আয়কর দফতরের আতসকাচের তলায় এ বার লোকসভার ৭ জন সাংসদ ও বিভিন্ন রাজ্যের ৯৮ জন বিধায়ক। ভোটে জেতার পরই তাঁদের ফুলে ফেঁপে ওঠা বিষয়সম্পত্তি দেখে আয়কর কর্তাদের সন্দেহ হয়েছে। শুরু হয়েছে তদন্ত।
আয়কর দফতর আজ সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছে, মঙ্গলবারই এই রাজনৈতিক নেতাদের নামধাম মুখ বন্ধ খামে আদালতে জমা করা হবে।
এই খবরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে রাজনৈতিক শিবিরে। অনেকেই জানতে চান, তাঁদের নাম তালিকায় রয়েছে কি না। আয়কর দফতর কোর্টকে জানিয়েছে, আরও ৯ জন লোকসভা সাংসদ, ১১ জন রাজ্যসভার সাংসদ এবং ৪২ জন বিধায়কও তাঁদের সন্দেহের তালিকায় রয়েছেন। তাঁদের আয়, বিষয়সম্পত্তি নিয়ে প্রাথমিক সমীক্ষা চলছে।
খবর ছড়িয়ে পড়তেই অনেক সাংসদ-বিধায়ক অর্থ মন্ত্রক থেকে আয়কর দফতরে খোঁজখবর করেছেন। কিন্তু আয়কর কর্তাদের বক্তব্য, শীর্ষ আদালতেই তাঁরা এই গোপন তথ্য জানাবেন। আর সরকারি ভাবে কেউ এ বিষয়ে মুখ খুলতে না চাইলেও সাংসদদের যুক্তি, অনেক সময়েই জমি-বাড়ির দাম বেড়ে যাওয়ায় সম্পত্তির মূল্য বেড়ে যায়। তার মানে এই নয় যে ভোটে জেতার পরে সম্পত্তি লাফিয়ে বেড়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রকে নির্দেশ দিয়েছিল, যে সব সাংসদ-বিধায়কের আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তি রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তা জানাতে হবে। ‘লোক প্রহরী’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে অভিযোগ তোলে, ২০০৯ ও ২০১৪, দু’টি লোকসভা ভোটে প্রার্থী হওয়ার সময় নির্বাচন কমিশনে জমা হলফনামা থেকেই দেখা যাচ্ছে, অন্তত ১১৩ জন সাংসদ নিজেদের সামাজিক কর্মী বা গৃহবধূ হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। অথচ পাঁচ বছর পরে দেখা যাচ্ছে, তাঁদের অনেকের সম্পত্তি ১০ গুণ বেড়ে গিয়েছে।
বিচারপতি জে চেলামেশ্বরের বেঞ্চের বক্তব্য ছিল, সম্পত্তির পরিমাণ আইনি পথে বেড়েছে কি না, আয়ের উৎসই বা কী— তার তদন্ত হওয়া দরকার। কেন্দ্রের যুক্তি ছিল, সকলের সম্পত্তি নিয়ে তদন্ত না হলেও যে সব ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট তথ্য মেলে বা সন্দেহ হয়, সেখানে অবশ্যই তদন্ত করা হয়। আদালত অবশ্য সেই যুক্তিতে সন্তুষ্ট হয়নি। বিচারপতিরা নির্দেশ দেন, কোন ক্ষেত্রে তদন্তে কী মিলেছে, তার বিশদ তথ্য আদালতে জমা দেওয়া হোক।
বিচারপতি চেলামেশ্বরের প্রশ্ন ছিল, নেতারা নির্বাচন কমিশনের কাছে হলফনামায় সম্পত্তির যে হিসেব দিচ্ছেন এবং আয়কর রিটার্ন ফাইলের সময় যে তথ্য দিচ্ছেন, তার মধ্যে সঙ্গতি রয়েছে কি না? এই বিষয়ে কোনও তদন্ত হয়েছে কি না? মোদী সরকার অবশ্য তার কোনও নির্দিষ্ট উত্তর এখনও দেয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy