Amazing story of Sasaram railway station in BIhar dgtl
National news
প্ল্যাটফর্মেই চলে চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি, অনন্য নজির সৃষ্টি করছে বিহারের এই স্টেশন
এই স্টেশনে রোজ এমন একটা ঘটনা ঘটে, যা ভারতবর্ষের অন্য স্টেশনে সচরাচর দেখতে পাওয়া যায় না।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২০ ১১:৪৭
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৩
গয়া-মুগলসরাই জংশনের সাসারাম রেল স্টেশন। আপাত ভাবে আর পাঁচটি সাধারণ স্টেশনের মতোই। মানুষজন আসছেন, ট্রেনে চেপে দূর-দূরান্তে চলে যাচ্ছেন। কেউ আবার ফিরে আসছেন।
০২১৩
তবে এই স্টেশনের একটি বিশেষত্ব রয়েছে। এই স্টেশনে রোজ এমন একটা ঘটনা ঘটে, যা ভারতবর্ষের অন্য স্টেশনে সচরাচর দেখতে পাওয়া যায় না। প্ল্যাটফর্মের অনেকটা অংশ জুড়ে সকাল-সন্ধ্যা পড়াশোনা করেন বহু পড়ুয়া।
০৩১৩
সাসারাম স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম নম্বর এক এবং দুইয়ে এই দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়। সকালের দু’ঘণ্টা এবং সন্ধ্যায় দু’ঘণ্টা প্ল্যাটফর্মে বসেই পড়াশোনা করেন প্রায় ১২০০ পড়ুয়া।
০৪১৩
সকাল-সন্ধ্যার এই দু’ঘণ্টা সাসারাম রেল স্টেশন কোচিং সেন্টারে পরিণত হয়। এই পড়ুয়ারা কারা? কেন রেল স্টেশনে এসে তাঁরা পড়াশোনা করছেন?
০৫১৩
এঁরা সকলেই চাকরি পরীক্ষার্থী। স্কুল-কলেজের পড়াশোনা শেষ করে বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষার জন্য নিজেদের তৈরি করছেন। ২০০২-০৩ সাল থেকে প্ল্যাটফর্মে এসে পড়াশোনা শুরু করেছিলেন একদল পড়ুুয়া। তারপর ক্রমে সংখ্যাটা বেড়ে গিয়েছে।
০৬১৩
এঁরা বেশির ভাগই আশেপাশের কোনও প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দা। সেই সব গ্রামে এখনও বিদ্যুত্ পৌঁছয়নি। তার উপর মোটা টাকা দিয়ে কোচিং সেন্টারে পড়ার ক্ষমতাও তাঁদের নেই।
০৭১৩
স্টেশনের আলোয় তাঁরা পড়াশোনা করেন। এই সমস্ত পড়ুয়াদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন পটনা রেল পুলিশের সুপারিন্টেডেন্ট জিতেন্দ্র মিশ্র এই অভিনব ব্যবস্থা করে দেন। এঁদের জন্য তিনি নির্দিষ্ট পরিচয়পত্রেরও ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এই পরিচয়পত্র নিয়ে বিনা বাধায় ওই পড়ুয়ায়া প্ল্যাটফর্মে পড়াশোনা করতে পারেন।
০৮১৩
বিহারের সাসারাম স্টেশন রীতিমতো একটা কোচিং সেন্টারে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন গ্রুপ রয়েছে এখানে। বিভিন্ন ধরনের চাকরির পরীক্ষার জন্য ভিন্ন গ্রুপ তৈরি হয়েছে।
০৯১৩
স্টাডি মেটিরিয়াল নিয়ে আলোচনা করা, জটিল কোনও সমস্যার সমাধান করা— সবটাই একসঙ্গে মিলেমিশে করেন তাঁরা।
১০১৩
তার উপর সিনিয়রদের সাহায্যও রয়েছে। সিনিয়ররাও মাঝে মধ্যে জুনিয়রদের ক্লাস নেন। কী ভাবে, কোন পদ্ধতি মেনে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে, জুনিয়রদের শিখিয়ে দেন সিনিয়ররা।
১১১৩
এমন অনেক পড়ুয়া রয়েছেন, যাঁরা সারা রাত এই প্ল্যাটফর্মের আলোয় পড়াশোনা চালিয়ে যান।
১২১৩
স্টেশনের প্রতিটা দোকানদার এই পড়ুয়াদের চেনেন। তাঁদের একটি স্থানীয় নামও দেওয়া হয়েছে। ‘স্টেশনবালে লড়কা’।
১৩১৩
যত পড়ুয়া প্রস্তুতি নেন, সবাই হয়তো সাফল্য পান না। কেউ ভাল চাকরি পেয়ে চলে যান, তো কেউ বছরের পর বছর এই প্ল্যাটফর্মেই পড়ে থাকেন। কিন্তু একটা জিনিসের কখনও ঘাটতি হয় না তাঁদের মধ্যে- আশা।