Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
National News

কাশ্মীরের ভারতভুক্তি নিয়েই বিতর্ক উঠে যাবে এ বার: ওমর

জম্মু-কাশ্মীরে ৩৫-এ ধারা বহাল থাকা নিয়ে বিতর্ক হয়, তা হলে রাজ্যটির ভারতভুক্তি নিয়েও বিতর্ক উঠবে। হুঁশিয়ারি দিলেন ওমর আবদুল্লা।

জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা রাজ্যটির ভারতভুক্তির অন্যতম শর্ত ছিল। দাবি ওমর আবদুল্লার। — ফাইল চিত্র।

জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা রাজ্যটির ভারতভুক্তির অন্যতম শর্ত ছিল। দাবি ওমর আবদুল্লার। — ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৭ ১৬:১৯
Share: Save:

জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা সংক্রান্ত বিতর্কে কেন্দ্রীয় সরকারের অবস্থানের তীব্র নিন্দা করলেন সে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। প্রধান বিরোধী দল ন্যাশনাল কনফারেন্সের ওই নেতার মন্তব্য, ৩৫-এ ধারা নিয়ে বৃহত্তর বিতর্ক যদি হয়, তা হলে জম্মু-কাশ্মীরের ভারতভুক্তি নিয়েও বিতর্ক উঠবে। কেন্দ্রীয় সরকার তেমন বিতর্কের জন্য প্রস্তুত তো? প্রশ্ন ওমরের। শুধু বিরোধী নেতা ওমর নন, জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিও বিষয়টি নিয়ে গত সপ্তাহে মুখ খুলেছিলেন। রাজ্য থেকে ৩৫-এ ধারা তুলে নেওয়া হলে উপত্যকায় ভারতের জাতীয় পতাকা তোলার মতো আর কেউ থাকবেন না, মন্তব্য করেছিলেন মেহবুবা।

আরও পড়ুন: কংগ্রেসকে সমর্থন কিনা সিদ্ধান্তই নেয়নি এনসিপি

ওমর আবদুল্লা রবিবার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘‘জম্মু-কাশ্মীরের ভারতভুক্তি এবং রাজ্যে ৩৫-এ ধারা বলবৎ থাকা একই মুদ্রার দু’টি পিঠের মতো।’’ ৩৫-এ ধারা বলবৎ রেখে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখা হবে কি না, তা নিয়ে যদি বিতর্ক শুরু করতে হয়, তা হলে ভারতে জম্মু-কাশ্মীরের অন্তর্ভুক্তি নিয়েও বিতর্ক শুরু করতে হবে— মন্তব্য রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর। ওমর আরও বলেছেন, ‘‘জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা নিয়ে প্রশ্ন তোলার অর্থ হল ভারতের সঙ্গে জম্মু-কাশ্মীরের সংযুক্তিকরণকেই প্রশ্নের মুখে ফেলে দেওয়া।’’ জম্মু-কাশ্মীরের পূর্বতন মহারাজা হরি সিংহ যে চুক্তির মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে মিশিয়ে দেন নিজের রাজ্যকে, সেই চুক্তিতেই জম্মু-কাশ্মীরের জন্য বিশেষ মর্যাদার কথা ছিল বলে ওমর জানিয়েছেন। ৩৭০ ধারার মতো ৩৫-এ ধারাও তাই জম্মু-কাশ্মীরের জন্য অপরিহার্য বলে ওমরের দাবি।

৩৫-এ ধারা প্রত্যাহার করে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেওয়া হলে রাজ্যে আর তেরঙা পতাকা তোলার লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না। মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিও সম্প্রতি এমন মন্তব্য করেছেন। —ফাইল চিত্র।

১৯৫৬ সালে জম্মু-কাশ্মীরের যে সংবিধান গৃহীত হয়েছিল, সেই সংবিধানে নির্দিষ্ট করে জানানো হয়েছিল, জম্মু-কাশ্মীরের স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে বিবেচিত হতে হলে শর্ত কী কী। সংবিধান অনুযায়ী ১৯৫৪ সালের ১৪ মে-তে যাঁরা জম্মু-কাশ্মীরের প্রজা ছিলেন, তাঁদের সকলকে রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে ধরা হবে। এ ছাড়া, কেউ যদি ১০ বছর বা তারও বেশি সময় জম্মু-কাশ্মীরে থাকেন এবং বৈধ উপায়ে সে রাজ্যে স্থাবর সম্পত্তির মালিক হন, তা হলে তিনিও রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দা বিবেচিত হবেন। ৩৫-এ ধারা অনুযায়ীই জম্মু-কাশ্মীরের জন্য এই বিশেষ ব্যবস্থা স্বীকৃতি পেয়েছে।

আরও পড়ুন: সক্রিয় দাউদ, মানছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা

২০১৪ সালে একটি অসরকারি সংস্থা জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩৫-এ ধারা বাতিল করার আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে রিট পিটিশন জমা দেয়। জম্মু-কাশ্মীর সরকার পাল্টা হলফনামা জমা দিয়ে এই রিট পিটিশন খারিজ করার দাবি তোলে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার কোনও পক্ষ নেয়নি। জম্মু-কাশ্মীর সরকার বার বার অনুরোধ করা সত্ত্বেও ৩৫-এ ধারা বহাল রাখার পক্ষে কেন্দ্র সওয়াল করেনি। বরং গত মাসে দেশের অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল সুপ্রিম কোর্টে জানান, বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক হওয়া উচিত। এ বার তার বিরুদ্ধে মুখ খুললেন ওমর আবুদল্লা। ৩৫-এ ধারা বহাল থাকা উচিত কি না, তা নিয়ে বিতর্ক হলে, জম্মু-কাশ্মীর ভারতে থাকা উচিত কি না, তা নিয়েই বিতর্ক উঠে যাবে বলে মত ওমরের।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE