Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

টেলিভিশনে বিজ্ঞাপনের দৌড়ে সবাইকে টপকে গেল বিজেপি

বহু পিছিয়ে ভিডিয়ো স্ট্রিমিং জগতে দুই জনপ্রিয় অ্যাপ। নব্যদের কথা ছেড়েই দিন, শীতকালের বা কাটাছেঁড়ার চিরকালীন ভরসা ক্রিম কিংবা জনপ্রিয় দাঁতের পেস্ট?

বিজ্ঞাপনে এখন এগিয়ে বিজেপিই। প্রতীকী ছবি।

বিজ্ঞাপনে এখন এগিয়ে বিজেপিই। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:১৩
Share: Save:

অজয় দেবগণ সকাল-বিকেল যে পান মশলাটি ভারতবাসীকে খেতে বলছেন, আপাতত পিছনের সারিতে সেটি। বহু পিছিয়ে ভিডিয়ো স্ট্রিমিং জগতে দুই জনপ্রিয় অ্যাপ। নব্যদের কথা ছেড়েই দিন, শীতকালের বা কাটাছেঁড়ার চিরকালীন ভরসা ক্রিম কিংবা জনপ্রিয় দাঁতের পেস্ট?

টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন দেওয়ার দৌড়ে আপাতত এরা সবাই ঢে়র পিছিয়ে। বিজ্ঞাপনদাতাদের তালিকায় প্রথম নামটি এখন ভারতীয় জনতা পার্টির!

মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, তেলঙ্গানা, ছত্তীসগঢ় এবং মিজোরাম— এই পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোট ঘিরে সাম্প্রতিক (১০-১৬ নভেম্বর) সমীক্ষা রিপোর্টে ‘ব্রডকাস্ট অডিয়েন্স রিসার্চ কাউন্সিল’ (বার্ক)-এর তথ্যে এমনটাই উঠে এসেছে। টেলিভিশন চ্যানেলে গত এক সপ্তাহে সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপনদাতার নাম বিজেপি! দ্বিতীয় স্থানে একটি জনপ্রিয় ভিডিয়ো স্ট্রিমিং সংস্থার অ্যাপ, তৃতীয় স্থানে পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত একটি নেট পরিষেবা সংস্থা। দেখা যাচ্ছে একাধিক প্রথম সারির পণ্য উৎপাদক বা বহুজাতিক ই-কমার্স সংস্থাও বিজেপির চেয়ে ঢের পিছিয়ে! বার্ক ইন্ডিয়া সূত্রে বলা হচ্ছে, গত এক সপ্তাহে সব ক’টি টিভি চ্যানেলে বিজেপির বিজ্ঞাপন দেখানো হয়েছে মোট ২২,০৯৯ বার! সেখানে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ভিডিয়ো স্ট্রিমিং অ্যাপটির বিজ্ঞাপন গত এক সপ্তাহে দেখানো হয়েছে ১২,৯৫১ বার। বাকিরা আরও পিছিয়ে।

আরও পড়ুন: আর কোনও বুলেট নয়, ভরসা সেমি-হাইস্পিডে

এর আগের সপ্তাহেও বিজেপি খুব পিছিয়ে ছিল না। বিজ্ঞাপনদাতাদের তালিকায় তারা সে সময় ছিল দু’ নম্বরে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এই তালিকায় কংগ্রেস প্রথম দশের মধ্যেও নেই।

অনেকেই বলছেন, লোকসভা ভোটের আগে এই বিধানসভা ভোট যে হেতু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তাই বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে কার্পণ্য করছে না বিজেপি। রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন নিয়ে কাজ করেন, এমন এক এজেন্সি বিশেষজ্ঞের কথায়, ‘‘সাড়ে চার বছর ধরে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি। রাজ্যের ভোটগুলির একটা বড় প্রভাব পড়বে আগামী বছরের লোকসভা ভোটে। আর তাই কেন্দ্র এবং রাজ্যে সমস্ত সরকারি প্রকল্পের ঢাক পেটানোটা এখন জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের কাছে। শাসকের চেয়ারে থাকায় স্বাভাবিক ভাবেই যে বিরোধিতার হাওয়া তৈরি হয়েছে, তাকে প্রশমিত করার জন্যই এই বিপুল বিজ্ঞাপন ও প্রচার।’’ বার্ক ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, টেলিভিশন যে হেতু সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছয়, তাই নিত্য ব্যবহার্য পণ্য বা পরিষেবার মতোই রাজনৈতিক প্রচারও এখানে লাভজনক। এক কর্তার কথায়, ‘‘মরসুম তো সবে শুরু হল। লোকসভা ভোটের সময়ে বিজ্ঞাপনের বহর শীর্ষে উঠবে।’’

আরও পড়ুন: পাক গুরুদ্বারে বাধা, কড়া নিন্দা

বিজেপি কী করে এত খরচ করছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র মণীশ তিওয়ারির দাবি, বিজ্ঞাপনের পিছনে বিজেপির এই বিপুল খরচের হিসেব নিক নির্বাচন কমিশন। তাঁর অভিযোগ, বড় পুঁজি বা বড় ব্যবসার সঙ্গে বিজেপির অশুভ আঁতাঁতের ছবিটা স্পষ্ট করে দিয়েছে বিজ্ঞাপনে তাদের এই বিপুল খরচ।

লোকসভা ভোটের সময় বড় ক্রিয়েটিভ এবং মিডিয়া এজেন্সিকে ভাড়া করা রাজনৈতিক দলগুলির দীর্ঘদিনের দস্তুর। বিধানসভা ভোটের সময় অনেক ক্ষেত্রেই স্থানীয় এজেন্সি দিয়ে কাজ করানো হয়। রাজনৈতিক সূত্রের মতে, গত বছর লোকসভা ভোটে শুধু বিজ্ঞাপনের পিছনেই বিজেপি খরচ করেছিল প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা! ৫০টি জাতীয় ও আঞ্চলিক সংবাদপত্রে ভোট চলাকালীন রোজ ৪ থেকে ৫টি বিজ্ঞাপন দিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের দল।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE