জোরাম পিপলস মুভমেন্টের নেতা লালডুহোমা। —ফাইল চিত্র।
এক সময় ইন্দিরা গাঁধীর নিরাপত্তার দায়িত্ব ছিল এই আইপিএসের হাতে। মিজোরামের প্রথম মুখ্যমন্ত্রীর সহায়ক ছিলেন লালডুহোমা। ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। ঐতিহাসিক মিজো চুক্তিও তাঁর অবদান। ৩৪ বছর পরে, সম্ভবত সেই হাতেই নির্ভর করছে মিজোরাম কংগ্রেসের মরণ-বাঁচন। বাস্তবের সঙ্গে জনমত সমীক্ষা বা বুথ ফেরত সমীক্ষা মেলে না অনেক সময়েই। তবে বিভিন্ন বুথ ফেরত সমীক্ষা বলছে, ৪০ আসনের বিধানসভায় কংগ্রেস-বিজেপি কেউই সম্ভবত জাদুসংখ্যা ২১ ছুঁতে পারবে না। সে ক্ষেত্রে ৮ থেকে ১২টি আসন পেয়ে নির্ণায়ক শক্তি হয়ে উঠতে পারে লালডুহোমার নেতৃত্বে তৈরি জোট জোরাম পিপলস মুভমেন্ট। লালডুহোমা নিজে মুখ্যমন্ত্রী হতে পারবেন কি না সে প্রশ্ন আলাদা।
স্মার্ট ও রাজনীতিতে অভিজ্ঞ আইপিএস লালকে ১৯৮২ সালে গুয়াহাটি থেকে দিল্লি নিয়ে গিয়ে সোজা ইন্দিরা গাঁধীর নিরাপত্তা অফিসারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। ইন্দিরা জানতে পারেন, ১৯৭৭ সালে আইপিএস হওয়ার আগে মিজোরামের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী সি ছুংগার সহায়ক ছিলেন লাল। তাঁর রাজনৈতিক জ্ঞান দেখে ইন্দিরাই লালকে ১৯৮৪ সালে ফের মিজোরামে পাঠান। পুলিশের চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে লোকসভার সাংসদ হন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। হয়ে যান প্রদেশ কংগ্রেসর কার্যবাহী সভাপতিও। তাঁরই মধ্যস্থতাতেই লালডেঙ্গা শান্তি চুক্তিতে রাজি হন। তাঁকে ও রাজীব গাঁধীকে লন্ডনে নিয়ে গিয়ে ১৯৮৬ সালে মিজো চুক্তি সই করান লালডুহোমা। কিন্তু শর্ত অনুযায়ী লালডেঙ্গাকে মুখ্যমন্ত্রীর আসন ছাড়তে রাজি ছিলেন না লাল থানহাওলা। তিনিই এখন পঞ্চম বারের মুখ্যমন্ত্রী। ঝগড়ার জেরে কংগ্রেস ছেড়ে প্রথমে মিজো ন্যাশনাল ইউনিয়ন গড়েন লালডুহোমা। পরে যোগ দেন পিপলস কনফারেন্সে। পরের গন্তব্য লালডেঙ্গার দল এমএনএফ। লালডেঙ্গার মৃত্যুর পরে লালডুহোমার সভাপতি হওয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ান জোরামথাঙ্গা। ফের দলত্যাগ। লাল তৈরি করেন জোরাম ন্যাশনালিস্ট পার্টি। ২০০৩ ও ২০০৮ সালে বিধায়ক হন তিনি।
এ বারে ভোটের আগে রাজ্যের কংগ্রেস ও বিজেপি বিরোধী সাতটি দলের জোট জেডপিএম তৈরি করে লড়তে নামেন লাল।কিন্তু বুথ ফেরত সমীক্ষা মিলে গেলে, সরকার গড়তে হলে লালডুহোমার সমর্থন নিতেই হবে কোনও শিবিরকে। লালডুহোমা এমএনএফকে সমর্থন করলে বিজেপি নেতৃত্বাধীন নেডা জোটের হাতে শাসনভার চলে যাবে। এতে লালের বিশ্বাসযোগ্যতা কমবে।
আরও পড়ুন: ‘নারেগা’-যোদ্ধার লড়াই ‘চক্রান্তের’ বিরুদ্ধেও
এই অবস্থায় মিজোরামে সরকার ধরে রাখতে মরিয়া কংগ্রেস যে কোনও শর্তে লালকে দলে টানতে চাইছে। লাল বলছেন, ‘‘এ বারের সরকার হবে জনতার সরকার। পরিবর্তনের সরকার।’’
আরও পড়ুন: চান না সর্বানন্দ, ধীরে চলো নাগরিকত্ব বিলে
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy