কাঠুয়া-কাণ্ডের বিরুদ্ধে জম্মুতে প্রতিবাদ। ছবি: পিটিআই।
উন্নাও কাণ্ডে হস্থক্ষেপ করতে বাধ্য হয়েছে ইলাহাবাদ হাইকোর্ট। আর জম্মু কাশ্মীরে কাঠুয়ায় যে ঘটনা ঘটেছে, তা নিয়ে শুক্রবার উদ্বেগ ঝরে পড়ল সুপ্রিম কোর্টের গলা থেকে। কাঠুয়ায় বছর আটেকের ছোট্ট মেয়েকে গণধর্ষণের পর যে ভাবে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ, সেই তদন্তের অগ্রগতি খতিয়ে দেখবে জানিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত। শোনা যাচ্ছে, মেয়েটির পরিবারের তরফ থেকে যে আইনজীবীকে নিয়োগ করা হয়েছিল, তাঁকেও আদালতে বাধা দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় যাদের দিকে অভিযোগ, সেই কাঠুয়া জেলা বার অ্যাসোসিয়েশন এবং জম্মুর হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের বিরুদ্ধেও নোটিশ পাঠিয়েছে হাইকোর্ট। অন্যদিকে বিতর্ক উস্কে দিয়ে জম্মু-কাশ্মীর মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছেন বিজেপির দুই মন্ত্রী। চন্দ্র প্রকাশ গঙ্গা এবং লাল সিংহ। এই দু’জনের মধ্যে চন্দ্র প্রকাশ গঙ্গা গত মাসে কাঠুয়া-কাণ্ডে অভিযুক্তদের সমর্থনে এক মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন।
তদন্তকারীদের একাংশ বলছেন, কাঠুয়ায় যেটা ঘটেছে, তা মোটেও আকস্মিক ঘটনা নয়। বরং এর পেছনে রয়েছে ‘বৃহত্তর’ পরিকল্পনা। কি সেই পরিকল্পনা? জানা যাচ্ছে, এই ঘটনার ‘মাস্টার মাইন্ড’ সানজি রাম। সরকারি চাকরি থেকে অবসরের পর তিনি প্রায় গ্রামের মাথা হয়ে বসেছিলেন। তিনি আবার রাখেরওয়াল নামে পশুপালক যাযাবর গোষ্ঠীর ঘোরতর বিরোধী। সানজি চেয়েছিলেন, ওই যাযাবরদের উত্খাত করতে। তবে কি রাখেরওয়াল গোষ্ঠীর আট বছরের শিশুকে গণধর্ষনের পর হত্যা করে, তাঁদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করেছিলেন সানজি? যাতে তাঁরা এলাকা ছেড়ে চলে যান? প্রশ্নগুলো ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের।
কাঠুয়ার ছোট্ট মেয়ে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়েছিল এ বছরের ১০ জানুয়ারি। ১৭ জানুয়ারি জঙ্গল থেকে পাওয়া যায় তার ক্ষতবিক্ষত দেহ। রাখেরওয়াল গোষ্ঠীর দাবি, তাঁদের অভিযোগ সত্বেও স্থানীয় থানা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এ নিয়ে ক্ষোভ বিক্ষোভ চরমে ওঠায় তদন্তের দায়িত্ব নেয় রাজ্য পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ। গ্রেফতার করা হয় সানজি রাম সহ ৮ জনকে।
আরও খবর: বিচার পাবেই আসিফা, টুইট ভি কে সিংহের
আরও খবর: যোগীজির নড়তেই লাগল ১০ মাস, এক নজরে উন্নাও ‘ধর্ষণ’কাণ্ড
ধৃত এক তরুণ জেরায় জানিয়েছে, হারিয়ে যাওয়া ঘোড়া খুঁজে দেওয়ার টোপ দিয়ে সে ছোট্ট মেয়েটিকে নিয়ে গিয়েছিল গ্রামের বাইরে এক মন্দিরে। এর পর সেখানে তাকে বন্দি রেখে ধর্ষণ। টানা পাঁচ দিন । জানা গিয়েছে, এর মধ্যে তাকে খেতে দেওয়া হয়নি। রাখা হয়েছিল মাদকে আচ্ছন্ন করে। শুধু যে সানজি রাম তাকে ধর্ষণ করেছিলেন, তা নয়। সামিল হয়েছিলেন তাঁর ভাইপো, ছেলে এমনকী বেশ কয়েক জন পুলিশকর্মীও।
জেরার মুখে এক জন জানিয়েছেন, মেয়েটিকে হত্যা করার আগে এক জন বাধা দিয়েছিল। সে চেয়েছিল, আরও এক বার ধর্ষণ করতে। শেষ পর্যন্ত শ্বাসরোধ করে তাকে মারা হয়। মৃত্যু সম্পর্কে নিশ্চিত হতে মাথা থেতলে দেওয়া হয়েছিল পাথর দিয়ে। সানজি রামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু স্থানীয়েরা বলছেন, সানজির পরিকল্পনা সফল হয়েছে। নিহত শিশুর পরিবার চলে গিয়েছে গ্রাম ছেড়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy