প্রতীকী ছবি
সড়ক দুর্ঘটনার খবর প্রায় প্রতি দিনই সংবাদপত্রের অনেকটা জায়গা দখল করে নেয়। একটু ভাল করে দেখলেই বোঝা যায়, এই দুর্ঘটনাগুলোর বেশির ভাগই ঘটে অসচেতনতার কারণে। কেন্দ্রীয় পরিবহণ মন্ত্রকের একটি রিপোর্ট বলছে, প্রতি দিন যে পরিমাণ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে, তার মধ্যে ২৫ শতাংশই বাইক দুর্ঘটনা। সড়ক দুর্ঘটনা ঠেকাতে প্রশাসনের তরফে নানা কর্মসূচি নেওয়া হয় বছরভর। বাইক চালানোর সময় চালক ও আরোহী সকলের মাথাতেই যেন হেলমেট থাকে সে ব্যাপারে প্রচার চলে নিয়মিত। অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও এখনও হেলমেটহীন বাইকআরোহী দেখা যায় আকছার। ২০১৫ সালের একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছিল ভারতে দেড় লক্ষ মানুষ প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান।
আশপাশের পরিস্থিতিটা দেখেই টনক নড়েছিল রোহিত পাতসকরের। ১৮ বছরের রোহিত ঔরঙ্গাবাদের বাসিন্দা। চোখের সামনে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ঘটতে দেখেছিলেন তিনি। কিছু দিন আগেই ঔরঙ্গাবাদের জানলা রোড দিয়ে যাওয়ার সময় মারাত্মক বাইক দুর্ঘটনায় দু’জনের মৃত্যু হয়। তাঁদের কারও মাথাতেই হেলমেট ছিল না। ভাবনটা এর পর থেকেই দানা বাঁধতে থাকে রোহিতের। বানিয়ে ফেললেন এক অভিনব হেলমেট।
‘‘আমার ভাবনা খুব পরিষ্কার ছিল। আমি চেয়েছিলাম এমন হেলমেট বানাতে, যা মাথায় না রাখলে বাইক চালুই হবে না’’— বললেন রোহিত।
কী ভাবে কাজ করে এই হেলমেট? রোহিতের হেলমেটে একটি ট্রান্সমিটার লাগানো রয়েছে। আরোহী হেলমেট পরলেই ট্রান্সমিটার থেকে ইনফ্রারেড সঙ্কেত দেবে বাইকের ইগনিশনে। ট্রান্সমিটারটির মধ্যে রয়েছে ছোট একটি ব্যাটারি। যখন চালক হেলমেটটি পরবেন একমাত্র তখনই হেলমেটের মধ্যে থাকা সুইচটি অন হবে। এর থেকে সিগন্যাল গ্রহণ করবে বাইকে থাকা রিসিভার। রিসিভার ইনফ্রারেড সিগন্যাল গ্রহণ করার পরই বাইকের ইগনিশন সিস্টেম বাইকটি চালু করতে পারবে। ১৫ সেকেণ্ডের জন্য হেলমেট খুলে রাখলেই সিগনাল পাঠানো বন্ধ করবে ট্রান্সমিটার। সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ হবে বাইক।
আরও পড়ুন: সূর্যের আলোয় চলবে বাইক, নতুন আবিষ্কারে চমকে দিল ১৩ বছরের বালক
মহারাষ্ট্রের ঔরঙ্গাবাদের ইন্দো-জার্মান টুল রুম (আইজিটি রুম)-এর ছাত্র রোহিত। এমন অভিনব স্বয়ংক্রিয় হেলমেট বানাতে গিয়ে ১৫০ বার ব্যর্থ হয়েছেন রোহিত। কত খরচ হয়েছে এই হেলমেট বানাতে? “মাত্র ৩০০ টাকাতেই এই হেলমেট বানিয়েছি আমি”— বললেন রোহিত।
তবে এখনও এই স্বয়ংক্রিয় হেলমেট বাণিজ্যিক ভাবে বাজারে আসেনি। রোহিত জানালেন, ঔরঙ্গাবাদ পুলিশ কমিশনার অমিতেশ কুমারকে দেখিয়েছেন তাঁর এই উদ্ভাবন। রোহিতের হেলমেট দেখে অত্যন্ত খুশি অমিতেশ বলেন, “আশা করছি ভবিষ্যতে রোহিতের এই উদ্ভাবন অনেক মানুষের প্রাণ বাঁচাবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy