—ফাইল চিত্র।
বরমবাবার মেলা হচ্ছে না এই বছর। এই মেলার জন্য মুখিয়ে থাকেন বরাক উপত্যকার মানুষ। চা জনগোষ্ঠীর উপাস্যদেবতা হলেও এখন বরমবাবার মন্দিরে মাথা ঠেকান বাঙালি, মণিপুরি, ডিমাসা সবাই। ওই মন্দির ও বিশেষ পূজার্চনাকে ঘিরেই রাস পূর্ণিমায় তিন দিনের মেলা বসে।
কাছাড়ের জেলা প্রশাসন ওই মেলা আয়োজনের আবেদন নাকচ করে দিয়েছে। তবে পূজার্চনায় আপত্তি নেই। বরমবাবার মন্দির পরিচালন সমিতির সভাপতি ডিএন সিংহ জানিয়েছেন, ৩০ নভেম্বর জলাভিষেক, পূজা, পাঠ-প্রবচন যথারীতি হবে। করোনা বিধি মেনে মানুষ এতে অংশ নিতে পারবেন।
শিলচর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে শিলকুড়িতে রয়েছে বরমবাবার মন্দির৷ ১৮৫৫ সালে বরাক উপত্যকায় চা বাগান গড়ে ওঠে৷ শিলকুড়ি বাগানে প্রথম চা গাছ লাগানো হয় ১৮৬০-এ৷ অন্যান্য বাগানের মতো এখানেও উত্তরপ্রদেশ, বিহার প্রভৃতি রাজ্য থেকে শ্রমিকদের নিয়ে আসা হয়৷ কথিত রয়েছে, উত্তরপ্রদেশের গাজিপুর থেকে বাবার হাত ধরে এসেছিলেন লংটুরাম নামে এক শিশুও৷ ব্রাহ্মণসন্তান বলে তাকে বরম বলে ডাকা হতো৷ তিনি অল্প বয়সে ‘সিদ্ধিলাভ’ করেন৷ চা শ্রমিকরা তাঁকে দেবতা বলেই মনে করতেন৷ তখন ব্রিটিশ মালিকরা চা শ্রমিকদের অকথ্য নির্যাতন করতেন৷ লংটুরাম ভক্তদের যন্ত্রণা সইতে পারছিলেন না৷ এক দিন প্রতিবাদ করায় ব্রিটিশদের কাছে চরম অপদস্থ হতে হয় তাঁকে৷ ওই অপমানে তিনি বাগানের ভেতরে একটি বটগাছের তলায় স্বেচ্ছা সমাধিস্থ হন৷ সেই জায়গাতেই বরমবাবার পূজা শুরু করেন শ্রমিকরা৷
১৯৪২ সালে শিলকুড়ি বাগান কর্তৃপক্ষ এই পূজা নিয়ে সভা ডাকেন৷ স্থির হয়, প্রতি বছর রাস পূর্ণিমায় তিন দিনের মেলা হবে৷ সে থেকেই মেলা বসছে৷ সভাপতি পদাধিকার বলে বাগান ম্যানেজার, সম্পাদক বাগানের বড়বাবু৷
এ বারই ব্যতিক্রম৷ তবে বরমবাবার মন্দিরের পুরোহিত জওহরলাল পাণ্ডের আশঙ্কা, মেলা না-হলেও ভক্ত সমাগম কম হবে না৷ অন্য বছর তিন দিনে লক্ষাধিক মানুষ আসেন বলে সমস্যা হয় না৷ এ বার এক দিনে তা সামলাতে হবে৷ সে সব মাথায় রেখেই প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশকর্তারা৷ তাঁদের কথায়, মানুষের আবেগ, করোনার প্রকোপ, নিরাপত্তা সবই খেয়াল রাখা হবে৷
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy