কংগ্রেস-বিজেপির রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে নয়া মাত্রা। কংগ্রেসের নির্বাচনী প্রতীক ‘হাত’-ই এ বার ছিনিয়ে নিতে চায় কেন্দ্রের শাসক দল।
বিজেপি-র অভিযোগ, ভোটের দিন বুথের মধ্যে হাতের পাঞ্জা দেখিয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করে কংগ্রেস প্রার্থী-এজেন্টরা। তাই নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়ে বিজেপি নেতৃত্বের আবেদন, শরীরের অঙ্গ হল হাত। আর তা কংগ্রেসের প্রতীক। অন্যান্য দলের প্রতীক চিহ্ন বুথের বাইরে রেখে এলেও, হাত তো আর ছেড়ে আসা যায় না। সেই সুযোগ নিয়ে কংগ্রেস ভোটারদের প্রভাবিত করছে বলে অভিযোগে সরব হয়েছেন দিল্লির বিজেপি নেতা অশ্বিনী উপাধ্যায়।
সিপিএমের কাস্তে-হাতুড়ি কিংবা বিএসপির হাতি— বুথের আশে পাশে সব বারণ। ঘাস ফুল থেকে পদ্ম ফুল-আসলই হোক বা প্রতীক, ভোট কেন্দ্রের ১০০ মিটার দূরেই রেখে আসতে হবে। তখন কংগ্রেসের জন্য বাড়তি ছাড় কেন— প্রশ্ন তুলেছেন অশ্বিনী। ভোটের দিন জামায় পদ্ম ফুল লাগিয়ে বক্তব্য রাখায় প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ জানিয়ে কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিল কংগ্রেস। আর এখন ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে প্রতীক নিয়ে প্রধান বিরোধী দলকে জমি ছাড়তে নারাজ বিজেপি।
এই মুহূর্তে দেশে ৭ টি জাতীয় দল রয়েছে। আর আঞ্চলিক দলের সংখ্যা ৫০-এর কাছাকাছি। ঘটনাচক্রে কোনও দলেরই প্রতীক চিহ্ন কংগ্রেসের হাতের মতো শরীরের অঙ্গ নয়। ফলে সুর চড়ানোর সুযোগ পেয়েছে বিজেপি। বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেস প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও, দলের এক নেতার কথায়, ‘‘তুচ্ছ বিষয় নিয়ে যখন শাসক শিবির মাথা ঘামাচ্ছে, তখন বোঝা যাচ্ছে বিজেপির মনোবল কোথায় নেমেছে!’’ তাঁর মন্তব্য, ‘‘মোদী শিবির যে কংগ্রেসের থেকে কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে চলেছে, তা বিলক্ষণ বুঝতে পারছেন বিজেপি নেতারা।’’
বিজেপি অবশ্য যুক্তি দেখাচ্ছে নিয়মের। নির্বাচন কমিশনকে লেখা চিঠিতে অশ্বিনী জানিয়েছেন, মানুষের শরীরের একটি অঙ্গ হল হাত। আর সেই হাতের পাঞ্জা হল কংগ্রেসের প্রতীক। ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে ভোটারদের কৌশলে হাতের পাঞ্জা দেখিয়ে প্রভাবিত করে থাকে বুথে বসে থাকা কংগ্রেসের এজেন্টরা। শুধু লিখিত অভিযোগই নয়, অভিযোগের স্বপক্ষে প্রমাণও দেখিয়েছেন তিনি। অশ্বিনীর কথায়, ২০০৭ সালে দিল্লি পুরসভার নির্বাচনে তৎকালীন দিল্লি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি রামবাবু শর্মা ও তাঁর সমর্থকরা নিজেদের হাতের পাঞ্জাকে তুলে ধরে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছিলেন। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় পরে রামবাবুকে সাবধানও করেছিল নির্বাচন কমিশন।
বিজেপি যে অভিযোগ তুলেছে তা সরাসরি উড়িয়ে দিতে পারছে না কমিশনও। কারণ কমিশনের ১৩০(১) ধারায় বলা হয়েছে যে বুথের মধ্যে নির্বাচন সংক্রান্ত কোনও প্রতীক চিহ্ন বা দৃষ্টি আকর্ষণ জাতীয় কিছু করা যাবে না। কিন্তু অশ্বিনীর অভিযোগ, বহু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে ভোটের দিনে কংগ্রেসের প্রার্থী, সমর্থক বা বুথে বসা এজেন্টরা কোন চিহ্নে ভোট দিতে হবে— তা স্রেফ হাত নাড়িয়েই বুঝিয়ে দিচ্ছেন। বিজেপি নেতার মতে, এর মাধ্যমে কমিশনের আর্দশ আচরণবিধি লঙ্ঘন করা হচ্ছে। তাই অবিলম্বে কংগ্রেসের হাত চিহ্ন বাতিল করার দাবি তুলেছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy