ছবিতে মনমোহন সিংহের ভূমিকায় অনুপম খের।
নায়ক-নায়িকারা নন, পরিচালক-পরিবেশক নন। দু’টি বলিউডি ছবির প্রচারের দায়িত্ব কার্যত কাঁধে তুলে নিয়েছেন বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরাই।
‘দ্য অ্যাক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার’ এবং ‘উরি, দ্য সার্জিকাল স্ট্রাইক’। ভোট-মরসুমে আজ একই দিনে মুক্তি পেয়েছে সাম্প্রতিক রাজনীতির সঙ্গে ওতপ্রোত জড়িত এই দু’টি ছবি। এবং আজ দিল্লিতে বিজেপির মহাসম্মেলনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থেকে নেতা— পরিচিত মুখ দেখলেই তাঁদের বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘দু’টো ছবিই সিনেমা হলে গিয়ে দেখুন। পরিবারকেও নিয়ে যান।’’ সেই সঙ্গে তাঁরা বুঝিয়েছেন, পরিবারকে নিয়ে সিনেমা দেখার সমস্ত সুবিধেই করে দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী! একশো টাকার নীচের সিনেমার টিকিটের জিএসটি ১২ শতাংশে নেমে এসেছে। আর একশো টাকার উপরের টিকিটের জিএসটি দাঁড়িয়েছে ১৮ শতাংশে।
আজ মুক্তি পেলেও কাল বিভিন্ন শহরের মতো রাজধানীতেও প্রিমিয়ার শো হয়েছে দু’টি ছবির। দিল্লিতে স্বভাবতই আগ্রহ বেশি ছিল ‘প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী’-কে ঘিরে। দিল্লির কনট প্লেসের প্রিমিয়ারে ছিলেন মীনাক্ষি লেখি, সাইনা এনসি-র মতো বিজেপি নেত্রীরা। আজ ইনদওরে ঢাকঢোল পিটিয়ে ছবি দেখতে এসেছেন ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার সদস্যরা।
আরও পড়ুন: বদলি নিয়ে কামান দেগে ইস্তফা বর্মার
তবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে কাউকে ছবি দেখতে বলা এক ব্যাপার। সিনেমা হিসেবে কেমন লাগল ‘দ্য অ্যাক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার’-কে?
সেই প্রশ্নের উত্তরে কিন্তু রাজধানীর বিজেপি নেতাদের মধ্যেই কেউ ‘থাম্বস ডাউন’ দেখিয়েছেন। কেউ হেসে এড়িয়েছেন। কেউ বলেছেন, ‘‘নিজেই দেখে নিন না!’’ অনুপম খের অভিনীত ছবিটিকে ব্যবহার করে কংগ্রেসের পরিবারতন্ত্রকে ফালাফালা করতে চাইছিল বিজেপি। কিন্তু নরেন্দ্র মোদীর দলের অনেক নেতাই মনে করছেন, ছবিটি আদ্যন্ত নিরাশাজনক। মনমোহনের চরিত্রকেই সেখানে বড় করে দেখানো হয়েছে। তাতে বিজেপির আখেরে লাভ কিছু হয়নি।
ছবির ট্রেলারে দেখানো হয়েছিল, মনমোহন সিংহকে সনিয়া গাঁধী বলছেন, ‘‘এত দুর্নীতির মধ্যে রাহুল কী ভাবে দায়িত্ব নেবে?’’ আবার রাহুল কুর্সিতে বসার আগে পাকিস্তানের সঙ্গে শান্তি-প্রক্রিয়াতেও বাধা দিচ্ছেন তিনি। ট্রেলার দেখে কংগ্রেসের ছোট-মাঝারি নেতারা তেড়েফুঁড়ে ওঠেন। তখন কোর গ্রুপের বৈঠক ডেকে রাহুল স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তিনি ব্যক্তিগত ভাবে সিনেমার বিষয়বস্তু নিয়ে হল্লা করার বিরুদ্ধে। কংগ্রেস সভাপতির মত হল, সাম্প্রতিক অতীতে জরুরি অবস্থা নিয়েও সিনেমা বানানো হয়েছে। কিন্তু তার গুণগত মান এতটাই খারাপ ছিল যে, ছবি কবে মুক্তি পেয়েছে আবার কবে উঠে গিয়েছে— তা নিয়ে জনতা মাথাই ঘামায়নি। তাই বিজেপির প্রচারের ফাঁদে পা না-দিয়ে বিতর্ক এড়াতে হবে। পঞ্জাবের এক কংগ্রেস নেতা জনস্বার্থ মামলা করলেও হাইকম্যান্ডের নির্দেশে তা প্রত্যাহার করে নেন। কলকাতায় আজ ‘মনমোহন-চিত্রের’ মুক্তির দিনে বিক্ষোভ হয়েছে ঠিকই। কিন্তু ‘টিম রাহুল’-এর অবস্থান স্পষ্ট— সরাসরি সিনেমা বা তার বিষয়বস্তুকে চ্যালেঞ্জ করার দরকারই নেই। বরং একাধিক চলচ্চিত্র সমালোচক এই ছবিকে কত নম্বর দিয়েছেন, সেটাই তুলে ধরা হোক। তাতেই স্পষ্ট হয়ে যাবে, কী ভাবে সাড়া ফেলতে ব্যর্থ হয়েছে ‘দ্য অ্যাক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার’!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy