সাধ্বী প্রজ্ঞা এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল ছবি
অমিত শাহ আগেই তলব করেছিলেন। এ বার গডসে বিতর্কে সাধ্বী প্রজ্ঞার বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিলেন নরেন্দ্র মোদী। একটি টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘বাপুজিকে অপমান করার জন্য আমি কখনই সাধ্বী প্রজ্ঞাকে ক্ষমা করতে পারব না।’’ মোদীর এই বার্তার আগেই অবশ্য ভোপালের বিজেপি প্রার্থী সাধ্বী প্রজ্ঞা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনন্ত কুমার হেগড়ে এবং কর্নাটকের বিজেপি সাংসদ নলিন কুমার কাতিলকে তলব করে তাঁদের কার্যত শো-কজ করেন অমিত শাহ। তিন দিনের মধ্যে দলের শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির সামনে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে বলেন বিজেপি সভাপতি। নাথুরাম গডসে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে ক্ষমা চেয়েছেন সাধ্বী প্রজ্ঞা। বিতর্কিত টুইট মুছে দিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনন্ত কুমার হেগড়ে এবং কর্নাটকের বিজেপি সাংসদ নলিন কুমার কাতিল। কিন্তু তার পরও তিন জনকে অবস্থান ব্যাখ্যা করার নির্দেশ দিলেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। তবে একই সঙ্গে এই সব মন্তব্যের সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই বলেও জানিয়ে দিয়েছেন বিজেপি সভাপতি।
বিতর্ক উস্কে দিয়েছিলেন দক্ষিণী সুপারস্টার তথা মাকাল নিধি মাইয়াম (এমএনএম) প্রধান কমল হাসন। তিনি বলেছিলেন, দেশের প্রথম সন্ত্রাসবাদী নাথুরাম গডসে। এর পরই বিজেপি নেতা-নেত্রীরা এই মন্তব্যের বিরোধিতা করে গাঁধী হত্যাকারী গডসের পক্ষে সওয়াল করতে শুরু করেন। এমনকি, গডসের চেয়েও রাজীব গাঁধী বড় ‘সন্ত্রাসবাদী’ বলেও টুইটারে আক্রমণ শুরু হয়ে যায়। তার মধ্যেই সাধ্বী প্রজ্ঞা কয়েক কদম এগিয়ে গডসেকে ‘দেশভক্ত’ বলে টুইট করে বসেন।
বিজেপি নেতা-নেত্রীরা এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কথায় কথায় গাঁধীজির আদর্শের কথা বলেন। ক্ষমতায় আসার পর গাঁধীজির আদর্শেই স্বচ্ছ ভারত অভিযান প্রকল্প চালু করে বিজেপি সরকার। এ হেন গাঁধীজির হত্যাকারীকে দেশভক্ত বলায় বেজায় অস্বস্তিতে পড়েন বিজেপি নেতৃত্ব। তার জেরে শেষ পর্যন্ত সাধ্বী প্রজ্ঞার ওই মন্তব্যের সঙ্গে দলের সম্পর্ক ছিন্ন করে সাধ্বীকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। সাধ্বী ক্ষমাও চেয়ে নেন।
আরও পডু়ন: রক্ষাকবচ তুলল সুপ্রিম কোর্ট, রাজীব কুমারকে গ্রেফতারে বাধা নেই সিবিআইয়ের
আরও পড়ুন: শেষ দফার ভোট ছ’মাস বন্ধ রাখতে চেয়েছিলেন বিশেষ পর্যবেক্ষকরা
তার পরই পরিস্থিতি পাল্টায়। কিন্তু তার আগেই টুইট করে দিয়েছিলেন হেগড়ে এবং কাতিল। দক্ষিণ কর্নাটক কেন্দ্রের সাংসদ কাতিল লিখেছিলেন, ‘‘গডসে এক জনকে হত্যা করেছিলেন, কাসভ (২৬/১১ মুম্বই হামলায় ধৃত ও ফাঁসি হওয়া জঙ্গি) ৭২ জনকে এবং রাজীব গাঁধী ১৭ হাজার মানুষকে খুন করেছিলেন। আপনারাই বিচার করুন কে সবচেয়ে নিষ্ঠুর।’’ কিন্তু বৃহস্পতিবারের ওই টুইট পরের দিনই উধাও।
অন্য দিকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হেগড়ের টুইট ছিল, ‘‘যাঁকে শুধুই ঘৃণা করা হয়েছে, সাত দশক পরেও যে তাঁকে নিয়ে অন্য রকম ভাবনা শুরু হয়েছে, তাতে আমি খুশি। এই বিতর্কে শেষ পর্যন্ত নাথুরাম গডসে খুশি হবেন।’’ কিন্তু হেগড়ের টুইটও ডিলিট করে দেওয়া হয়। তবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দাবি, তাঁর টুইট হ্যাক করা হয়েছিল। যদিও এই ধরনের মন্তব্যের সঙ্গে তাঁর নাম জুড়ে যাওয়ায় তিনি দুঃখপ্রকাশও করেছেন।
কিন্তু তার পরেও যে দল তিন জনের ভুমিকা নিয়েই ব্যাপক ক্ষুব্ধ এবং অসন্তুষ্ট তা বুঝিয়ে দিয়েছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘‘এই ধরনের মন্তব্যের সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। তিন জনই ক্ষমা চেয়েছেন। কিন্তু এই ধরনের মন্তব্য বিজেপির মতাদর্শের বিরোধী। তাই দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটিতে বিষয়টি পাঠানো হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy