভোট প্রচারে মোদী প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের সঙ্গে মিলে ষড়যন্ত্রের যে অভিযোগ এনেছেন, তা নিয়ে চড়া গলায় প্রতিবাদ জানাতে থাকেন বিরোধীরা। তাঁদের দাবি, প্রধানমন্ত্রীকে এর প্রমাণ দিতে হবে। আর তা না পারলে ক্ষমা চাইতে হবে। এনডিএ শরিক শিবসেনার সঞ্জয় রাউতও পরে বলেন, প্রধানমন্ত্রী যখন এত বড় অভিযোগ করছেন, নিশ্চয়ই তার প্রমাণ আছে। সেটি সামনে আনুন। পরিস্থিতি সামলাতে এ দিন সন্ধেতেই এনডিএ শরিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বিজেপি নেতৃত্ব। সেখানে স্থির হয়, প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে কংগ্রেস যে দাবি তুলেছে তা মানার কোনও প্রশ্নই নেই। উল্টে সরকারের নীতির বিরুদ্ধে গিয়ে পাক নেতা-কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করার জন্য মনমোহন ও কংগ্রেসর উপরে চাপ সৃষ্টি করা হবে। সরকারের ঘোষিত অবস্থানই হল, সন্ত্রাস বন্ধ না করলে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা নয়। এর বিরুদ্ধাচরণের জন্য ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে একজোটে সরব হবে এনডিএ-র শরিকরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy